ঢাকা: এক সময় দেশের ‘দ্বিতীয় পার্লামেন্ট’ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদসহ (ডাকসু) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না দুই দশক ধরে। কেন? আমরা সবাই জানি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো ছাত্রদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে শিক্ষা দেয়, ছাত্রদের মধ্যে আগামী দিনের যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলে।
এর মধ্যে শিক্ষকদের নির্বাচন, কর্মচারীদের নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু যারা আগামীতে এ দেশকে নেতৃত্ব দেবেন, তাদের যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তোলার পীঠস্থান ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না দুই দশক ধরে।
স্বৈরাচারের শাসনামলে দুইবার ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু, আমাদের ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ ও ‘আপসহীন’ দুই নেত্রীর শাসনামলে ডাকসুসহ সকল ছাত্র সংসদ অকার্যকর। ছাত্র সংসদ অকার্যকর করে ছাত্র সংসদের তহবিলে জমে থাকা কোটি কোটি টাকা লুটপাট চলছে।
অবশ্য তারা এ ব্যাপারে আপসহীন। ডাকসু কার্যকর থাকলে ছাত্রদের মধ্য থেকে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠলে দুই নেত্রীর জন্যই অসুবিধা। কারণ, কোনো নীতি ও আদর্শবান নেতা গড়ে উঠলে তারা তো তোষামোদী করবে না। তাই, দুই দশক ধরে ডাকসুসহ সকল ছাত্র সংসদ অকার্যকর।
বিগত কয়েক দশকে দেশে যে কয়েকজন দেশপ্রেমিক, আদর্শবান, নীতিবান রাজনীতিবিদ গড়ে উঠেছেন, এরা সবাই ডাকসু নির্বাচন থেকে গড়ে উঠেছেন।
আসলে ক্ষমতার পালাবদলকারী, গণতন্ত্রের লেবাস পরিহিত দুই দল ও দুই নেত্রী চায় না যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠুক। যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠলে, তাদের দুই পরিবারের রাজনৈতিক দখলদারিত্বের বিষয়ে প্রশ্ন উঠবে।
অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি ‘সন্ত্রাসের রাজনীতি’তে পরিণত হয়েছে। প্রধান দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা দুই দলের দুই ভাইয়ের মন জয় করায় ব্যস্ত। নেতা হতে হলে দুই পরিবারের দুই অযোগ্য সন্তানের মন জয় করলেই নেতা হওয়া সম্ভব। বর্তমান ছাত্র রাজনীতি আদর্শহীন হওয়ার মূল কারণও ছাত্র সংসদ অকার্যকর থাকা।
সাম্প্রতিক ছাত্র রাজনীতিকে সন্ত্রাস ও দখল দারিত্বের পথ থেকে সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে, দেশের সমগ্র ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডাকসুসহ সকল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
নাজমুল হাসান: আহ্বায়ক, নাগরিক ছাত্র ঐক্য
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৩
সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর