আজ সাব্বিরের জন্মদিন। আর সকাল থেকেই বাসায় কারেন্ট নেই।
সাব্বির অন্ধকারে ক্ষেপে উঠতে গিয়েও হেসে ফেলল।
জন্মদিনে আমরা কেকের উপর মোম সাজাই এটাই নিয়ম— যত জন্মদিন ততটা মোম। মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছুদিন আগে আমার মা’র জন্মদিন ছিল, তেইশে মার্চ (মজার ব্যাপার হচ্ছে বাবার জন্মদিন ২১ ফেব্রুয়ারি, মার ২৩ মার্চ বাবার জন্মদিনটা গুরুত্বপূর্ণ দিন, মারটাও তাই ছিল পাকিস্তান আমলে ২৩ মার্চ গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিল, এখন আর নেই)। মা’র পঁচাশিতম জন্মদিন। গুনে গুনে কেকের উপর পচাশিটা মোম জ্বালানো হল । পঁচাশিটা মোম এক সঙ্গে জ্বালানো কি চাট্টিখানি কথা?
একটা জ্বলেতো আরেকটা নিভে যায়। বহু কষ্টে যখন সত্যি সত্যি এক সঙ্গে পঁচাশিটা মোম জ্বলতে শুরু করল তখন আমরা সব ভাইবোন আবিষ্কার করলাম পচাশিটা মোমের তাপে কেক গলে পানি! শেষ মেষ জলবৎ তরলং কেক দিয়ে মা’র জন্মদিন পালন করতে হল আমাদের।
হঠাৎ জন্মদিন নিয়ে কেন পড়লাম? আসলে সেদিন এক তরুণের সঙ্গে পরিচয় হলো— তার হবি হচ্ছে সবার জন্মদিনে ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে উইশ করা। এর জন্য তার একটা আলাদা ফোন সেটই আছে, সেখানে প্রতেক্যের নাম্বারের সঙ্গে জন্মদিন সেভ করা। সুন্দর সুন্দর জন্মদিনের শুভেচ্ছা বাণীও সেভ করা আছে। আমি বললাম—
-বাহ দারুন আইডিয়া! এতো জন্মদিন তোমার মনে থাকে?
-জি স্যার থাকে। প্রায় প্রতিদিনই কারো না কারো জন্মদিন থাকে আমি উইশ করি।
-চমৎকার। তা তোমার জন্মদিনটা কবে?
তরুণ এবার বিষন্ন হাসি হাসে। তারপর মৃদু হেসে বলে ‘ স্যার আমি এতিমখানায় মানুষ হয়েছি। আমার জন্মের আসল তারিখ জানি না। কেউ জানায়নি। ’
শুনে আমারও মনটা খারাপ হল। সত্যি কত বিচিত্র মানুষের জীবন।
তবে জন্মদিনের একটা কোটেশন ভয়াবহ লাগলো। সেটা এরকম ‘ জন্মদিন তোমার বছরে মাত্র একদিন, কিন্তু মৃত্যুদিন তোমার প্রতিদিন... কারণ তুমি জানো না কবে তোমার মৃত্যুদিন’।
সব শেষে জন্মদিন নিয়ে একটা কৌতুক পরিবেশন করা যাক।
ছোট মেয়ে বাবাকে প্রশ্ন করলো,
-বাবা আমার জন্মের সময় ডাক্তাররা কীভাবে জানল যে আমি মেয়ে?
-তোমার গায়ে তখন কোন কাপড় ছিল না যে।
-ও তাহলে ছেলেদের জন্মের সময় কাপড় পড়া থাকে! ছোট্ট মেয়ের গুরুগম্ভীর মন্তব্য!
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৪