আজ ১১ মে ২০১৩, অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচন। জাতীয় পরিষদের ৩৪২ আসনের মধ্যে ২৭২টি আসনে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০০৮ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত বিগত জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। অনেকেরই হয়তো মনে আছে ওই নির্বাচনের প্রচারাভিযানে পাকিস্তান পিপলস্ পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা বেনজীর ভুট্টো আততায়ীর বোমা হামলায় প্রাণ হারান। ওই সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। বেনজীর ভুট্টোর এই প্রাণহানির ঘটনায় সে সময় নির্বাচন কিছুদিন স্থগিত ছিলো। পরিবর্তিত সিডিউলে নির্বাচন সম্পন্ন হলে পিপিপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও প্রাপ্ত আসন ছিলো ১২১। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল) পেয়েছিলো ৯১ আসন। পিপিপি অন্যদলগুলোর সঙ্গে মিলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে।
পিএমএল কোয়ালিশন সরকারে যোগ দিয়ে মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেছিলো। আবার প্রায় দেড় বছর আগে পিপিপির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মন্ত্রী পরিষদ থেকে পিএমএল প্রতিনিধিগণ বের হয়ে যান। ধারণা করি, এসব তথ্য প্রায় সকলেরই কম-বেশি জানা।
বিগত পাঁচ বছর পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি ভালো যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, স্থিতিশীলতা বার বার মুখ থুবরে পড়েছে। বেনজীর ভুট্টোর স্বামী প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির দুর্নীতি মামলায় সরকারও স্থিতিশীলতা হারিয়েছিলো। বেকারত্ব বৃদ্ধি, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুতের সংকট, মূল্যস্ফীতি, প্রেসিডেন্টের দুর্নীতি, জঙ্গি উত্থান, পিপিপির নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল প্রভৃতি ঘটনায় পাকিস্তানের সময়টা ভালো কাটেনি। পাঁচ বছর আগের নির্বাচনে বেনজীর ভুট্টো আততায়ীর হামলায় মৃত্যুবরণ করলে সহানুভুতির ভোট পিপিপি প্রার্থীরা পেয়েছিলেন। এবার সেই পরিবেশ-পরিস্থিতি নেই। অধিকন্তু, পিপিপির নেতৃত্ব নিয়ে রয়েছে কোন্দল। পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল জারদারির সঙ্গে পিতা প্রেসিডেন্ট আফিস আলী জারদারির কিছুদিন আগে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ছোট ভাইয়ের বউ-ভাসুরের সম্পর্ক লক্ষ করা গেছে। বিলাওয়াল অভিমান করে আরব আমিরাতে চলে গিয়েছিলেন। পরে আসিফ আলী জারদারি গিয়ে পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানে ফেরেন। আমি বিলাওয়াল জারদারি নামে সঙ্গে ‘ভুট্টো’ বলতে চাই না। এটি আফিস আলী জারদারি বেনজীর ভুট্টো মৃত্যুবরণের পর রাজনৈতিক সিদ্ধিলাভের উদ্দেশ্যে বিলাওয়ালের নামের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। বেনজীর ভুট্টোর সহোদর ভ্রাতা মোর্তাজা ভুট্টোর কন্যা রয়েছেন, যিনি বিলাওয়ালের চেয়ে বয়সে জ্যেষ্ঠ এবং শিক্ষা, জ্ঞানার্জনেও এগিয়ে। পারিবারিক উত্তরাধিকারের তকমা মোর্তজা ভুট্টোর কন্যার প্রাপ্য হলেও তা আসিফ আলী জারদারি বলা যায় অনেকটা ছিনতাই করেছেন। এছাড়াও সব সময়ই ক্ষমতাসীন দলের ভোট বা জনপ্রিয়তা কমে। সেই বিবেচনাতে নির্বাচনে পিপিপি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পিপিপির সরকার বেশ ভুগিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা দায়ের না করায় প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানী পদচ্যুত হয়েছেন। শেষ সময়ের প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফও অনুরূপ অবস্থা কোনো রকমে অতিক্রম করেছেন। দুর্নীতি, স্ক্যান্ডাল পিছু ছাড়েনি পিপিপির অন্যান্য মন্ত্রীদেরও। পাকিস্তান বর্হিবিশ্বে মৌলবাদী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হলেও পাকিস্তানি জনসাধারণ যে রক্ষণশীল, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। এমন সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন পরিবেশ পরিস্থিতিতে পিপিপির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানীকে জড়িয়ে বিলাওয়ালের যে সম্পর্কের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা পাকিস্তানী মৌলবাদী জনগণ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। পিপিপি সরকারের সময়ে জঙ্গিবাদীরা আরো বেপরোয়া হয়েছে। মালালা ইউসুফ জাই গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। লাল মসজিদকে ঘিরে জঙ্গি আক্রমণের পরিকল্পনা, বোমা হামলা এক রক্তান্ত পাকিস্তানকে চিনিয়েছে। প্রাণ হারাবার আশঙ্কায় বিলাওয়াল নির্বাচনী জনসভাতে অনুপস্থিত ছিলেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি পিপিপির নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেননি। নির্বাচনী অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেননি। আসিফ আলী জারদারির বোন পিপিপির নির্বাচন পরিচালনা করেছেন।
গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন দলের নির্বাচনী জনসভায় বোমা হামলায় অনেক নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আশঙ্কা করছি, আজও হয়তো অনেক কেন্দ্রে বোমা হামলা হবে। জঙ্গিবাদ এমনিভাবে ফুলেফেপে উঠেছে যে, পাকিস্তানের দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার শত চেষ্টা সত্বেও জঙ্গি হামলা রোধ করতে পারেনি। এর দায় পড়েছে বিগত পিপিপি সরকারের ওপর। নির্বাচনী ময়দানে পিপিপি এসব পরিবেশ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সঠিক দিক নির্দেশনা দেখাতে পারেনি। অর্জন করতে পারেনি জনগণের আস্থা। সুতরাং এমন ভঙ্গুর অবস্থায় পিপিপির পক্ষে ক্ষমতায় ফেরা বেশ কঠিন বৈকি। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ভোটযুদ্ধে পিপিপির এই নাজুক অবস্থা নওয়াজ শরীফকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে। নওয়াজ শরীফের পিএমএল প্রতিনিধিরা পিপিপির কোয়ালিশন সরকার থেকে পূর্ব থেকে বের হয়ে যাওয়ায় সরকারের সব ব্যর্থতার দায় থেকে মুক্তি ঘটেছে। বরং এখন নওয়াজ শরীফ সব ক্ষেত্রে সংস্কার এবং পাকিস্তানের স্থিতিশীল অবস্থার ফিরে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ১৩ বছর আগে নওয়াজ শরীফের ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিলো। সে সময়ে ক্ষমতায় ছিলেন জেনারলে পারভেজ মোশাররফ। সেনা সরকারের সময়ে এ ধরনের অভিযোগ এবং কারাদণ্ডের গ্রহণযোগ্যতা সব সময়ই প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার। নওয়াজ শরীফ ওইসব অভিযোগ কাটিয়ে উঠে এবারের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী। তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন ইমরান খান।
নির্বাচনে সাবেক বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে নওয়াজ শরীফের বিরোধীতায় মাঠ গরম করছেন। তিনি নওয়াজ শরীফের ব্যর্থতা এবং পিএমএল এর সাবেক সরকারের দোষ-ত্রুটি তুলে ধরেছেন। ইমরান খান খেলার মাঠে বিশ্বের বড় বড় ব্যাটসম্যানদের হালকা ডেলিভারী বল খেলায় প্রলুদ্ধ করে উইকেট পেয়েছেন। রাজনীতির মাঠেও তিনি জনগণকে প্রলুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছেন। তিনি নতুন পাকিস্তান, পরিবর্তিত পাকিস্তান গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার প্রথম মেয়াদের নির্বাচনী লড়াইয়ে Change we need শ্লোগান দিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। বাংলাদেশেও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন। ইমরান খানের নতুন পাকিস্তান গড়ার প্রতিশ্রুতিতে পাকিস্তানের তরুণ ভোটার আকৃষ্ট হচ্ছে। নির্বাচনী জনসভাগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ লক্ষ করা গেছে। কিন্তু জনসভায় ব্যাপক সংখ্যক লোকজনের উপস্থিতি আর ভোট এ দু’য়ের সম্মিলন ঘটে কম। এটাতো পরীক্ষিত যে, অনেক মানুষ দেখতে আসে, শুনতে আসে, ভোট দেয় না। তবে প্রত্যাশিত আসন না পেলেও ইমরান খান নির্বাচনে একটা ফ্যাক্টর হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আমাদের দেশে এরশাদকে যেমন মনে করা হয়, তেমনি ইমরান খানকেও তাই ভাবা হচ্ছে। কার্যত ইমরান খানের সঙ্গে পিপিপির একটা অলিখিত যোগসূত্র হয়তো হয়েছে। ইমরান খান নওয়াজ শরীফের বিরোধিতায় লোকজনকে জড়ো করলেও ক’দিন আগেও ক্ষমতাসীন পিপিপির বিরুদ্ধে কিছু বলছেন না। অনুরূপভাবে পিপিপি নেতৃবৃন্দকেও ইমরান খানের বিরুদ্ধাচারণ করতে দেখা যায়নি। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা উভয়ে নওয়াজ শরীফ ঠেকাও নীতি গ্রহণ করেছে। নওয়াজ শরীফ অবশ্য ইমরান খানের ব্যাপারে সহ্য করার নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি ইমরান খানের সমালোচনা না করে পিপিপির সমালোচনায় মূখর। নওয়াজ শরীফ দাবি করেছেন বিগত পাঁচ বছরে পিপিপি জনগণের জন্য কিছুই করেনি। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত যেসব প্রতিষ্ঠান সমস্যায় জর্জরিত, সেখানে সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। মৌলবাদীদের ভোট পাবার আশায় তিনি আরো বলেছেন, নির্বাচনে তার দল জয়লাভ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোট থেকে পাকিস্তানকে প্রত্যাহার করবেন।
অন্যদিকে, নির্বাচন করতে অভাবিত বিরূপ পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে সাব জেলে দিন কাটছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফের। নির্বাচন কমিশন থেকে তার সব মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। আদালত থেকেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়েছেন। এ অবস্থায় নির্বাচন বয়কট করছে মোশাররফের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার বিরুদ্ধে হার্ড লাইনে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও আদতে মোশাররফের পক্ষে কিছু করতে পারেনি।
পারভেজ মোশাররফ মাইনাস হলেও এখন ত্রিপক্ষীয় এই ভোট যুদ্ধে সরকার গঠন করার মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেউ পাবে বলে মনে হচ্ছে না। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জনমতের ওপর একটি জরিপ করেছে। এই জরিপের ফলাফলে বলা হয়, পিপিপি, নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ এবং ইমরান খানের দল ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভোট পেতে পারে। যার অর্থ দাড়ায়, কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। সুতরাং ঝুলন্ত পার্লামেন্ট নিশ্চিত। পাকিস্তানে কোয়ালিশন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। পিপিপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানীও এই অভিমত পোষণ করেছেন। সম্প্রতি পাকিস্তান স্টাডি সেন্টারের পরিচালক বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সৈয়দ জাফর আহমেদ ২০জনের একটি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিন অবস্থানকালে তার সঙ্গে পাকিস্তানের রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, বাইরে পাকিস্তান সম্পর্কে যতোটা ভীতির কথা শোনা যায়, বাস্তবে পরিস্থিতি এতো খারাপ না হলেও দেশে জঙ্গিবাদ প্রসারিত হয়েছে। পিপিপি চেষ্টা করেছে দমনের। কিন্তু এদের নির্মূল করা কঠিন। অনেক রাজনীতিবিদের প্রাণ গেছে এদের হাতে। পরিবর্তন সাধন করা যাচ্ছে না। পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা কঠিন। কোনো দলের পক্ষেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন আর সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। আগামীতে সব সময়ই কোয়ালিশন সরকার অনিবার্য বলে মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় নির্বাচনোত্তর পাকিস্তানে কোয়ালিশন সরকার গঠিত হলে সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, এটা হলো বিবেচ্য বিষয়। সংখ্যালঘু দলের প্রধান হিসেবে ইমরান খান যদি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। প্রতিবেশি ভারতে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং (ভিপি সিং), দেব গৌড়া প্রমুখ ব্যক্তিগণ সংখ্যালঘু দল থেকে কোয়ালিশন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। কংগ্রেস এককভাবে সবোর্চ্চ আসন পেলেও সরকার গঠন না করে ছোট দলকে সমর্থন দিয়ে সরকার গঠনে সহায়তা করেছিলেন। ইমরান খানের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, আবার নাও ঘটতে পারে। কারণ, দেশটি পাকিস্তান। ক্রিকেটের মতোই রাজনীতিতেও পূর্বানুমান সত্য নাও হতে পারে। আবার সংশয় রয়েছে, ইমরান খান তার নিজ আসনে বিজয় লাভ করবে কী না? ইমরান খানের প্রতিদ্বন্দ্বী উর্দু ফিল্মের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী। দুই জনপ্রিয় ব্যক্তির মধ্যে এ আসনে কে বিজয়ী হবেন, তা দেখার জন্য আপাতত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
তবে বলা প্রয়োজন যে, যিনি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হবেন, তাকে আজকের নির্বাচনেই যে বিজয়ী হতে হবে-এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়লাভের মাধ্যমে আইনগত শুদ্ধ হওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৩
লেখক, আহমেদ সুমন, সহকারী পরিচালক জনসংযোগ অফিস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
e-mail: asumanprju@gmail.com