আমার ক্ষুদ্র ডাণ্ডা (টিভি) সাংবাদিকতার (কারো কারো ভাষ্যমতে) অভিজ্ঞতায় বেশিরভাগ টিভি চ্যানেলের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আসেন বিভিন্ন ডেস্ক থেকে। (রিপোর্টিং থেকে আসেন না এমন বলি নি) একজন রিপোর্টার ৩ থেকে ৫ বছর কাজ করে হন সিনিয়র, তারপর স্পেশাল করেসপনডেন্ট, অনেক পরে নিউজ এডিটর।
আর একজন নিউজরুম এডিটর বছর দুই পরেই নামের পাশে সিনিয়ির তকমা পান, চার-পাঁচ বছর পরেই যুগ্ম বার্তা সম্পাদক পদবী যুক্ত হয়ে যায় নামের আগে। তখন এডিট করেন দেশের বড় বড় সব সংবাদ। অথচ তিনি কখনো ফিল্ডে নেমে সংবাদ সংগ্রহ করেন নি। টিয়ারশেল লেগে কখনো অঝোর ধারায় পানি ঝরেনি তার চোখ থেকে। রাতের পর রাত কোন নেতার বাসার সামনে বসে মশার কামড় খাননি। কিংবা কানের পাশ দিয়ে ছুটে যায়নি কোন গুলি।
এতো কথা বলার মানে এবার পরিষ্কার করা দরকার। মোহনা টেলিভিশনের আব্দুর রউফ সাহেব কোন ঘরানার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক তা জানা নেই।
১০ জুলাই অফিসে ঢুকেই বাংলানিউজ ওপেন করলাম। একটা শিরোনাম ‘কলুষিত হচ্ছে ভাষা ও সাংবাদিকতা’।
লেখক লিখেছেন, স্ক্রিপ্ট এডিটিংয়ের এই ধারায় অন্য সবাই-ও এক। একেবারে এ টু জেড বলা যায়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ভুলটি কম করার চেষ্টা করি। মোহনা টেলিভিশনে বলতে গেলে আমি একা নিউজ এডিটর। তাও পুরোপুরি না, জয়েন্ট নিউজ এডিটর। তিন বছর হলো। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব প্রমোশন দেবেন না।
এই লেখাটিতে আগে লেখক উদাহরণ দিয়ে তুলোধুনো করলেন বিভিন্ন টেলিভিশনকে। স্টেশনের নামসহ দিলেন বানান আর ভুলের বিভিন্ন কেরামতি। তিনি বললেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ভুলটি কম করার চেষ্টা করি’। যদিও এমন কাউকে আমি জীবনে দেখি নি, যিনি ভুল বেশি করার চেষ্টা করেন।
যেসব চ্যানেলের উদাহরণ তিনি দিলেন, তারা কি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেছে? আপনি কি কখনো চ্যানেল 24 দেখেছেন? একদিন দেখে জানাবেন, আমাদের কয়টা বানান ভুল হলো।
প্রথম লেখাটির পর লেখক যে বেশ রেসপন্স পেয়েছেন তা তার দ্বিতীয় লেখাতে (১৩ জুলাই) বুঝা গেলো। প্রভাষ আমিন নাকি মতামত জানিয়েছেন! যদিও কারওয়ান বাজারের কোন আড্ডায় এ ক’দিনে এ সংক্রান্ত কোন আলাপ হলো না কেন যেনো।
যাই হোক, পরের লেখাটি, ‘টেলিভিশন সাংবাদিকতা: অসুস্থ প্রতিযোগিতার অভয়ারণ্য’। খুবই আকর্ষণীয় শিরোনাম। পাঠক শিরোনাম দেখেই আকৃষ্ট হবেন। যেমন, আমি বলেছিলাম এ লেখার শুরুতেই।
তবে, শিরোনামের সঙ্গে ভেতরের লেখার খুব একটা সাদৃশ্য পেলাম না। এবারো সেই বানান বিভ্রাট। কোন চ্যানেল স্ক্রলে কি ভুল করলো। কার সুপারে ভুল গেলো। এ্যাস্টন আকার-উ-কার ঠিক হলো কি না। প্রতিযোগিতার সঙ্গে বানান ভুলের কি সম্পর্ক বুঝলাম না।
দু’টো লেখা পড়েই আমার একটা জিনিস মনে হয়েছে- মোহনা টেলিভিশনের সবাই বাংলায় খুব পারদর্শী। নিউজরুমে বসে তারা সবসময় অন্য চ্যনেল দেখেন- এটাই বাহবা দেওয়ার মতো। আমার একটা পরামর্শ, যারা বাংলাদেশের বেশিরভাগ টেলিভিশন সাংবাদিকদের .... মনে করেন, তারা যেন একটা সহায়িকা প্রকাশ করেন। কি করণীয়, কিভাবে শব্দ লেখা হবে, উচ্চারণ কি হবে এসব বিষয় তাতে থাকবে।
রাশেদ নিজাম, স্টাফ করেসপনডেন্ট, চ্যানেল 24, rashed_nizam@yahoo.com
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৩
জেডএম/