ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

এক পোঁচে কেটে দিচ্ছেন বাজেট? ।। হাসান মামুন

হাসান মামুন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪
এক পোঁচে কেটে দিচ্ছেন বাজেট? ।। হাসান মামুন

জাতীয় সংসদে যে বিরোধী দল রয়েছে, বাজেট পেশের সময় এবার তারা সংসদে ছিলেন। এদের অবশ্য ‘বিরোধী দল’ বলতে চান না অনেকে।

কারণ তারা সরকারেও রয়েছেন।

সরকারের অংশ বলেই বোধহয় জাতীয় পার্টি নেতারা মন খুলে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বলতে পারছেন না। তাদের মধ্যে মতবিরোধও প্রকাশ পেয়েছে এর মধ্যে। এইচ এম এরশাদ বাজেটকে বলেছেন ‘স্বপ্নবিলাসী’।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে সংসদে জাতীয় পার্টিকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এরশাদ। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সেনাশাসক এরশাদের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এ কারণেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে জনগণের চোখে বিরোধী দল বলে বিবেচিত বিএনপির বাজেট প্রতিক্রিয়া আরও অদ্ভূত। তারা বলে দিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে এবার আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হবে না। কারণ সরকার ‘অবৈধ’, এদের দেয়া বাজেটও ‘অবৈধ’। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর নাকি কোনো মানে হয় না।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা অবশ্য বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে চলেছেন। না বলেও থাকতে পারছেন না। তাতে বোঝা হয়ে যাচ্ছে, আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানালে কী বলতো দলটি।

মনে আছে, শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের একটি বাজেট পেশের আগে তারা বেশ খেটেখুটে একটি ‘ছায়া বাজেট’ দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া এটি উপস্থাপন করেন সংবাদ সম্মেলন করে।

এছাড়া প্রতি বাজেট পেশের পরই দলের গুলশান কার্যালয়ে নির্বাচিত ব্যক্তিরা এর ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতেন আনুষ্ঠানিকভাবে। সংসদের বাজেট অধিবেশন অবশ্য তারা বর্জন করতেন অনেকটা নিয়ম করে। বিরোধী দলে থাকাকালে আওয়ামী লীগও এ ধারা বজায় রেখে চলেছে। পরস্পরের প্রতিযোগী যে!

‘নো ট্যাক্সেশন ইউদাউট রিপ্রেজেন্টেশন’ (জনপ্রতিনিধিত্ব ছাড়া করারোপ নয়) বলে একটা কথা অবশ্য চালু রয়েছে। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাজেট দেয়ার সময়ও এটা বলেছিলেন কেউ কেউ। তাতে লাভ হয়নি। বাজেট দেয়া হয়েছে। তা কার্যকরও হয়েছে।

কেউ বলতে পারেননি, নির্দিষ্ট সময়ের পরও জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা সরকারকে কর-শুল্ক বা ভ্যাট দেব না। আয়কর আদায়ে তখন বরং অর্জিত হয়েছিল রেকর্ড। ভয়ে লোকে রেকর্ড পরিমাণ টাকা সাদা করেছিলেন ওই সময়ে।

ট্রুথ কমিশন ধরনের একটি কাণ্ডও হয়েছিল তখন। অনেক অসাধু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে নিজেদের দুর্নীতির কথা স্বীকার করে জরিমানা দিয়েছিলেন। তারা আবার ঝামেলায় পড়েন নির্বাচিত সরকার এলে।

বিএনপি নেতারা ওইসব ভুলে গেছেন বলে মনে হয় না। তারা কি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি ওই সময়ে? কর দেননি? তাদের মধ্যে যারা ব্যবসায়ী, তারা কি ওই আমলে ব্যবসাপাতি বন্ধ রেখেছিলেন ‘অবৈধ সরকার’কে ভ্যাট দেবেন না বলে?

সরকার ও বাজেটকে অবৈধ বলছে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী বিএনপির অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান উর্দি পরে বাজেট দিয়েছিলেন।

সে বাজেটও কার্যকর হয়েছে। তবে খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপি কখনো উর্দি পরে বাজেট দেয়নি, এটা মানতে হবে। নির্বাচিত সরকার হিসেবেই তারা বাজেট দিয়েছেন সংসদে।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন বৈধ ছিল কিনা, বর্তমান সরকার গঠন ঠিক আছে কিনা, সে বিষয়ে একটি রিটের শুনানি অবশ্য চলছে হাইকোর্টে। তার নিষ্পত্তি কবে নাগাদ হবে, হলে সেটি নিয়ে আবার আপিল হবে কিনা, এসব প্রশ্নও রয়েছে।

এর আগ পর্যন্তও কি সরকারকে বৈধ বলে মানতে আপত্তি আছে বিএনপির? বৈধ সরকারও রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হতে পারে। সেটাও একটি সরকারের জন্য কম অগৌরবের নয়।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়েও একই কথা প্রযোজ্য। ‘বৈধভাবে অনুষ্ঠিত’ হলেও এটি নিয়ে কেউ গর্ব করতে পারছেন না।

পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলো কিন্তু এভাবেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝতে চাইছে। বিএনপির সঙ্গে তাদের বক্তব্য পুরোপুরি মিলছে না। মিলছে না বলেই তারা এ ‘অবৈধ’ সরকারের সঙ্গে কাজ করতেও দ্বিধা করছে না।

কোনো কোনো দেশের সরকারে অস্বস্তি রয়েছে হয়তো; কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না।

এ নিবন্ধ লেখার সময় প্রধানমন্ত্রী গণচীন সফরে রয়েছেন। ‘বিএনপির পুরনো বন্ধু’ বলে বিবেচিত এ দেশে তাকে কি কম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে? এর আগে তার জাপান সফরও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।

এসব দেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কিন্তু বলছেন, বিদেশীদের সমর্থন পেলেও দেশের মানুষের সমর্থন এ সরকার পাবে না।

বিদেশীদের মধ্যে বিশেষত ভারতের সমর্থনে এ সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ক্ষমতায় টাইট হয়ে বসতে পেরেছে বলে মনে করে বিএনপি। এমন মনোভাব তারা বার কয়েক প্রকাশও করেছেন।

এজন্য ভারতে বিজেপির মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে বিএনপি নেতারা উচ্ছ্বসিত হন। প্রধানমন্ত্রীর আগে তাকে অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া।

এটা তাদের মানুষের চোখে খাটো করল কিনা, তাও ভেবে দেখার ফুরসৎ পাননি। কিন্তু মোদি সরকার কি হাসিনা সরকারের সঙ্গে কাজ করবে না? নরেন্দ্র মোদি কি বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন না তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে?

অনেকে কিন্তু মনে করেন, কেন্দ্রে মোদির নেতৃত্বে শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা কোনো কোনো ইস্যুর নিষ্পত্তি হয়তো এখন দ্রুততর হবে।

গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি কিন্তু অকংগ্রেসী সরকারের আমলেই হয়েছিল। তখনও বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার।

অগ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় ফিরে এলেও, খুব দুর্বল ম্যান্ডেট নিয়ে আর একটু অস্বস্তির সঙ্গে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারই দেশ চালাচ্ছে এখন। আর বাজেট দেয়ার সময় হয়েছে বলে তারা যথারীতি একটি বাজেট বানিয়ে সংসদে তা পেশ করেছেন।

এটি নিয়ে এখন আলোচনা চলছে বিভিন্ন ফোরামে। মিডিয়ায় কম কভারেজ পাচ্ছে না বাজেট। টক শো আর সংবাদপত্রে কম আলোচনা করছেন না বোদ্ধারা। বণিক সমিতিগুলোও আগেকার মতো তাদের মতামত তুলে ধরছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির অর্থনীতিবিদরা রাত জেগে প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে সকালে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আগের মতোই।

এর মধ্যে বিএনপি শুধু বলছে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলবেন না!

বিএনপি দলগতভাবে কিছু না বললে কি বাজেট পাস হবে না চলতি মাসের শেষে? তার আগে এতে কিছু সংশোধনী আনা হবে না? সরকার নিজ উপলব্ধি থেকেও সংশোধনী আনবে বাজেটে। তাতে সংশ্লিষ্টরা হয়তো উপকৃতই হবেন।

‘অবৈধ সরকারের’ দেয়া বাজেটে যারা উপকৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মী আর সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীও আছেন। দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বহু মানুষ নানা পেশা ও ব্যবসায় নিয়োজিত। তারা কিন্তু খুঁটিয়ে দেখছেন, বাজেটে কী লাভ-ক্ষতি হলো।

উর্দি পরে রাষ্ট্রপতি জিয়া যে বাজেট দিয়েছিলেন, তার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমান যে অর্থনৈতিক নীতি নিয়েছিলেন, সেটাও কেউ বাতিল করে দিতে পারেননি। বরং বলতে হয়, ব্যক্তি খাতকে অর্থনীতির চালিকাশক্তি করে তুলতে একটা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তারা।

সে ধারা ক্রমে বেগবান হয়েছে। কিছুটা অধনবাদী বা মিশ্র অর্থনীতির অনুসারী আওয়ামী লীগও পরে এসে যোগ দিয়েছে এতে। বাজার অর্থনীতি অনুসরণে তারা আর বিএনপির চেয়ে পিছিয়ে নেই এখন।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় তাদের তফাৎ রয়েছে অবশ্য। সেটা থাকবেই। বাজেটে এটা প্রতিফলিতও হচ্ছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় তাদের কে কতটা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন, সেটাও সচেতন মানুষের দৃষ্টি এড়াচ্ছে না।

বিএনপির দৃষ্টিতে ‘অবৈধ’ সরকারের অর্থমন্ত্রী মুহিত সম্প্রতি যে বাজেট দিয়েছেন, তাতে কি বিগত সময়ে দেয়া বাজেটের ধারাবাহিকতা নেই? ‘উচ্চাভিলাষ’ বজায় রেখেই তিনি বাজেট দিয়ে চলেছেন। যে কারণে নিজেদের শাসনামলেই বাজেটের সাইজ হয়ে পড়েছে দ্বিগুণ বড়।

আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, এ বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে না। কৃতী অর্থনীতিবিদদের অনেকেও বলছেন এটা। তবে তারা ব্যাখ্যা করে বলছেন, কেন বাজেটের লক্ষ্যগুলো অর্জন সম্ভব নয়।

বিএনপি নেতারা ব্যাখ্যা করে বলছেন না। সেটি কি নেত্রী অখুশি হবেন বলে? তার দেয়া শর্ত ভাঙা হয়ে যাবে, তাই?

বিএনপি নেতা, তার আমলের বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাজেট পেশের দিন একটি মেগা টকশোয় এসে আগাম বললেন, অর্থনীতিবিদরা যেসব টেকনিক্যাল বিষয় আলোচনা করছেন— সেগুলো প্রান্তিক। আসল কথা হলো, দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়ে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে কিনা। নইলে বিনিয়োগকারীদের মনে আস্থা জাগবে না; বিনিয়োগ বাড়বে না ব্যক্তি খাতে।

ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কমছে অনেক দিন ধরেই। এটা ঘটছে বর্তমান সরকার যখন বিএনপির চোখে বৈধ ছিল, তখনকার শেষ বছর থেকে। রাষ্ট্রক্ষমতার বৈধতার সঙ্গে বিনিয়োগ কিন্তু সব সময় সরাসরিভাবে সম্পর্কিত নয়। অন্যান্য দেশেও এটা দেখা গেছে।

উন্নয়নের কিছু অদ্ভূত অভিজ্ঞতাও রয়েছে এশিয়ার কিছু দেশে।
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়ে বিএনপি জোট ক্ষমতায় এসে গেলেই বিনিয়োগ বেড়ে যাবে, এ নিশ্চয়তা কি তারা দিতে পারেন?
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কি তারা রাতারাতি চার লেন করে ফেলতে পারবেন? উপযুক্ত জমি দিতে পারবেন বিনিয়োগকারীদের?

বিদ্যুৎ সরবরাহে না হয় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে বর্তমান শাসনামলে। এটা তারা হাতে পাবেন। কিন্তু গ্যাস? চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ করবেন তারা কোত্থেকে?

এটা ঠিক, বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের। গ্যাস প্রাপ্তির অনিশ্চয়তাও তাদের দুশ্চিন্তায় রেখেছে। এ অবস্থায় মধ্যমেয়াদি বিনিয়োগে যেতেও তিনবার ভাবছেন তারা।

এদিকে সরকার কিন্তু মনে করছে, বিএনপি ও জামায়াত তাদের কিছুই করতে পারবে না অন্তত মেয়াদের প্রথম বছরে। এ আত্মবিশ্বাস থেকেও একটি দারুণ উচ্চাভিলাষী বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রায় সব কিছু বাড়িয়ে ধরেছেন তিনি। কর-রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা, বিদেশী সহায়তা, ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রভৃতি সবই উচ্চাভিলাষী। এটাই নাকি তার ‘সরকারের চরিত্র’।

প্রতিযোগী শাসক দল হিসেবে বিএনপির কিন্তু খেয়াল করা উচিত, এ বাজেটে একটা মোড় পরিবর্তনের ঘটনা ঘটছে। কর-রাজস্ব আহরণে এক নম্বরে চলে এসেছে আয়কর।

বিএনপি শাসনামলে সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্যাট এসেছিল এক নম্বরে। তিনিও আয়কর বাড়ানোর ওপর জোর দিতেন। পরিষ্কারভাবে বুঝতেন, বাণিজ্য উদারীকরণের জমানায় শুল্কনির্ভরতা ছাড়তে হবে। ভ্যাট ছাড়িয়েও যেতে হবে আয়করে।
বিএনপিকে তো বাজেটের এ পরিস্থিতিটা মূল্যায়ন করতে হবে। ‘অবৈধ সরকার’, ‘অবৈধ বাজেট’ বলে শুধু কৌশলের রাজনীতি করলে চলবে না।

এ বাজেটে অর্থমন্ত্রী নতুন কিছু কর প্রস্তাব করেছেন বা উদ্যোগ নিয়েছেন, যেগুলো সৃষ্টি করেছে সচেতন মহলের আগ্রহ। যেমন, সুপার ট্যাক্স ও সম্পদের ওপর সারচার্জ, গ্রিন ট্যাক্স, কর-শুল্ক যৌক্তিকীকরণে ব্যাপকভাবে সম্পূরক শুল্ক ছাড়, ব্যাংক হিসাবে বাড়ি ভাড়া নেয়া, কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো প্রভৃতি।

দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থনধন্য দল হিসেবে বিএনপিকে এসব নিয়ে মুখ খুলতে হবে বৈকি।

সরকার যেভাবে এডিপির সাইজ বাড়িয়ে চলেছে এবং এর মানহীন বাস্তবায়নে কষ্টার্জিত সম্পদের যে অপচয় চলছে, সে বিষয়েও কেন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে না দলটি?

তারা যে মুহিত ও তার সরকারের ‘উচ্চাভিলাষের’ তীব্র সমালোচনা করছেন অনানুষ্ঠানিকভাবে, রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পেলে কি বাজেটের সাইজ ছোট করে বিপরীতধর্মী কিছু করবেন? কোন যুক্তিতে? তাতেই বা কার কী কল্যাণ নিহিত?

এসব প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়াটা অবশ্য সহজ হয় আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললে। জনগণের জন্য যে বাজেট জ্বলন্ত বাস্তব, বিএনপির পক্ষে তা এক পোঁচে কেটে দেয়াটাই হয়তো ভালো মনে হচ্ছে।



হাসান মামুন : সাংবাদিক, কলামিস্ট




বাংলাদেশ সময় ১০৪৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।