এই সপ্তাহে বদর বাহিনীর নেতা চৌধুরী মাঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিচারের রায় হয়েছে। একাত্তরের ডিসেম্বর মাসে যখন সবাই বুঝে গেল পাকিস্তান মিলিটারির পরাজয় সুনিশ্চিত, তখন জামায়াতে ইসলামীর কিলিং স্কোয়াড কুখ্যাত বদর বাহিনী সিদ্ধান্ত নিলো দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই যতজন সম্ভব শিক্ষক, ডাক্তার, সাংবাদিক, ইঞ্জিনিয়ার— এক কথায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে ফেলতে হবে।
৪২ বছর আগের কথা হলেও আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে, মনে হয় মাত্র সেদিনের কথা। মিলিটারির আত্মসমর্পণে দেশ সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হওয়ার পর আমরা তখন প্রথমবার রাজপথে বের হয়েছি। সেই অবিশ্বাস্য আনন্দের কথা আমাদের প্রজন্ম কোনোদিন ভুলতে পারবে না। প্রথম যেদিন খবরের কাগজ বের হয়েছে, সেখানে দেখি এই দুই নরঘাতক চৌধুরী মাঈনুদ্দিন আর আশরাফুজ্জামানের ছবি। তখন ধীরে ধীরে বুদ্ধিজীবী হত্যার খবর বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। খবরের কাগজে এই দুই নরঘাতককে ধরিয়ে দেওয়ার আবেদন বেরিয়েছে। পৃথিবীর সব কাপুরুষের মতো তারাও আত্মগোপন করে প্রাণ বাঁচিয়েছে। তাদের ধরা যায়নি।
শুধু তাই নয়, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যখন এই দেশে মিলিটারি শাসন শুরু হলো তখন পুরো দেশটা ‘অ্যাবাউট টার্ন’ করে উল্টোদিকে হাঁটতে শুরু করলো। এই দুই নরঘাতক তখন দেশ থেকে সরে গেছে, কেউ তাদের স্পর্শ করেনি।
শেষ পর্যন্ত এ দেশের মাটিতে তাদের বিচার হয়েছে। তাদের দু’জনকেই ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। তাদের ইংল্যান্ড আমেরিকা থেকে ধরে এনে এদেশের মাটিতে ফাঁসি দেয়া যাবে কি না আমরা জানি না। শুধু এটুকু জানি, ইতিহাসের পাতায় তারা দেশদ্রোহী নরঘাতক হিসেবে পাকাপাকিভাবে চিহ্নিত হয়ে গেল।
আজ থেকে শত বছর পর আমরা কেউ থাকবো না, কিন্তু এই ইতিহাসের পাতাটি থেকে যাবে, যেখানে ভবিষ্যতের বংশধরেরা ঘৃণাভরে এই মানুষ দু’টির দিকে তাকাবে।
১৯৭১ সালে চৌধুরী মাঈনুদ্দিন আর আশরাফুজ্জামানের মতো জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মী ছিল যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবহ হয়ে এই দেশের গণহত্যাকে সাহায্য করেছে। একাত্তরে এই রাজনৈতিক দলটির যে চরিত্র ছিল ২০১৩ সালে কি সেই চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়েছে?
আমার মনে হয়, ‘না’। যদি হতো তাহলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার মেনে নিয়ে তারা নিজের দলকে গ্লানিমুক্ত করতো। আমরা সবাই দেখেছি একেকজন করে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় বের হয়েছে আর এই দলটি তার প্রতিবাদে সারা দেশে এক ধরনের তাণ্ডব শুরু করেছে। তারা কি বিশ্বাস করে, একাত্তরে তারা যা করেছিল তা সঠিক? তারা কি মনে করে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবহ হয়ে দেশে গণহত্যা করা যায় এবং যারা সেটি করেছে এই দেশের মানুষ তাদের বিচার করতে পারবে না? তারা কি বিশ্বাস করে চৌধুরী মাঈনুদ্দিন আর আশরাফুজ্জামানের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার অধিকার ছিল? একাত্তরে সেটি যদি কোনো অপরাধ হয়ে না থাকে তাহলে ভবিষ্যতে কি সেটি আবার করা যাবে?
আমি এই প্রশ্নটি করছি কারণ, একাত্তরে এই রাজনৈতিক দলটি যা যা করেছিল এখন তারা আবার ঠিক সেই একই কাজগুলো করতে শুরু করেছে। তারা হিন্দুদের আক্রমণ করছে। তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। ট্রেন লাইন তুলে ফেলছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের খুন করেছে।
সামনে নির্বাচন। নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা এখনো দেশের কেউ জানে না। দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানী-গুণী মানুষরা এই নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। কাজেই নিশ্চয়ই কিছু একটা ফয়সালা বের হয়ে যাবে, আমি সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।
আমার প্রশ্ন নির্বাচনের পরের অংশটুকু নিয়ে। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপি গতবার নির্বাচনে জিতে আসার পর এই দেশের হিন্দুদের ওপর যে বিভীষিকা নেমে এসেছিল আমি এখনো সেটা ভুলতে পারি না। (আমার সেটি নিয়ে একটা অন্যরকম ক্ষোভ আছে, এই দেশে প্রগতিশীল হিসেবে যেসব পত্রিকা অহঙ্কার করে কিংবা যারা বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন তারা দীর্ঘদিন তাদের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল।
শাহরিয়ার কবিরদের মতো কিছু মানুষ বিষয়টিকে সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর পর খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করতে শুরু করেছিল। যারা আমার কথা বিশ্বাস করেন না তারা আজ থেকে ঠিক এক যুগ আগের পত্র-পত্রিকা বের করে পড়ে দেখতে পারেন!) এই নির্বাচনে বিএনপি যদি জিতে আসে তাহলে কী এবারেও সেই বিভীষিকাটি আমাদের দেখতে হবে? এবার যেহেতু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে তাই যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছে তাদের ওপর নতুন মাঈনুদ্দিন আর নতুন আশরাফুজ্জামানরা আক্রমণ করবে?
এক যুগ আগে যেরকম সরকার চোখ বন্ধ করেছিল। আবার সেরকম হবে?
আমার দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন আছে, কার কাছে সেই প্রশ্ন করবো বুঝতে পারছি না। আমরা সবাই দেখেছি ইসলামকে রক্ষা করার জন্যে হেফাজতে ইসলাম নামে একটা সংগঠন হঠাৎ করে আত্মপ্রকাশ করেছে। পত্র-পত্রিকায় যেসব খবরাখবর পড়েছি তাতে মনে হয়েছে এটি বুঝি আওয়ামী লীগেরই তৈরি করা একটি ইসলামী দল। কারণ, দেখতাম আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হেফাজত ইসলামের হুজুরদের সামনে নতশিরে বসে থাকতেন!
হঠাৎ করে দেখা গেল হেফাজত ইসলাম আসলে জামায়াত ইসলামেরই একটি নতুন সংস্করণ। গণজাগরণ মঞ্চের ওপর তাদের বিশেষ রাগ, আমি একদিন শাহবাগে বসেছিলাম যখন হেফাজতের কর্মীরা তাদের সম্মেলনের পর শাহবাগ আক্রমণ করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সেই আক্রমণ ঠেকিয়েছিল। তা না হলে কী হতো আমি এখনো জানি না।
যা হোক, হেফাজতে ইসলামের তেরো দফা দাবি রয়েছে। সেই তেরো দফা দাবি মানা হলে বাংলাদেশ এক ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তান হয়ে যাবে। সেই দাবিগুলো মেয়েদের জন্য শুধু অপমানজনক নয়, ভয়ঙ্কর রকম বিপজ্জনক। মেয়েদের এরকম অসম্মান করা দাবি-দাওয়া কেমন করে দেয়া হলো সেটা নিয়ে আমার এক ধরনের বিস্ময় ছিল। ঠিক তখন হেফাজতের নেতা আহমদ শফীর সেই বিখ্যাত তেঁতুল সংক্রান্ত বাণীটি প্রচারিত হলো। আমাদের দেশ যে হাজার রকম বাধা-বিপত্তির মাঝেও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে এই দেশে ছেলেরা আর মেয়েরা পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। একাত্তরে এই দেশে অসংখ্য পরিবারের পুরুষ সদস্য মারা যাওয়ার পর মেয়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের রক্ষা করার জন্য ঘরের বাইরে এসে কাজ শুরু করেছিল— সেখান থেকে শুরু।
এখন আমাদের দেশে ছেলেরা যে কাজ করতে পারে মেয়েরাও সেই কাজ করতে পারে। মেয়ে শ্রমিক এই দেশে খুব পরিচিত একটা দৃশ্য। স্কুলে অনেক জায়গায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি! হেফাজতে ইসলামের নেতা আহমদ শফী তার তেঁতুল তত্ত্বে পরিষ্কার বলেছিলেন, মেয়েদের ক্লাস ফোর-ফাইভ থেকে বেশি পড়ার প্রয়োজন নেই! পুরুষদের একাধিক বিয়ে করতে উৎসাহ দিলেন। পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে ঘোর অবৈজ্ঞানিক কিছু তত্ত্ব দিয়ে সেটা নিরুৎসাহিত করলেন! যে সংগঠনের নেতার এ ধরনের বিশ্বাস তারা এদেশে মেয়েদের সম্মান করবে সেটা তো আশা করা যায় না!
মেয়েদের অসম্মান করা ছাড়াও আরও কিছু ব্যাপার আছে। মে মাসের ৫ তারিখ একজন হেফাজতে ইসলামের কর্মী তার হুজুরের আদর্শে বলীয়ান হয়ে একটি এসএমএস পাঠিয়ে পরিষ্কারভাবে আমাকে জানিয়ে দিয়েছিল যে, সম্ভবত এটাই আমার শেষ রাত। পরদিন আমাকে জবাই করা হবে। কিছুদিন আগে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের চালানো মাদ্রাসায় বোমা তৈরি করার সময় বেশ কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্র মারা গেছে। যার অর্থ তাদের কাজকর্ম শুধু আইন করে মেয়েদের ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখার মাঝে সীমিত নয়। বোমা তৈরি, বোমা ব্যবহার কিংবা আমাদের মতো মানুষদের জবাই করা ধরনের কাজেও তাদের উৎসাহ রয়েছে।
ব্যাপারটা এখানেই শেষ হলে সমস্যা ছিল না, আমার সমস্যা অন্য জায়গায়। বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে তারা ক্ষমতায় গেলে হেফাজতে ইসলামের এই তেরো দফা বাস্তবায়ন করবে! প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার জরিপ করে বের করেছে নির্বাচনে বিএনপি এগিয়ে। তাহলে কি আমরা ধরে নেব নির্বাচনের পর বিএনপি ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মেয়েরা ঘরের মধ্যে বন্দী হয়ে যাবে? আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েরা পাশাপাশি লেখাপড়া করে, তারা আর পাশাপাশি পড়াশুনা করতে পারবে না। হেফাজতে ইসলামের তেরো দফা মেনে তো আর যাই হোক আধুনিক বাংলাদেশ কল্পনা করা যায় না।
আজকাল দেশের গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকাগুলো জরিপ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করে নিয়ে আসছে। মজার ব্যাপার হলো ষোল কোটি মানুষের দেশে হাজার দেড়েক মানুষের জরিপ নিলেই ষোল কোটি মানুষের মনের কথা বের হয়ে আসছে! তাহলে নির্বাচনের আগে আগে আমরা কিছু জরিপ কেন করে ফেলি না?
এই দেশের ভোটারদের অর্ধেক হচ্ছে মহিলা-আমরা কেন শুধু মহিলাদের মধ্যে একটা জরিপ নিয়ে জেনে নেই না আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা কী ভাবছে? বাংলাদেশটা যখন একটা আধুনিক দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে ঠিক তখন একটা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হেফাজতে ইসলামের তেরো দফা বাস্তবায়ন করার কথা বলে নির্বাচন করবে। এই দেশের মেয়েরা কি সেটা মেনে নেবে? গার্মেন্টসের মেয়েরা মেনে নেবে? মেয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা মেনে নেবে? মায়েরা মেনে নেবে?
২.
আমি যখন এই লেখাটি লিখছি তখন সারাদেশে হরতাল চলছে। নতুন প্রজন্ম আসলে কখনো সত্যিকারের হরতাল দেখেনি!
একাত্তরে অসহযোগ আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে এদেশে কিছু হরতাল হয়েছিল, যারা সেগুলোতে অংশ নিয়েছে শুধু তারাই বলতে পারবে হরতালের ব্যাপারটা কী?
এখন যে হরতাল দেয়া হয় সেগুলো মানুষকে কষ্ট দেয়া ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা ঘরে বসে নিজের কাজ করি (সত্যি বলতে কি এই হরতালের কারণে আমার একটা আস্ত বই লেখা হয়ে গেছে!) কিন্তু গরীব মানুষরা খুব কষ্টে আছে। তারা নিশ্চয়ই এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে ভাবে কেমন করে এই দেশের মানুষ এত মমতাহীন হতে পারে? কেমন করে তারা নিজেরা বাড়তি একটা দিন ছুটি উপভোগ করে তাদের মতো গরীব মানুষকে অভুক্ত থাকার দিকে ঠেলে দেয়।
সত্যি কথা বলতে কি এই দেশের দুঃখী মানুষ সেটাও সহ্য করতে রাজি ছিল, কিন্তু ইদানীং যে ব্যপারটা ঘটছে সেটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
আমরা সবাই দেখছি হরতালে পিকেটিং করার জন্যে গাড়ির ভেতরে মানুষ রেখে গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সমস্ত শরীর পুড়ে এক কিশোর অঙ্গার হয়ে বসে আছে। এর চাইতে ভয়ংকর, হৃদয়বিদারক, নিষ্ঠুর আর কী হতে পারে?
কাজকর্ম করতে গিয়ে, চুলোর কাছে কিংবা মোমবাতির আলোতে যখন হঠাৎ করে আঙুলে আগুনের ছ্যাঁকা লাগে তখন আমরা সেই যন্ত্রণায় ছটফট করি। যখন একজন মানুষের পুরো শরীর আগুনে পুড়ে যায় তখন সেই যন্ত্রণা না জানি কতো ভয়ানক। কত নিষ্ঠুর হলে একজন মানুষ সম্পূর্ণ বিনা কারণে আরেকজন মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে? তাদের মনের ভেতর কি সেটা নিয়ে এতটুকু অপরাধবোধ নেই? ধরে নিতে হবে এটা রাজনীতির ধারা?
হরতাল সফল করার জন্য দেশের কিছু মানুষকে হত্যা করা যেতে পারে? এই দেশের মানুষ হিসেবে আমি কি নিজেকে এই অপরাধবোধ থেকে মুক্ত রাখতে পারি?
এই দেশের মানুষ হিসেবে আমরা অনেক আগেই মেনে নিয়েছি যে এখানে হরতাল হবে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া হবে না, পরীক্ষা হবে না, পরীক্ষা পিছিয়ে যাবে, গরীব মানুষ অভুক্ত থাকবে, রোগাক্রান্ত মানুষ চিকিৎসা পাবে না। কিন্তু হরতাল সফল করার জন্য মানুষকে পুড়িয়ে মারা হবে সেটি আমরা কখনো মেনে নেই নি।
মানুষের অভিশাপ বলে কি সত্যি কিছু আছে? যদি থাকে তাহলে সেই ভয়ংকর অভিশাপ থেকে এই রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা কি নিজেদের রক্ষা করতে পারবে?
পারবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৩
এএ/টিকে/এএসআর/জিসিপি