ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিএনপির উপেক্ষা

নীলিমা হক, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৩
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিএনপির উপেক্ষা

সিডনি থেকে: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অধীনেই হতে যাচ্ছে আগামী নির্বাচন। বিরোধীদল হিসেবে বিএনপি শুধু ব্যর্থই নয়, রীতিমত বিএনপির দিকহীন রাজনীতি লোনা জলে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।



মাঝে মাঝে সরকারের কিছু কাণ্ডজ্ঞানহীন স্থূল মাথার মন্ত্রীদের নানাবিধ কর্মকাণ্ডে বিএনপি বেশ লাফ-ঝাঁপ দিলেও ভেতরে বেশ ফাঁকা।

বিএনপি এখন জামায়াত-নির্ভরশীলতায় এগুচ্ছে। বিএনপি’র আজ গর্ব করার কিছুই নেই। ‘জামায়াতের দোসর হয়েই বিএনপি’র জন্ম এবং বিএনপির বেঁচে থাকা, জামায়াতের সাথেই তার মরণ’- এই সিদ্ধান্তই যেন নিয়েছে বিএনপি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে বিএনপি বের হয়ে এসেছে বেশ আগে। বিএনপি মূলত যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চাইলেও সফল হতে পারেনি।

মাঝে মাঝে জাতীয়তাবাদী দলটি বলতো, ‘এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবেন না তারা। ’ কিন্তু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি ঠিকই আট ঘাট বেঁধে নেমেছে।

মূলত এই কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে বিএনপি সরকারকে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছে তারা আগামী নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবেন। সরকারের লোকজন তাতে বেশ খুশি মনে হয়েছে।

চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জয়-পরাজয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে কে সরকার গঠন করবে তারই আগাম বার্তা দেবে। সরকার যদি এই নির্বাচনে সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়-সরকার ভোটযুদ্ধে শঙ্কাহীনতার মধ্য দিয়ে এগুতে পারবে।

বর্তমান সরকারের যে সফলতা রয়েছে তা তারা কোনোদিনই তুলে ধরতে পারবে না। কারণ এ সরকারের মিডিয়া উইংস বেশ দুর্বল এবং সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের অহঙ্কারী মনোভাবের কারণে সাংবাদিকরা এদের প্রতি বেশ রুষ্ট। যেটুকু তারা করে, তাও কেবল দায়বদ্ধতার খাতিরে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে কাউকে এরা সম্মান দিতে জানেনা। মেধাবী, সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দলটির ধারেও যেতে দেয় না। আর বিদেশি নেতাকর্মীদের সম্মান দেওয়া দূরে থাক তাদের সাথে ভালো আচরণও এই দলটি করে না।

নিজ দলের হাজারো নেতাকর্মীর দীর্ঘশ্বাস আর হতাশা অন্যদিকে নেতৃত্বের দুর্বলতায় দলটির ভবিষ্যত শুধু বাঙালি জনগোষ্ঠীর করুণার ওপর নির্ভরশীল।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যুদ্ধাপরাধীর বিচার জাতির সামনে এনে এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও আগামীতে দলটির অবস্থান কি হবে বলা অনেকের কাছেই কষ্টসাধ্য।

আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গোটা জাতি দলিত, মথিত, অত্যাচারিত আর নিষ্পেষিত হবে রাজাকার ও আল-বদরদের হাতে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, চেতনা আর ধর্ম নিরপেক্ষতার অবয়বে কোনোদিনই ফিরে আসতে পারবে না বাংলাদেশ।

জাতীয়তাবাদী দলটি রাজাকার নিয়ে ক্ষমতার শীর্ষে উঠে দেশকে পাকিস্তানি আদলে গড়ে তুলবে।

আওয়ামী লীগ ও বামপন্থীরা কি সেই আওয়াজ শুনতে পান? নাকি আরও খাঁটি বিপ্লবী হওয়ার বাসনায় দিন গুনতে চান বিভেদ আর অনৈক্যের বেড়াজালে আটকে থেকে!

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।