চলছে ভরাভাদ্র। রীতিমতো দুই সপ্তাহ পার হতে চলল ভাদ্র মাসের।
অবশ্য শ্রাবণ এসেছেও দেরিতে। তাই হয়তো যাবেও একটু দেরি করেই। প্রকৃতির খেয়ালি চলা, পঞ্জিকার পাতা মানবেই বা কেন? কাঁশফুলের নরম ছোয়ায় শরতও আসবে ঠিকই নিজের খেয়ালে। কিন্তু ইট-পাথুরে নগর জীবনে প্রকৃতির ছোয়া কী আর গায়ে লাগে?
রাজধানীর অধিকাংশ মানুষেরই শেকড়পোতা গ্রাম বাংলায়। নাড়ির টান গোপনে রেখে পেটের দায়ে রাজধানীতে থাকা মানুষগুলোর আষাঢ়-শ্রাবণ আসে ভিন্নরূপে। বৃষ্টিতে ডুবে যায় বাসা-বাড়ি। রাস্তার যানজট তীব্রতর হয় জলজটের কারণে। হরহামেশাই মানুষ আহত হয় ডুবন্ত রাস্তায় রিকশা উল্টে। নগর জীবনের সার্বক্ষণিক এমন আতঙ্কে বর্ষাকে উপভোগ করার সুযোগই বা কোথায়?
তবুও নাড়ির টান কখনো নাড়া দিয়ে ওঠে ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকা নগর মানুষগুলোর। তেমনই একটি দৃশ্য চোখে পড়ে রাজধানীর কড়াইল বস্তির পাশের জলাশয়ে। রাজধানীর তিলোত্তমা গুলশান, বনানী ও মহাখালী ঘিরে রেখেছে দেশের সবচেয়ে বড় এই বস্তিটিকে। মহাখালীর টিবি গেট থেকে গুলশান-১ নাম্বারের দিকে যেতে বাম পাশে চোখে পড়ে এ বস্তিটি। বস্তিবাসীর রাস্তায় ওঠার প্রধান বাহন নৌকা।
দুই পাড়েই ঘাটে বাধা থাকে অনেকগুলো নৌকা। সারি সারি নৌকা এপাড়-ওপাড় আসা যাওয়া করছে। এ দৃশ্য সারা বছরের। তবে পানি কমে যাওয়ার ফলে বছরের অন্যান্য সময় এখানে থাকে নগর বর্জ্যের কটু গন্ধ। ভরা ভাদ্রেও মৌসুমি বৃষ্টিতে জলাশয়টি এখন একেবারে টইটম্বুর। তাই নেই কোনো কটু গন্ধ।
রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকা বাসযাত্রীরা এমন দৃশ্যে মুহূতেই হারিয়ে যেতে পারেন নৌকায় চড়ে খাল-বিল-মাঠ-প্রান্তর বেড়ানো শৈশব স্মৃতিতে।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৪