এই সময়টা হলো গ্লোবালাইজেশনের সময়। এ সময়ে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্কের মাত্রাও নানামুখি।
ফলে আমরা কোন রাষ্ট্রের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক গড়ব, তার উপর নির্ভর করবে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার কী প্রভাব পড়ছে। আমরা যদি কোনো সিকিউরিটি পার্টনারশিপ-এ না যাই, সেক্ষেত্রে অন্য কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কেন? আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কিছুদিন আগে জাপান এবং চীন সফর তো সিকিউরিটি অর্থাৎ মিলিটারি সিকিউরিটি সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের চুক্তি ছিল না। কোনো দল বিভক্ত হয়ে পড়া বা স্নায়ুযুদ্ধ— এখানে এমন কোনো ব্যাপার নেই। আর এটাও লক্ষ রাখতে হবে যে, অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশ একটি রাইজিং পাওয়ার।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে যেসব বিষয়ে চুক্তি বা আলোচনা হয়েছে, তা অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে পরস্পর সহযোগিতামূলক চুক্তি। এখানে জাপানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির ক্ষেত্রে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া বা অন্য যে প্রতিবেশি রাষ্ট্রসমূহ রয়েছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে; বিশেষ করে চীনের সঙ্গে। এখন আমরা যেটা লক্ষ করছি, চীন কিন্তু অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রতিই বেশি জোর দিচ্ছে। তারা নানা ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ের প্রতি জোর দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাদের বিশেষ নজর রয়েছে বিভিন্ন খাত এবং অবশ্যই আমাদের বিশাল বাজারের প্রতি।
আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, চীনারা দক্ষ ব্যবসায়ী। তারা বিশেষ কিছু বিষয় বিবেচনায় রেখেই এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সেক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে বা এগুনোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় নজরে রেখেই এগুতে হবে। ওরা যে আমাদের দিচ্ছে, বিনিময়ে তারা কী কী নিচ্ছে, এসব বিষয় আমার কাছে ঠিক পরিষ্কার নয়।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিই তো হলো কিভাবে অনেক বেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ যুক্ত করা যায়।
চীন নানা বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে, অবকাঠানো নির্মাণ বা প্রযুক্তিগত সহযোগিতাও তাতে রয়েছে। তবে তাদের প্রাপ্তিটা কী, তাও আমাদের দেখতে হবে বা বিবেচনার মধ্যে আনতে হবে। তবেই সম্পর্ক স্থাপন এবং পরস্পরের সম্পর্কের মাত্রাটা কী, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
লেখক : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৪