সরকার প্রধানের মূল কাজ, প্রজাতন্ত্রের প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি দেশের সমস্ত সরকারি কার্যালয় যথাক্রমে ব্যাংক, বীমা, জজকোর্ট, হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টসহ সরকারি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে চালু রাখা।
সরকারের কার্যালয় সচল রাখা মানেই হচ্ছে, ‘সরকার সচল’।
সরকারের কার্যালয় অচল মানে হচ্ছে, ‘সরকার অচল’। সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসুচি হচ্ছে, সরকারের কার্যালয় অচল রাখা। জনগণের চলাচলের রাস্তার জায়গায় সরকারের কার্যালয় থাকে না। জনগণের চলাচল রাস্তার জায়গা অচল করলে সরকার যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার চেয়ে শতগুণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সরকারের কার্যালয় অচল করলে। সরকারের কার্যালয় অচল করার পূর্বে সরকারকে আলটিমেটাম দিতে হবে। মানববন্ধন করতে হবে। সরকারের দেয়া একক জাতীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনগণের সমর্থন অর্জন করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে জনগনের সমর্থন বাড়াতে হবে। জনগণের ক্ষতি করে সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের কর্মসূচিতে জনগণের সমর্থনটা বরং বিরোধী দলের বিপক্ষেই যাচ্ছে। জাতীয় ইস্যুতে জনগণের সমর্থন বাড়ানোর কাজ হচ্ছে, বিরোধী দলের জন্য বড় ধরনের কাজ। বিরোধী দলের আসনভুক্ত এম, পি প্রার্থীসহ কর্মীদেরকে নিয়ে টার্গেট করতে হবে, কতজন নেতাকর্মী কতজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অফিসে যাতায়াত বাধাগ্রস্ত করা হবে। কঠোর কর্মসূচির জন্য কর্মকর্তাদেন বাসায় বাসায় গিয়ে অফিসের কাজে যোগদান না করার জন্য তাদেরকে মটিভেট করতে হবে। অফিসারদের অফিসে যাওয়া বন্ধ করতে নেতা কর্মীদের দৈহিক শক্তির পরিবর্তে মেধাশক্তি প্রয়োগ করার শিক্ষা দিতে হবে। উপজেলা পর্যায়ের ব্যাংক এবং অফিস, জেলা শহরের ব্যাংক এবং অফিস, বিভাগীয় শহরের ব্যাংকসহ সরকারি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ করলে, সরকার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারি কার্যক্রম চালু করতে বাধাগ্রস্ত হবে। কম সময়ের মধ্যে জাতীয় স্বার্থের দাবি মানানোর জন্য এটাই হচ্ছে সরকারপ্রধানের বিরদ্ধে হরতালের বিকল্প প্রতিবাদ। এই ধরনের প্রতিবাদে জনগনের যাতায়াতের সমস্যা থাকবে না। জনগনের জান মালের কোনো ক্ষতি হবে না। রাজনৈতিক দল যখন রাস্তায় চলবে তখন এক সারিতে চলবে। আমি মনে করি, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এটাই হচ্ছে, সভ্য কর্মসূচি। জনগণের যাতায়াতের রাস্তা হচ্ছে, জনগণের, জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জায়গা। জনগণের এই ধরনের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মিছিল মিটিং, মারামারি-কাটাকাটি, দাঙ্গা হাঙ্গামা, গাড়ি পোড়ানো, মানুষ খুন করা, ইট পাটকেল ছোড়া, লাঠি-বৈঠা-লগি-রামদার শো-ডাউন করা, যাতায়াতের জায়গায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করার মধ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হচ্ছে, অসভ্য ধরনের প্রতিবাদ। হরতালের ফুটেজ দেখলে বোঝা যায়, হরতাল কত জঘন্য কর্মসূচি। হরতাল চলাকালে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি কে করল, তা দেখার বিষয় নয়, যাদের নির্দেশে হরতাল পালন হয়, সাধারণ মানুষের ক্ষয় ক্ষতির দায়ভার তাদেরকেই বহন করতে হবে।
হরতাল পালন করার কারণে বড় ধরনের ক্ষতি হয় জনগণের, দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষতি হয় যারা হরতাল ডাকে তাদের। হরতালে সরকারি দলের ক্ষতি সবচেয়ে কম হয়। কাজেই আর নয় হরতাল, অবরোধ এবং সমাবেশ।
সরকারকে অল্প সময়ের মধ্যে দুর্বল করতে হলে জনগণের বিপুল সমর্থনসহ সরকারি অফিস এবং ব্যাংকবীমা বন্ধ করাই হচ্ছে ”হরতালের বিকল্প” ---সরকারের বিরুদ্ধে শতগুণ কঠোর কর্মসূচি।
লেখক: মোঃ সানোয়ার হোসেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার
সম্পাদনা: জুয়েল মাজহার,কনসালট্যান্ট এডিটর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।