‘বাবাকে সন্তানের মনে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। ভালবাসতে হলে অর্থ নয় মন থাকলেই যথেষ্ট।
কথাগুলো বলছিলেন রাজবাড়ী জেলার পদ্মাপারের গরীব অসহায় পরিবারের হাসি আক্তার।
হাসি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ছোট বেলায় বাবা ও দুই চাচার আদরে বড় হয়েছেন তিনি। অভাব কখনও বুঝতে পারেননি। পরিবারের একমাত্র মেয়ে তাই অভাব-অনটনের মাঝেও বাবার স্নেহের কোনো অভাব ছিল না।
এক সময় স্বামীর ঘরে যেতে হলো তাকে। স্বামীর সংসার চালাতে গিয়ে তিনি ভুলে যাননি বাবাকে। বাবা ও স্বামীর পরিবারের সবার মন জয় করতে থাকেন তিনি।
বাবার সঙ্গে প্রতিদিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন হাসি। হঠাৎ একদিন বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চিন্তায় পড়ে যান তিনি। বাড়িতে যোগাযোগ করে জানতে পারেন বাবা রাগ করে মোবাইল রেখে কর্মস্থল লঞ্চে চলে গেছেন। কোনোভাবে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে স্বামীকে সব কিছু খুলে বলে তাকে লঞ্চঘাটে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন হাসি।
রাতে স্বামীর কাছে বাবার কথা জানতে চান। কিন্তু স্বামী কোনো খোঁজ না নেওয়ায় স্ত্রীর কথার কোনো উত্তর দিতে পারেন না।
স্বামীর ওপর চাপা অভিমান করে সারারাত না ঘুমিয়ে ভোরে বাবার উদ্দেশে বাড়ি থেকে এক বছরের বাচ্চা নিয়ে বের হন। লঞ্চঘাটের সবাই জিজ্ঞাসা করলে বাবার কাছে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। সবাই বলেন তিনি কাজিরহাট গেছেন, সন্ধ্যায় চলে আসবেন।
তবু বাবাকে দেখার জন্য দৌলতদিয়া থেকে লঞ্চে আরিচাঘাটে তারপর সেখান থেকে কাজিরহাট যেতে চাস। ঘাটের সবাই বলে তোমার বাবা কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবেন। কারো কথায় কান না দিয়ে সোজা চলে যান কাজিরহাট লঞ্চঘাটে। সেখানে গিয়ে দেখা পান তার প্রিয় বাবার।
বাবাকে কাছে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। সব বাবার জন্য শুভ কামনা।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: শিমুল সুলতানা, অ্যাক্টিং কান্ট্রি এডিটর