আমি লজ্জিত। গণমাধ্যমে আমার সহকমীদের চোখে ঘৃণা।
সম্প্রচার নীতিমালা নিয়ে তিনি কিছুদিন আগে থেকেই কথা বলে আসছিলেন। সর্বশেষ শনিবার সিলেটে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি উচ্চারণ অযোগ্য যে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেছেন, তাতে মন্ত্রিসভার অন্য সভ্যদেরও লজ্জিত হবার কথা।
যদিও সত্য কথা বা সমালোচনা করার দায়ে সাংবাদিকরা রাজনীতিকদের ‘ভাল বই’ তে নেই। তবুও রাজনীতিবিদরা সাংবাদিক বিদ্বেষের মাপকাঠির এতোটা তলানীতে নেমে আসেননি বলেই আমার বিশ্বাস। তিনি শনিবারের আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের চারিত্রিক সনদ দিতে চেয়েছেন। কিন্তু তাতে যে তার নিজের চারিত্রিক সনদটিযে জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়ে গেছে, সেটা তিনি টের পাননি।
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন-তাকে প্রধানমন্ত্রী চালিয়ে যেতে বলেছেন। সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে লেখুক তাতে কিছু যায় আসেনা। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে তাকে কি বলেছেন, তা জানতে চাইনা আমরা। দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী তাকে এই নির্দেশনা দেবেন, তাও আমরা বিশ্বাসও করতে চাইনা। তথ্যমন্ত্রী ১৪ দলের নেতা বলে সাংবাদিক শায়েস্তা করতে মৌলভীবাজার থেকে তাকে ভাড়া করতে হবে, এমন ধারনাও গ্রহণযোগ্য নয়। এখনো আওয়ামীলীগ বা মহাজোটে এমন অনেক নেতা আছেন যারা সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকার ও দলের সম্পর্ক উন্নয়নে যথেষ্ট। তিনি সাংবাদিকদের খবিশ, চরিত্রহীন বলেছেন। দাবি করেছেন স্বাধীন কমিশন হলে দেখা নেয়ার। মন্ত্রী সভার বৈঠকে উপস্থিত থাকলে কি করতেন তার অভিব্যক্তি জানিয়েছেন ছাপার অযোগ্য ভাষাতে।
এরপর সামাজিক সাইটে ও গণমাধ্যমে সংবাদকর্মী এবং সাধারন পাঠক, দর্শকদের যে নিন্দা, ক্ষোভের ঝড় দেখা গেছে, সেখানে সাংবাদিক নেতা বলে পরিচিতদের দেখা যায়নি। মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের তাদের সহকর্মীর এই আস্ফালনে বিব্রতবোধ করতে শুনিনি। স্মরনে আসছে যেদিন সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হলো, সেদিন একটি চ্যানেলের টকশোতে তথ্যমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের নিয়ে ঐ মন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন-ঐ বক্তব্য সরকারের নয়। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত।
একজন মন্ত্রীর কোন বক্তব্য কতোক্ষণ ব্যক্তিগত গণ্ডিতে থাকে। আর কোন পর্যায়ে গেলে তা ব্যক্তিগত গণ্ডি পেরিয়ে সরকারের উঠোনেও প্রবেশ করে, এবিষয়ে আমাদের এখন ধারনা পেতে হবে।
সেজন্য সম্প্রচার কমিশনের জন্য কি অপেক্ষায় থাকতে হবে? দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই এর উত্তর জানাবে। তবে আমার এ পর্যায়ে মন্ত্রীর কণ্যার কথা মনে পড়ছে। মন্ত্রী দাবি করেছেন-এক মাত্র তার মেয়ে জার্নালিজমে এমএ করে সাংবাদিক। বাকিরা কলেজে ঘোরাঘুরি করে সাংবাদিক। যে দলে আমিও পড়ি।
মন্ত্রীর কন্যার কাছে জানতে চাই, আমি কি তার সহকর্মী হতে পারবো, বাবা স্বীকৃতি দেননি, মেয়েকি দেবে?
বাংলাদেশ সময় ১৩১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৪
** সাংবাদিকদের অশ্রাব্য গালি সমাজকল্যাণমন্ত্রীর