‘’ভাবতে অবাক লাগে, দেশ কতো এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশে এখন পুরো দুই পরতের
..প্ল্যাস্টিক ট্যাংক তৈরি হচ্ছে’’
---এইমতো একটি বিজ্ঞাপন প্রতিদিনই বেতার–টিভিতে প্রচারিত হইতো।
নতুন যে পরতটি সাম্প্রতিককালে গণতন্ত্রের গায়ে ঠাসিয়া-চাপাইয়া দেওয়া হইতেছে তাহার নাম ‘সন্ত্রাস’। গণতন্ত্র রক্ষার কথা বলিয়া কাহারা যেন সন্ত্রাস নামীয় এই চুতরাপাতা (বিছুটি) জাতির গায়ে ক্রমাগত ডলিয়া চলিয়াছে। আর তখন হইতেই গোটা জাতি ত্রাহি ত্রাহি চিৎকার করিয়া মরিতেছে।
‘তোমার মত এবং মতবাদ লইয়া তুমি থাকিবে, আর আমার মত ও মতবাদ লইয়া আমি থাকিব’--- বাঙালি এতোকাল ইহাকেই গণতন্ত্রের ভাষা বলিয়া জানিয়া আসিয়াছে। কিন্তু এখন সেই দিন ফুরাইয়াছে! এখন ‘আমার মতখানি তোমাকে মানিতেই হইবে, না মানিলে চলিবে না, না মানিলে তোমায় আর আস্ত রাখিব না’—এমন চোখ রাঙানি-অবস্থা জারি হইয়াছে।
আমার কথামতো না চলিলে তোমার আর রক্ষা নাই; বিরোধী দল বিএনপি ও তাহার শরিক জামায়াত ‘তোমাকে প্রতিহত করিব, তোমাকে বোমায়-ককটেলে পোড়াইয়া, পিটাইয়া, কোপাইয়া মারিব’ ধাঁচের ‘গণতন্ত্রের চর্চা’ শুরু করিয়া দিয়াছে। আর এর মধ্য দিয়া তাহারা ‘’প্রতিহত করা’’ নামীয় এক নতুন শব্দও চালু করিয়া রীতিমতো চর্চা করিতেছে। বাঙ্গাল মুলুকে এমনটি পূর্বে ছিলো না; ছিলো পাকিস্তান-আফগানিস্তানে। কোথা হইতে কেমন করিয়া লালনের দেশে লাদেনের প্রেতাত্মার নখদন্ত প্রসারিত হইলো তাহা ভাবিবার মতো বিষয় বটে!
বিএনপি এবং একাত্তুরের খুনী ও ক্ষ্যাপার দল জামায়াত বলিয়াছে, তাহারা নির্বাচন ‘প্রতিহত’ করিবে। সেই হীনচেষ্টার প্রমাণ তাহারা দিয়াছে স্কুলগৃহে আগুন দিয়া, বাচ্চাদের বই পোড়াইয়া, প্রিজাইডিং অফিসার-আনসার সদস্যদের খুন করিয়া, ভোটকেন্দ্রগুলিতে হামলা চালাইয়া, সংখ্যালঘু ভোটারদিগকে ভয় দেখাইয়া, তাহাদের বাড়িঘরে হামলা চালাইয়া।
৫ জানুয়ারির ভোটঅন্তে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৯ জন মানুষের জীবন প্রদীপ নিভিয়াছে। এইসবের মধ্যে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, অস্বাভাবিক আতঙ্ক-উৎকণ্ঠার মধ্যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সম্পন্ন হইয়াছে। এতোটা আতঙ্কের মধ্যে না থাকিলে, বিরোধী দল নির্বাচন ‘প্রতিহত’ করিব বলিয়া রক্তচক্ষু না দেখাইলে, মানুষ নির্ভয়চিত্তে ভোটকেন্দ্রে যাইতে পারিলে ভোটার উপস্থিতি কয়েকগুণ বাড়িয়া যাইতো। এইকথা জোর দিয়া বলা যায়। কিন্তু ‘প্রতিহত’-র উদ্যত খড়্গ দেখিয়া অনেক ভোটারই ভোট দিতে যাইতে পারেন নাই। সামান্য ভোটের জন্য কেইবা চাহে পিতৃদত্ত-মাতৃদত্ত প্রাণখানি বিপন্ন করিতে! বিশেষত, যাহারা সংখ্যালঘু তাহারা তো রীতিমতো আতঙ্কে নরকবাস করিয়াছেন। এবং অদ্যাবধি করিতেছেন এবং করিবেনও।
প্রত্যন্ত এলাকায় তাহারা রীতিমতো নিজদেশে পরবাসীর ন্যায় সহিংস রাজনীতির শিকার হইয়া ইষ্টনাম জপিতে ব্যস্ত। এই বুঝি নির্বাচনবিরোধীরা তাহাদের মারিয়া কাটিয়া শেষ করে, এই বুঝি বাড়ি পোড়াইয়া দেয়, এই বুঝি লাশ ফেলিয়া দেয়। সাতক্ষীরাসহ দেশের নানা প্রত্যন্ত স্থানে তাহার ভয়াবহ নমুনা ও নজির বিএনপি–জামায়াত ঢের দেখাইয়াছে। নিরীহ-নির্বিরোধ ভোটারদিগের তাই ‘ছেড়ে দে মা কেন্দে বাঁচি‘ অবস্থা। এসবের পরও যাহারা কিছুটা সাহসী তাহারা ভোট দিতে গিয়াছে। ভয়টা না থাকিলে যাইতো দলে দলে।
গণতন্ত্র তো সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ও সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছারই প্রতিফলন। কিন্তু বাংলাদেশে ইহার উল্টা নজির। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে তুড়ি মারিয়া, কাঁচাকলা দেখাইয়া জামায়াত-বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাহিয়াছে। কিন্তু তাহার পদত্যাগ যে সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টি করিবে সেই সত্য তাহারা এড়াইয়া গিয়া নিজেদের দাবিতে অনড় থাকিয়াছে আর পুরাণের দৈত্যের মতো ক্রমাগত গোঁৎ গোঁৎ করিয়া, চারিদিকে আগুনের ফুলকি ছড়াইয়াছে।
‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ ইস্যুটাই মূলত সরকারের সহিত বিরোধীদের সমঝোতার পথে প্রধান কন্টক। সমঝোতা কিভাবে হইবে সেই ফরমুলাও তাহারা দেয় নাই। তাছাড়া তাহারা যে জনপ্রিয়তায় সংখ্যালঘু, সেকথাও তাহারা ভুলিয়া বসিয়া আছে। গত নির্বাচনে তাহারা যে যৎসামান্য জনসমর্থন পাইয়া কোনোমতে আয়ুর পক্ষে শ্বাস টানিতেছে, সেইকথা তাহারা বেমালুম ভুলিয়াছে। তাহারা নিজেরা চালুন হইয়াও সুঁইয়ের ছিদ্র খুঁজিয়া মরিযাছে। তাহারা দুনিয়ার বুকে নরকের গ্যাংগ্রিনসদৃশ দুটি উগ্র রাষ্ট্র--পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মতো তালেবানি পন্থার দিকে দেশকে টানিয়া নিতে চাহিতেছে।
তালিবানগণ স্কুল জ্বালাইয়া সুখ পায়, আর জামায়াত-বিএনপিও স্কুল জ্বালাইয়া, শিশুদের বই পোড়াইয়া, মানুষের গায়ে পেট্রোল ঢালিয়া আগুন ধরাইয়া দিয়া বিকৃত আনন্দ লাভ করে।
শনিবার রাজধানীর লেইকশোর হোটেলে ‘সহিংস রাজনীতি, সঙ্কটে দেশ: ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন বিএনপি-জামায়াতের অযৌক্তিক দাবির সমালোচনা করিয়া বলিয়াছেন, “৩০ সদস্যের মালিক যদি ২৩০ সদস্যের মালিককে বলে যে, আপনাকে চলে যেতে হবে এবং তিনি যদি চলে যান, তাহলে এদেশে কোনদিন গণতন্ত্র আসবে?”
বিরোধী দলের দাবির অসারতা তুলিয়া ধরিয়া তিনি আরও বলিলেন, “সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, চারটি শর্ত। তিনি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা না হন, তিনি যদি সংসদের আস্থা হারান, তিনি যদি বাজেট পাস করতে না পারেন এবং তিনি যদি নৈতিক স্থলনে দায়ী হন- এই চারটি কারণ ছাড়া কোনো প্রধানমন্ত্রী সংসদের মেয়াদকালে পদত্যাগ করতে পারেন না। ’’
কিন্তু বিরোধী দল যুক্তিতে নহে, সন্ত্রাসেই মুক্তি খুঁজিয়াছে। আর তাহাদের সাহিত ‘গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মতো’’ আসিয়া জুটিয়াছে একদল সুশীল। তাহারা অকস্মাৎ জলতল হইতে মাথা তুলিয়া বলিয়া উঠিলেন, ‘এই নির্বাচন স্থগিত করিতে হইবে। ’ ইহারা একা নহেন, সঙ্গে জুটিয়াছে উন্নয়ন সহযোগী নামের আন্তর্জাতিক মোড়লেরাও। সুশীল সমাজের এই অংশটি গত ২৮ ডিসেম্বর একইস্থানে অনুরূপ এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন স্থগিত করার দাবি লইয়া হাজির।
এই সুশীলেরা আসলে কাহারা? একটি পত্রিকা লিখিয়াছে: ‘‘সেখানে অংশ নেয়া উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন এনজিওকর্মী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং এক এগারোর সময় আলোচিত আইনজীবী ও ব্যবসায়ীরা। ’’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নাগরিক সমাজের এই নেতৃবৃন্দকে এক-এগারোর কুশীলব বলিয়া একহাত নিয়াছেন। সৈয়দ আশরাফ না বলিলেও তাহারা যে কাহারা, তাহা বুঝিতে উচ্চতর পদার্থবিজ্ঞান শিখিবার প্রয়োজন নাই।
নাগরিক সমাজের এই নেতাদিগের সমালোচনা করিয়া জনপ্রিয় লেখক-অধ্যাপক জাফর ইকবাল সঠিক কথাটিই বলিয়া দিয়াছেন: “এখন বিদেশি দাতারা এনজিওগুলোকে সাহায্য করে। সেই এনজিওরা বসে একটা মিটিং করে বলেছে যে, নির্বাচন করা যাবে না। ওরা কিন্তু সাথে সাথে এটা বলে নাই যে, সহিংসতা আগে বন্ধ করো তারপর তোমার সাথে কথা বলবো। ’’
হক কথাই বলিয়াছেন জাফর ইকবাল। এই যে এতো রক্তপাত করিতেছে বিএনপি-জামায়াত, এই যে এতো অসংখ্য নিরীহ সাধারণ মানুষকে পোড়াইয়া, কোপাইয়া, জবাই করিয়া,পিটাইয়া মারিতেছে তাহারা, সেই ব্যাপারে সুশীল সমাজের এই অংশটি বরাবরই ‘স্পিকটি নট’। তাহারা একটিবারও বলে নাই যে, সন্ত্রাস বন্ধ করো। মানুষ পোড়াইও না। মানুষকে তার নিজের মতো চলিতে দাও।
কেন তাহারা এই ব্যাপারে কিছু বলিতেছে না? তাহারা কি বাক-প্রতিবন্ধী? নাকি বিবেকপ্রতিবন্ধী? তাহারা কিসের সুশীল, কেনই বা সুশীল? আমরা আম জনতা তাহা হইলে কি কুশীল? কি আমাদিগের অপরাধ?
‘ভাসুরের নাম মুখে আনিতে নাই’ –এমত আপ্তবাক্যটি তাহারা অন্যদিগের চাইতে ঢের বেশি জানে। তাই বলিয়াই কি তাহারা বিএনপি-জামায়াতের নামটি একটিবারও মুখে আনে নাই?
সম্ভবত কারণ ইহাই। জাফর ইকবালও তাই হাটে হাঁড়ি ভাঙ্গিয়াছেন: “একটা পত্রিকায় আর্টিকেল বের হয় ইংরেজিতে, পরের দিন সেটা বাংলা করে ছাপানো হয়। লেখা আছে, নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। কেন লেখা নাই সহিংসতা বন্ধ করতে হবে?”
আসলে সুশীল নামীয় উচ্চমার্গীয় তত্ত্বজীবীগণ যে তলে-তলে কি চাহেন তাহা আর আম পাবলিকের বুঝিতে বাকি নাই: ‘‘যখন নাকি আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা বলেন নির্বাচন বন্ধ করতে হবে, তার কারণ জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন করার সুযোগ দিতে হবে। ”
সুশীল সমাজের এই অংশটি বিএনপি-জামায়াত ও উগ্রবাদী শক্তির ব্যাপারে সদা নীরব আর অসীম সহানুভূতিশীল। তাই পেট্রোলবোমা-ককটেল হামলা, রেললাইন উল্টাইয়া-উপড়াইয়া ফেলিবার ভয়াবহ দৃশ্য, শিশুদের স্কুলগৃহ জ্বালাইয়া দিবার নারকীয় দৃশ্য তাহাদের চক্ষে মালুম হয় না। এই ব্যাপারে তাহারা কেবল ‘‘দেখি ব্যাটা আর কি করে’’ নীতিতে চুপ থাকিতে চাহেন।
অনুমান করি, এজাতীয় দৃশ্য তাহারা আরও দেখিতে চাহেন। মনে হইতেছে তাহারা ‘‘রোম যখন পুড়িতেছে নিরো তখন বাঁশি বাজাইতেছে’’—এমত ভূমিকায় অবতীর্ণ হইতে চাহেন। তা না হইলে সুশীলগণ কেনইবা কেবল ‘সংলাপ সংলাপ’ করিয়া নরক গুলজার করিলেন?
যাহারা জাহান্নামের শত দুয়ার খুলিয়া দিয়া গোটা জাতিকে ঝলসাইয়া দিতে উদ্যত, যাহারা নিরীহ মানুষ, নিরীহ পথচারী-বাসযাত্রী নারী-শিশু-বৃদ্ধদের হত্যা করিয়া উন্মাদনৃত্তে মত্ত, তাহাদিগের সহিত কিসের সংলাপ, কেনই বা সংলাপ?
সুশীলেরা একটিবারও কেন বলিতেছে না বা বলিবার প্রয়োজন বোধ করিতেছে না: ‘আর নহে জ্বালাও–পোড়াও। এইবার সংযত হও। যথেষ্ট হইয়াছে আর নহে!’ কিন্তু তাহারা তাহা বলিবে কোন দু:খে! তাহাদের যে অন্য হিসাব, অন্যরকম লাভালাভের অদৃশ্য হাতছানি!
আর সংলাপ? কাহার সহিত সংলাপ? পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ যথার্থ বলিয়াছেন: “সবাই যে সংলাপের কথা বলছেন, সে সংলাপটা কার সঙ্গে হবে? যারা সন্ত্রাস করছে তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না। তবে কয়েকটি শর্ত মানলে সংলাপ হতে পারে। এগুলো হলো- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ঐকমত্যে আসতে হবে, জাতীয় মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে, সন্ত্রাস দমন করতে হবে ও রাজনীতি হতে হবে জনকল্যাণমূলক। ”
কিন্তু আমাদের সুশীলেরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে সদা মৌনব্রত পালনে বিশ্বাসী। কখন যে তাহারা ‘রজ্জুকে সর্প আর সর্পকে রজ্জু’ বলিয়া চালাইয়া দেয় তাহার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। জামায়াতের অপকর্মের ব্যাপারে তাহাদের অনন্ত-অসীম মৌনতা দেখিয়া মনে এমত ধারণা হয় যে, এতদ্দেশীয় সকল সুশীলকে নির্ঘাৎ ‘বোবায় ধরিয়াছে’।
জামায়াত-বিএনপির ভয়াবহ নৈরাজ্যের কারণে শুধু কি প্রাণহানি? একই সঙ্গে জ্বলিয়া পুড়িয়া ছাড়খার দেশের হাজার কোটি টাকার সম্পদও। “আনুমানিক হিসাবে গত একমাসে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি’’ হইয়াছে। এই ব্যাপারেও সুশীলগণ প্রস্তরমূর্তির ন্যায় মৌন। অথচ অন্য সময় তাহাদের মুখে কেবল কথার খই ফোটে; প্রবাদের তোতাপাখিটির মতো তাহারা কেবল ‘নির্বাচন স্থগিত করো, স্থগিত করো’ বলিয়া চলিয়াছেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাহাদের আছে, যাহারা গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলে, কেবল তাহাদের সঙ্গেই সংলাপ-সমঝোতা হইতে পারে। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি, ’৭১-এর মানুষ হত্যাকারী ও মা-বোনদের ইজ্জতহানির সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে সংলাপ মানে পরাজিতের সংলাপ। ’—এই ব্যাপারটি আমাদের সুশীলদের কে বোঝাইবে! সবকিছু বুঝিয়াও যে কিছুই বোঝে না, তাহাকে বোঝায় কাহার পিতার সাধ্য!
আমাদের সুশীলগণের আচরণ দেখিলে বলিতে হয়, ‘আগুনে জল নহে, কেরোসিন ঢালাতেই’ তাহাদের আনন্দ। আমরা এমত সুশীল চাই না। সুশীলগণ কি দর্পণে আপনাদিগের চেহারা দেখিতে পান? আয়নার দৃষ্টিপাত করিযা কর্ণ সজাগ করিলে তাহারা নির্ঘাৎ শুনিতে পাইতেন আয়নার ভিতর হইতে তাহাদের নিজেদেরই চেহারা যেন তাহাদের ‘‘এত তু ব্রুত!---ব্রুটাস তুমিও’’—উক্তির মতো বলিয়া উঠিতো: সুশীল তুমিও! এইসব কি করিয়া পারো!
বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৩