ফরহাদ মজহার কি জামায়াতের নায়েবে আমির? ফেইসবুকে আমার এরকম একটি পোস্টে সাবেক বামপন্থী ছাত্রনেতা মিন্টু আনোয়ার বলেছেন, “আপনার ইমোশন পড়তে পারছি, কিন্তু `বিচার মানি... তাল গাছ আমার..." এই বহুল প্রচলিত বাক্যটিকে এবারই সত্য হতে দেখলাম। ট্রাইব্যুনাল হলো রাজাকারের বিচারের জন্য, সেটাকে মেনে নিযেই বিচারপন্থিরা বিএনপিকে গত দু` বছর ধরে গালাগাল দিল, বিএনপি যা কিছু করুক না কেনো, আ. লীগ বললো ওটা যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকাতে করছে।
মিন্টু আনোয়ার আমার ইমোশন পড়তে পারছেন বলে যে কথা বলেছেন তার কারণ, আমরা প্রথম পরিচিত হয়েছি ৯০’র গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে। এরপর আমরা ‘প্রিয় প্রজন্মে’ নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন বোনার স্বপ্নে এক থেকেছি। আবারো রাজপথেই এক হয়েছি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের আহ্বানে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। এ কারণে তিনি যে প্রশ্নগুলো রেখেছেন তার উত্তর দেওয়া জরুরি। পয়েন্ট আকারে তাই কিছু ব্যক্তিগত মতামত:
১. ‘বিচার মানি, কিন্তু তালগাছ আমার’ বলে আপনি যে অভিযোগ করেছেন তা এক অর্থে সত্যি। তবে আমি ঘুরিয়ে বলছি, গণজাগরণ মঞ্চের জন্য অবশ্যই ‘তাল গাছ আমার’, তাই তারা বিচার মানতেও পারে, নাও পারে।
২. বিয়াল্লিশ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলেও তারা যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী তা নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই। আমাদের পূর্ব প্রজন্ম সেটা একাত্তরে দেখেছে, যু্দ্ধাপরাধীরা তাদের কার্যক্রমের সঙ্গে বক্তৃতা-বিবৃতিতে তার প্রমাণ রেখেছে। এখন আইনি মারপ্যাঁচে যদি তাদের অপরাধ প্রমাণ নাও হয় তারপরও বাংলাদেশের মানুষের কাছে, যারা বাংলাদেশে থেকেও বাংলাদেশকে তাদের দেশ মনে করে না তারা ছাড়া সকলের কাছে গো. আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী-কামারুজ্জামান-কা. মোল্লারা যুদ্ধাপরাধী।
৩. বিএনপি যে ‘ও’ ‘কিন্তু’ ‘মান’ ‘স্বচ্ছতা’ এসব নানা বাহানা তুলেও শেষ পর্যন্ত যে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধের বিচার করার কথা বলে, তার মানে হচ্ছে দেশে কিছু হলেও যুদ্ধাপরাধী আছে। আর গো. আযমরাই হচ্ছে সেই যুদ্ধাপরাধীকূলশিরোমনি।
৪. বিয়াল্লিশ বছরে, বিশেষ করে গত ২০ বছরে, যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে তা তাদের বিচারের দাবিতে,--- অপরাধ প্রমাণের জন্য নয়; কারণ তাদের অপরাধ প্রমাণিত।
৫. বিচারে এই অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। এতো বছর বিচার না হওয়ায় যে দীর্ঘ আন্দোলন তার পরিণতিতে বিচারে উপযুক্ত শাস্তি না হলে ফাঁসির দাবি জানানোটাও তাই যৌক্তিক।
৬. গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে যদি ‘বিচার মানি কিন্তু তালগাছটা আমার’ দোষে দোষী করা হয়, তাতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। সৈয়দ আবুল হোসেনকে দুদক যতোই চারিত্রিক সনদপত্র দিক না কেনো, বাংলাদেশের মানুষ সব জানে। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রেও তাই।
৭. মানুষ সত্য জানে বলেই কাদের মোল্রার ফাঁসির আদেশ না হওয়া মেনে নিতে পারে নি। তবে তাদের এই অহিংস আন্দোলন যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের এক অনন্য নজির তা যে কেউই স্বীকার করবে।
৮. বিপরীতে জামায়াত-শিবিরের কাছেও ‘বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার’। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পর কাদের মোল্লা ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সাঈদীর ফাঁসির আদেশের পর সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির।
৯. দুই পক্ষই ‘বিচার মানি কিন্তু তাল গাছ আমার’ অবস্থানে থাকলেও এক পক্ষ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের পথ বেছে নিয়েছে। আর অন্য পক্ষ একাত্তরে যেভাবে নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে অস্ত্র ধরেছে; এবারও একই কায়দায় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করেছে, পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে।
১০. নব্বইয়ের একজন ছাত্রনেতা হিসেবে, এরশাদবিরোধী আন্দোলনের একজন সংগঠক হিসেবে আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে, কোন্ যুদ্ধ-অবস্থায় গেলে পুলিশ গুলি করে। এমনকি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আপনারা ‘মন্ত্রিপাড়া ঘেরাও’ এর মতো কর্মসূচি দিলেও পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নি; কারণ আপনারা জানতেন এই পুলিশ বাহিনী আপনার দেশের। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলে রাষ্ট্রের যে চরিত্র সেই রাষ্ট্র জামায়াত মেনে নিতে পারছে না বলে তারা পুলিশকে ভিনদেশি পুলিশ মনে করে যুদ্ধে জড়িয়ে গেছে, যে কারণে এতো দু:খজনক প্রাণহানি।
১১. খালেদা জিয়া যে পুলিশকে ভিনদেশি পুলিশ বলেছেন, তা ঠিকই আছে। জামায়াতের কাছে এই পুলিশ ভিনদেশি পুলিশই, কারণ জামায়াতের কাছে এই পুলিশ বাংলাদেশি পুলিশ। এই যে বাংলাদেশ জামায়াতের দেশ না, জামায়াত নিজেই একে নিজেদের দেশ বলে মনে করে না।
১২. খালেদা প্রসঙ্গই যেহেতু চলে এলো তাই এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি নিয়ে আপনি যে কথা বলেছেন সেদিকে একটু খেয়াল করা যাক। আমি জানি না, আপনি আগে আমার কোনো লেখা পড়েছেন কি না। পড়া থাকলে নিশ্চয়ই জানবেন, আওয়ামী লীগের সমালোচনা মানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার হানিফীয়-কামরুলীয় তত্ত্ব, তার বিরোধিতা করে কতোবার লিখেছি। যে ব্লগাররা শাহবাগ আন্দোলনের সূচনা করেছেন, যদি তাদের আগের লেখাগুলো পড়তেন তাহলে জানতেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করার হানিফীয়-কামরুলীয় তত্ত্ব কিভাবে নাকচ করে দিয়েছেন।
১৩. দুঃখের বিষয় হলো, আরও কিছু লেখক-সাংবাদিক-টেলিভিশন-কথক যারা হানিফীয়-কামরুলীয় তত্ত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তারা এখন হয় প্রকাশ্যে অথবা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জামায়াতের মানে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
১৪. ওইরকম কিছু ‘সুশীল’ লেখক-সাংবাদিক-টেলিভিশন কথকের এইরকম অবস্থান এবং রায় ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে জামায়াতকে আরও মহব্বতের বন্ধনে টেনে বিএনপির ফিডার খাওয়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর হানিফ-কামরুলরা নিশ্চয়ই তাদের তত্ত্বের সাফল্যের আনন্দে ভাসছেন।
১৫. এবার আবার আসুন গণজাগরণ মঞ্চ প্রসঙ্গে। ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্রার রায় ঘোষণার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাস যদি দেখে থাকেন তাহলে দেখবেন আমি লিখেছিলাম ‘পলিটিক্যাল ভারডিক্ট’। পরে লিখেছিলাম ‘ডিপ্লোম্যাটিকও’। পলিটিক্যাল কেনো লিখেছিলাম, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। তখন বিএনপি নেত্রীও আকারে-ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের গোপন কোনো আঁতাত হচ্ছে। যাবজ্জীবন রায় ঘোষণার পর অনেকের সেই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়। তাদের মনে হয়, আওয়ামী লীগ হয়তো যে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের লাখ লাখ শ্রমিক আছে, সেই হুজুর কেবলাদের চাপে আপোসের পথে হাঁটতে গিয়ে সঙ্গে জামায়াতকেও বিএনপির কাছ থেকে আলাদা করে নির্বাচনী সমীকরণে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। লাখ লাখ মানুষের এইরকম আশংকা-হতাশার মধ্যে কিছু ব্লগারের শাহবাগে অবস্থান আর ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কিছু নেতা-কর্মীর মশাল মিছিলে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ওই এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
১৬. তবে এই গণজাগরণ মঞ্চকে আপনি বেনামে আওয়ামী লীগ বলেছেন। সেটা আপনি বলতে পারেন, কারণ আপনি না মানলে এবং শাহবাগের ভাষার অনুবাদ আপনি পড়তে না পারলে আপনার কাছে তাই মনে হবে। কারণ যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা বললেই অনেকের কাছে আওয়ামী লীগ মনে হয়।
১৭. আর অলীক হলেও যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই যে গণজাগরণ মঞ্চ বেনামে আওয়ামী লীগ, তাহলে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দোষ দেওয়ার কি আছে! বিএনপির মতো একটি বড় দল যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পরও তাদের সঙ্গে জোট করে মিল-মহব্বত রেখে নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের জন্য শক্তির মহড়া দেয় তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় এমন শক্তিকে আওয়ামী লীগ মাঠে নামাতেই পারে। আর যেটা বাস্তব, স্বত:স্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে যে গণজাগরণ মঞ্চ তাকে যদি আওয়ামী লীগ শুধু সমর্থন না, সহযোগিতাও দেয় তাহলে তার দোষটা কোথায়! যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি যখন এক যুগেরও বেশি সময় জোটবদ্ধ, তখন জামায়াতের প্রতিপক্ষ হিসেবে গড়ে উঠা গণজাগরণ মঞ্চকে বিএনপির প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ বেড়ে উঠতে দেবে, এটাই কি স্বাভাবিক না?
১৮. জামায়াত মোকাবেলায় গণজাগরণ মঞ্চ তাই হয় আওয়ামী লীগের সফলতা অথবা বিএনপিসহ অন্যদের ব্যর্থতা। কারণ, আওয়ামী লীগের বাইরে দেশের যে ৬৫ শতাংশ মানুষ আছে যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে তাদের বেশিরভাগের চাওয়াকে অন্যরা কার্যকরভাবে ধারণ করতে পারছে না। বেশিরভাগের ওই চাওয়ার সঙ্গে দেশের ৩৫ শতাংশ জনগোষ্ঠি যারা অন্ধভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে তাদের চাওয়া যখন মিলে যায় তখন সেটা আওয়ামী লীগের দোষ কেনো হবে?
১৯. গণজাগরণ মঞ্চের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘জামাই আদর’ আর জামায়াত-শিবিরের জন্য ‘লাঠি-গুলি-টিয়ারের’ অভিযোগ এনেছেন আপনি। স্বাভাবিকভাবে একটি অহিংস জাগরণ যার চরিত্র অনেকটা একসময় ‘হারমোনিয়াম পার্টি’ হিসেবে সমালোচিত ‘ছাত্র ইউনিয়নীয়‘ এবং বিপরীতে একটি সহিংস প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা যার টার্গেট দেশের পুলিশ-সংখ্যালঘু-সরকারি প্রতিষ্ঠান__ এ দু’ চরিত্রের জন্য সরকারের দাড়িপাল্লা একইরকম হতে পারে না।
২০. আপনিওতো একসময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির আন্দোলনে ছিলেন। নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সেই আন্দোলনকে সেসময়ের বিএনপি সরকার ‘জামাই আদর’ দেয়নি। বরং ‘লাঠি-গুলি-টিয়ারে’ আন্দোলন দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এমনকি শহীদ জননী নিজে পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন। ২১ জুন প্রেসক্লাবে পুলিশের হামলার দিন আপনিও। সরকার তাই সবক্ষেত্রেই একটা পক্ষ। তখনও যেমন ছিলো, এখনও আছে।
২১. সরকারবিরোধী আন্দোলন না হওয়ার পরও শহীদ জননীর আন্দোলনের সময় বিএনপি সরকার যেমন নিরপেক্ষ ছিলো না, এখনও তাই। আওয়ামী লীগতো ঘোষণা দিয়ে এই বিচারে নেমেছে। তরুণ প্রজন্মের হৃদয় পড়তে পেরে নির্বাচনের আগে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, নির্বাচিত হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। নির্বাচিত হওয়ার পর তারা সেই বিচার করছে। কখনো আপোসের পাথে হেঁটে কথনো ঠিক ট্র্যাকে থেকে সরকার সেই বিচার একটা পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগতো জামায়াতকে সমতার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে নির্বাচিত হয়নি। বরং জামায়াত দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এখানে তাই সমতার প্রশ্ন কিভাবে আসবে?
২২. আপাতত: শেষ কথা। সরাসরি না থাকলেও আপনার ‘বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার’ কথায় আরও অনেকের কথার মতো স্পষ্ট, শাহবাগে ফাঁসির দাবি জানানো হলে বিচারের কি দরকার? এক্ষেত্রে আপনাকে মনে করতে বলবো, গণআদালতের কথা। সেখানে প্রতীকী ফাঁসির রায় ঘোষণা করে বিচারের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছিলো। এখানে শাহবাগ থেকেও কেউ ফাঁসির রায় ঘোষণা করছে না। তরুণ প্রজন্ম তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা জানাচ্ছে। যে আকাঙ্ক্ষায় যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির সঙ্গে তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ফাঁসির কথাও বলা হচ্ছে। এটা ৯০‘র গণঅভ্যুত্থোনের এক দফার মতো। বলা হয়েছিলো ‘এক দফা এক দাবি, এরশাদ তুই কবে যাবি’, কিন্তু আসলে তা শুধু এরশাদকে বিদায়ের কথা বলে নি, স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের কথাও বলেছে। মাঝে কিচুটা হোঁচট খেলেও গণতন্ত্রে কিছুটা উত্তরণ তো হয়েছে। তা না হলে তো এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে-বিপক্ষে এতো কথা বলা যেতো না।
২৩. তবে সেই গণতন্ত্রে উত্তরণ আওয়ামী লীগ-বিএনপি কতোটা ধারণ করতে পেরেছে সেটা দেশের মানুষ ভালোই জানে। এখন সাধারণ মানুষ দলীয় বৃত্ত থেকে ‘জয়বাংলা’ স্লোগানকে বের করে আবারও যে সর্বজনীন করেছে, আওয়ামী লীগ সেটা খুব বেশি ধারণ করতে পারবে বলে মনে হয় না। তারপরও বিএনপির সঙ্গে তার পার্থক্য, অন্য বিকল্প না থাকায় মানুষ অন্তত: একাত্তরের ফয়সালা ইস্যুতে আওয়ামী লীগকেই বেছে নিয়েছে। গত নির্বাচনের পর জামায়াতকে ছুঁড়ে ফেলে দিলে বিএনপির জন্য এখনকার এই গণজাগরণকে নিজের করে নেওয়ার সুযোগ থাকতো। তাতো হয়ই নি, গণজাগরণ শুরু হওয়ার পরও জামায়াতকে ডিভোর্স না দিয়ে আরও একবার সুযোগ হারিয়েছে বিএনপি।
জাহিদ নেওয়াজ খান: বার্তা সম্পাদক, চ্যানেল আই (znewaz@gmail.com)