ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

প্লিজ হরতালকে আর লজ্জা দেবেন না

সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৩
প্লিজ হরতালকে আর লজ্জা দেবেন না

ঢাকা : সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে হরতাল চলছে, তাতে হরতাল নিজেই লজ্জা পাচ্ছে। পারলে হরতাল হয়তো আহবানকারীদের কাছে গিয়ে বলতো- ভাই দোহাই আমাকে এভাবে লজ্জা দেবেন না।

পারলে দুটো চড় মারেন।

কেননা আমারও তো  মান সম্মান আছে। আমার মান-সম্মান এভাবে ধূলায় লুণ্ঠিত করবেন না। আমার নাম ধরে ডাকবেন না। আমার নাম বাদ দিয়ে অন্য নামে অন্য নামে হরতাল ডাকুন। নইলে পারলে আপনাদের হাত থেকে বাঁচতে আমি আত্মহত্যা করতাম।

কিন্তু ঈশ্বর আমাকে মানুষের মতো সে সুযোগ দেয়নি। জড়বস্তু দেখা যায়, কিন্তু আমরা চাক্ষুষ দেখার মতও নয়। কেবল লোকে নামেই ডাকে । ”

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামি নানা ছুতো-নাতায় হরতাল ডাক দিয়ে চলেছে। চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার নিয়ে ৪ দিন হরতাল ডাকলো বিরোধীদল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামি।

কিন্তু কোন হরতালে মানুষের সমর্থন না থাকায় শুধু ফ্লপই নয়- সুপার ফ্লপ হচ্ছে। মানুষ দিব্বি অফিসে যাচ্ছেন। বাজার-ঘাট খোলা থাকছে। বাস-মিনিবাস চলছে। তাহলে হরতাল থাকলো কোথায়।

তবে অফিস যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। আনাজপাতি কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। দূর-দূরান্তে থাকা মানুষ সহজভাবে আপনজনের কাছে আসতে পারছেন না। এভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে হরতাল আহবানকারীরা বলতে পারেন- এটা কি আমাদের কম অর্জন।
   
এভাবে কি একটা সরকারকে পতন ঘটানো যায়? আমি রাজনীতি করিনা। রাজনীতি যারা করেন তারা আমার থেকে ভালো বোঝেন। তবে এটা বুঝি ৯০ ও ১৯৯৬ সালের আন্দোলন দেখে।

তখন কেমন ধারার হরতাল ছিল। হরতাল ডাক দিলে শুধু বাস-মিনিবাস বা রিকশা নয়- লবন কেনার দোকান পর্যন্ত খোলা পাওয়া যেত না। হরতালের নাম শুনলে মানুষ আগের দিন রাতে পরেরদিনের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কিনে রাখতেন। যাতে কোন রকমের অসুবিধা না হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের হরতালে- সেই হরতালের চিত্র কোথায়? তাদের কি আগের হরতাল এবং বর্তমান হরতালের পার্থক্য চোখে পড়ে না? নাকি ডেকেই খালাস। ভাবখানা এই আমি ডাকলাম- পালন করা না করা মানুষের দায়িত্ব?

হরতাল আহবানকারীদের ডাকা পর্যন্ত দেখা যায়- এরপর তাদের আর পাত্তা পাওয়া যায়না। গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যান। যতো কষ্ট সাধারণ কর্মীদের। তারা দলের জন্য জীবন বিলাতে পিছপা হন না।

এই সাধারণ কর্মীরাই মাঠে থাকেন। পুলিশের লাঠি-গুতা খান। পারলে জীবন বিলিয়ে দেন। কিন্তু সেফ-সাইডে থাকেন নেতারা। তাদের গায়ে কোন আঁচড় লাগে না।

বাংলাদেশ সময় : ১২১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৩
সম্পাদনা:এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।