নিষ্ঠুর সময় দ্রুত চলে যায়। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যখন এই লেখাটি যাদের উদ্দেশ্যে লিখছি তারা দুজন এই জাগতিক জীবন থেকে অনেক দূরে।
গত ১৩ আগস্ট, বুধবার নিউইয়র্ক ফিল্ম সেন্টার জ্যাকসন হাইটস এর ইস্ট ওয়েস্ট টিউটরিয়েলে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত মিশুক মুনীর এবং তারেক মাসুদের তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্বরণ সভার আয়োজন করে। আলোচকবৃন্দরা কেউ ছিলেন তাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু, কেউ ছিলেন সহযোগী যোদ্ধা। অসাধারণ এক অনুষ্ঠান। বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং নিউইয়র্ক ফিল্ম সেন্টারের উপদেষ্টা কবির আনোয়ার বলেন, ‘মিশুক কিংবা তারেক আমাদের জন্য ছিল অহংকার। দুঃখজনক যে এরা দুজনেই সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেলেন। এর চেয়ে বেদনার আর দুঃখের আর কি আছে? আমাদের সব শিল্প-সাংস্কৃতিক জোটদের উচিত বাংলাদেশে যাতে আর একটি প্রাণও সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরে না যায় সে জন্য সরকারের প্রতি জোর চাপ তৈরি করা। ’
এ কথা চোখ বুজেই বলে দেওয়া যায় যে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বাংলাদেশের উঠান পেরিয়ে বহির্বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার অন্যতম আয়োজক ছিলেন তারেক মাসুদ। অন্যদিকে বাংলাদেশে টিভি সাংবাদিকতার পুরোধা ছিলেন মিশুক মনির। মিডিয়া নিয়ে যিনি বাংলাদেশে বসে অনেক দূর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। দুঃখজনক যে চলচ্চিত্র স্বপ্নদ্রষ্টা, সংস্কৃতি পাগল, উদ্যোমী আর মেধাবী এই তরুণদের খুব অকালেই আমাদের কাছ থেকে ঝরে যেতে হল।
এই স্বরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক ফিল্ম সেন্টার এর কর্মকর্তাবৃন্দসহ অনেকেই। তারেক মাসুদ এবং মশুক মুনিরের উপর কর্ম এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণে ওবায়েদুল্লাহ মামুন, মিনহাজ আহমেদ, আদনান সৈয়দ, অনিন্দ আতিক, আকবর হায়দার কিরণ, তানভির রব্বানী, মোশাররফ আহমেদ,আশরাফুল হাসান বুলবুল, সেমন্তী ওয়াহেদ,মাহফুজা বুলবুল,ফাহিম রেজা নূর, লুৎফা শাহানা, মিম, তাসের খান মাহমুদসহ আরো অনেকেই অংশ গ্রহণ করেন।
আবারো মিশুক মুনির এবং তারেক মাসুদের কাছে ফিরে আসি। এরা দুজনেই হলেন আমাদের স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। এদের মৃত্যু নেই। মৃত্যু এদেরকে ছুতে পারে না। পারবে না। আর সে কারণেই মিশুক মুনীর, তারেক মাসুদরা বেঁচে রইবেন আমাদের মাঝে সবসময়, যুগ যুগ ধরেই।
নিউইয়র্ক থেকে
বাংলাদেশ সময়:১৫৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৪