William Gomes @Wnicholasgomes 3 Aug
@sajeebwazed Ask you mom to pack up. Its time to go. For now on she will cook for you everyday. Wish she will end up like your Nanu @EconAsia
গত ৩ আগস্ট টুইটারে উইলিয়াম নিকোলাস গোমেজ নামক জনৈক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্দেশ্যে এ বার্তা পাঠান। এতে তিনি স্পষ্টভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু কামনা করেন।
কে এই উইলিয়াম নিকোলাস গোমেজ? তার পরিচয় কি? তিনি কি বাংলাদেশি? কেন তিনি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন?
স্বভাবজাত কৌতূহলে গুগলে সার্চ দিলাম। "দি হাফিংটন পোস্ট" এ লেখকের যে পরিচিতি দেওয়া আছে তা হলো-
“William Nicholas Gomes is a Bangladeshi human rights activist and freelance journalist based in Britain. He is a former fellow at Center for Applied Human Rights in the University Of York. In recent past he had work for regional human rights organization Asian Human Rights Commission. A convert to Christianity from Islam, he fled Bangladesh after authorities cracked down on his human rights activities which exposed the authoritarian impulses of the Bangladesh government. He remains actively involved with grassroots movements for migrants rights and is a participant in interfaith dialogue.
জানা গেল, উইলিয়াম গোমেজ একজন মানবাধিকারকর্মী। তিনি একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের একনিষ্ঠ সেবক হিসেবে প্রবাসে বসবাস করছেন। তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের অধিকার রক্ষার জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বলেও নিজেকে দাবি করেন।
২৬ আগস্ট, ২০১১ হংকং থেকে ক্রিশ্চিয়ান ওয়ার্দি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে এই উইলিয়াম গোমেজ বলেছিলেন যে, ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশে তিনি অত্যাচারিত হয়েছেন। ৠাবের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হংকং পালিয়ে এসেছেন।
“He was tortured for his Christian faith, but still wanted to "sing the songs of David." He was naked, but "Jesus Christ" clothed him "with His Love." Words of Christian rights activist William Nicholas Gomes, a former Muslim who fled rough police and Islamic extremists in his native Bangladesh.”
অথচ তার নিজের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, তিনি ২০০৩ সালে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেন, আর র্যাবের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে র্যাব তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করে। ২০০৩ সালে খ্রিস্টান হওয়ার পরও যার জীবন বিপন্ন হয় নি, ২০১১ তে হঠাৎ তিনি দেশের বাইরে গিয়ে কোন উদ্দেশ্যে প্রচার করেন যে, ইসলাম ত্যাগ করার কারণে তার জীবন বিপন্ন?
তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে আরো বলেছিলেন যে, তার স্ত্রী ও সন্তানের নাকি মৌলবাদীদের কারণে জীবন বিপন্ন!! প্রশ্ন করা যেতেই পারে যে, এত বছর ধরে খ্রিস্টান হয়ে বাংলাদেশে থাকার পর হঠাৎ করে কেন তাদের জীবন বিপন্ন হল? মিথ্যাচারের সীমা থাকা উচিত বৈ কি!!
তিনি নিজেই অন্য একটি ওয়েবে জানিয়েছিলেন যে, র্যাবের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণ তিনি র্যাবের রোষানলে পড়েছেন। তাহলে তিনি ইসলামকে কেন ভিন্ন রূপে উপস্থাপন করলেন? এর অর্থ হয় যে, নিজের স্বার্থের জন্য তিনি বাংলাদেশে ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।
তিনি মানবাধিকারকর্মী, তিনি "ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের" বিরুদ্ধে। বিশ্ব থেকে ফাঁসি, মৃত্যদণ্ড উঠে যাক, এ নিয়ে তিনি অত্যন্ত সোচ্চার। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে রাজাকার শিরোমনি গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড হলে তিনি বেশ বড়সড় আর্টিকেল লিখেছিলেন। বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর নিদারুন নির্যাতন করা হয় বলেও বিশ্ববাসীর দরবারে খবর পৌছে দেওয়ার মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নিজের লেখার ফেরি করে ঘুরছেন তিনি।
তো এহেন মানবাধিকার কর্মী, সাচ্চা যীশুপ্রেমী যখন কারো হত্যা কামনা করেন, হুমকি দেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে তিনি আসলে কেমন মানবাধিকারকর্মী? তিনি কিভাবে ৭৫` এ বঙ্গবন্ধু পরিবারের নির্মম হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করেন? তিনি কিভাবে পুনরায় সেরকম একটা হত্যাযজ্ঞের প্রত্যাশা করেন? তিনি কি আসলেই কোনো মানবাধিকারকর্মী? নাকি মানবাধিকারকর্মীর আড়ালে একজন দেশদ্রোহী? একজন ইসলাম বিদ্বেষী?
মুখোশের আড়ালে বসে মানবাধিকারকর্মী বলে বিশ্ববাসীর কাছে জাহির করা ব্যক্তির জন্যই আজ আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। শান্তির ধর্ম ইসলামকে ভুলভাবে উপস্থাপিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। জাতীয় ভুল খবর বিশ্ববাসীর কাছে পৌছে যাচ্ছে। শুধু ব্যক্তিগত আক্রোশ ও অর্থের বিনিময়ে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের উদ্দ্যেশ চরিতার্থ করতে উইলিয়াম নিকোলাসদের জন্ম হয়। ইসলামের বিরুদ্ধে বলার কারণে এরা পশ্চিমাদের নয়নের মণি হয়ে যায়।
ইসলামী মৌলবাদী নয়, বরং তিনি নিজেই ইসলাম ধর্ম, বাংলাদেশ এবং সব শেষে প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করে বাংলাদেশ ও ইসলামের জন্য একজন ক্ষতিকর ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত। এসব মানবাধিকারকর্মীর আড়ালে বসে থাকা ক্ষতিকর প্যারাসাইটকে সব দেশপ্রেমীর একযোগে রুখে দেওয়া দরকার।
জিনিয়া জাহিদ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৩
জেডএম/