ঢাকা: হুমায়ুন আহমেদ মারা যাওয়ার পর আবিদ ভাই আমার কাছ থেকে দৈনিক ‘আমাদের অর্থনীতি’র জন্য একটা অবিচুয়ারি নিয়েছিলেন। কখনো ভাবিনি একই কাজ এত দ্রুত আবিদ ভাইয়ের জন্য করতে হবে।
প্রিয় বড় ভাই, সাংবাদিক আবিদ আর নেই!
আবিদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয়। ব্লগে আমার একটা লেখা দেখে অস্ট্রেলিয়া থেকে তিনি আমাকে ফোন দেন। তার পর লেখালেখির পরামর্শ দেন।
আবিদ ভাই শুধু আমাকেই নয়, অনেক তরুণ ব্লগারকে অক্লান্ত সমর্থন যুগিয়েছেন। পরামর্শ দিয়েছেন। জাতীয় দৈনিকগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন।
বাংলানিউজের প্রধান সম্পাদক আলমগীর ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। কোন প্লাটফর্মে কীভাবে লিখতে হবে, তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বলতেন।
আবিদ ভাই হঠাৎ হঠাৎ ভরদুপুরে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফোন দিয়ে বলতেন, ‘রুবেল, আপনি বেশি শব্দ নষ্ট করছেন। আরও কম শব্দে লিখবেন। ’ কিছু দিন আগে তিনি আমাদের অর্থনীতি (আমাদের সময়)-এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। আমি ঢাকায় গেলেই তিনি ফোন দিতেন। বলতেন, ‘রুবেল আপনি কোথায়? আমি প্রেসক্লাবে, চলে আসেন।
প্রেসক্লাব বোধ হয়, তার প্রিয় জায়গা ছিল। আমার কাছে প্রেসক্লাব মানেই এখন কবি হেলাল হাফিজ ও আবিদ ভাইয়ের যৌথ এক টুকরো ছবি। তিনি সিগারেট টানতেন। আর আমি ইয়া বড় কাপে চা।
আবিদ ভাই অনেক কথা বলতেন। শ্রোতা হিসেবে আমি খারাপ ছিলাম না। তিনি আমাকে বসিয়ে রাখতে পছন্দ করতেন। এই কথা, সেই কথা। কথা তার শেষই হতো না।
‘আমাদের সময়’-এর সম্পাদকের পদ ছেড়ে সবশেষ যেদিন তিনি ঢাকা ছাড়েন, তখনও আমার কাছে পত্রিকা ছাড়ার ব্যাপারটি স্বীকার করেননি। শুধু বলেছিলেন, ‘আমি অসুস্থ। সুস্থ হলেই ফিরে আসবো’।
আবিদ ভাইয়ের কথায় সব সময় গ্রামীণ সারল্য খুঁজে পাওয়া যেতো। অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার দিন আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিলেন, “রুবেল, আমার ভাল্ব ড্যামেজ হয়ে গেছে। দোয়া কইরেন। আমি চলে যাচ্ছি...”
বিদায় আবিদ ভাই!
মনোয়ার রুবেল
ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট
ইমেইল: monowarrubel@yahoo.com
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৩
সম্পাদনা: জয়নাল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর