ঢাকা: নিষ্পাপ শিশুর লাশের মিছিলের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল যে গণহত্যা দিন-রাত্রি প্রবাহমান রেখেছে তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে সেই কবেই। তবুও এ নিয়ে বিন্দুমাত্র চিড় ধরেনি মানুষের মনে।
আসলে বর্তমানে মানুষ সানি লিওনের নৃত্য দেখে আন্দোলিত হয়, কিন্তু গাজায় গণহত্যায় মানুষ ততটা ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ হয় না। আর তাই তো গাজা গণহত্যা এখন শুধুই রূঢ় বাস্তবতা।
বিগত ১৯/২০ দিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজায়, গাজার পূর্বাঞ্চল শেজায়ারে আড়াই শতাধিক শিশুকে হত্যা করেছে বর্বর ইহুদি ইসরাইল। ক্রমান্বয়ে অবুঝ শিশুর রক্ত ঝরিয়ে, তাদের লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে বিন্দুমাত্র বাধছে না ইসরায়েলি বাহিনীর! এমনকি তাদের পিষে মারতেও তাদের মানবতায় লাগে না, লাগবেও না!
আর কত রক্ত ঝরলে শান্ত হবে ইসরায়েলি বাহিনী! আর কত শিশুর মৃত্যুতে মিটবে তাদের মৃত্যু ক্ষুধা! বন্ধ হবে যুদ্ধের দামামা। এখন এটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন।
যে শিশুর জন্ম হয়েছিল বাঁচার জন্য, সে শিশুর জন্ম প্রকৃত পক্ষে জন্মই ছিল না, যদি সে শিশু হয়ে থাকে ফিলিস্তিনের। কোনো পশুরও এমন মৃত্যু হয় না, যে মৃত্যু প্রতিটি মুহূর্তেই ন্যায্যতা পাচ্ছে ফিলিস্তিনে।
বিশেষ করে শিশু ও নারীরাই প্রধান আক্রমণের বিষয়বস্তু এ গণহত্যায়। আর তাই তো বিগত ১৯/২০ দিনের গণহত্যায় মোট মৃতের সংখ্যার অধিকাংশই শিশু ও নারী।
এখন পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ১১’শর গণ্ডি পেরিয়েছে! তবুও হয়তো এখনও তা মানবতার গণ্ডি পেরোয়নি!
শুধু মৃত্যু নয়, বর্তমান ইতিহাসের নির্মমতম এ গণহত্যায় উদ্বাস্ত হয়েছে প্রায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। এখন তারা শুধুই শরণার্থী।
প্রকট খাদ্য ও পানীয় জলের সংকটে আশ্রয় শিবিরে ধুঁকে ধুঁকে আরেকটি মৃত্যুর ধারাকে আলিঙ্গন করছে শরণার্থী শিবিরের লাখো মানুষ।
এদিকে ঈদের বাকি আর দুই দিন। খুশির ঈদেও মৃত্যুকে বুকে জড়িয়ে নিতে হবে। এমনই প্রস্তুতি ফিলিস্তিনে! ঈদেও প্রাণ যাবে শিশুর। হয় তো ঈদের সকালে নামাজের বদলে ছেলের লাশ বহনই না নিয়তি হয়ে যায় ফিলিস্তিনি কোনো বাবার!
জন্মের পরেই মৃত্যুর বিভীষিকায় শিশুর কান্নায় ফেটে পড়ার পরও কি বিশ্ব বিবেক ঘুমিয়ে থাকবে! এখন এ প্রশ্নই ঘুরপাক ঘাচ্ছে সারা পৃথিবীর প্রতিটি সচেতন মানুষের মনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৪