বাংলাদেশ কি হেরে যাবে? পিছিয়ে যাবে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে? ইতিহাস কি সেই সাক্ষী দেয়?
তেরো শ নদীবিধৌত পলিমাটির এই ভূখণ্ডে পরাজয়ের ইতিহাস নেই। অনেক রক্ত ঝরেছে।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। অন্যায় করলে তার বিচার হতে হয়, দোষিদের শাস্তি পেতে হয়, এটাই সভ্য দুনিয়ার রীতি।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করেছে, যারা নিরীহ মানুষের ঘর বাড়িতে আগুন দিয়েছে, যারা নারী নির্যাতনের মতো আদি পাপ করেছে তাদের বিচার করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্নাল।
তাদের শাস্তি হচ্ছে। এটি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। সভ্যতার বিজয়। আর এটি আমাদের দায়ও বটে। এটি ইতিহাসের দায়। এই দায় এতোদিন মেটানো যায়নি নানা সমীকরণে। বর্তমান সরকার এই দায় মেটানোর উদ্যোগ নিয়ে বিশ্ব দরবারে সুনাম কুড়িয়েছে। তিন কোটি তরুণ ভোটার রায় দিয়েছে ইতিহাসের কলঙ্ক থেকে দেশকে মুক্ত করতে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি, একাত্তরের খুনিদের দল জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নন, মানবতাবিরোধী নন, এটা তার দল জামায়াত,তাদের মিত্র বিএনপিও কোনদিন দাবি করেনি।
সাঈদী অপরাধ করেছেন, আদালত তা প্রমাণ করেছেন, তার বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল
করার সুযোগ রয়েছে। জামায়াত তা করবে।
তাহলে এখনি কেন দেশজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা? কেন অপপ্রচারে নামা? কেন পবিত্র মসজিদের মাইক ব্যবহার করে, মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া?কেনো রেলে আগুন দেওয়া, ব্রিজ উপড়ে ফেলা? বিদু্ৎ কেন্দ্র, থানা আক্রমণ করা? একাত্তরের মতো হিন্দুদের ঘর-বাড়িতে, মন্দিরে কেনো আগুন দেওয়া?
জামায়াত-শিবির কার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে? আর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কেনো যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিচ্ছে এভাবে?
বিএনপি এমন সময়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন, এমনি প্রত্যাশা ছিল না সবার। দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তা না করে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিলেন। তাদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বিবৃতি দিলেন। তার বোঝা উচিত এই মুহূর্তে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করলে ইতিহাস তাকেও ক্ষমা করবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৩