ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

আমারও একটি ছেলে আছে!

মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৪
আমারও একটি ছেলে আছে!

আমার সন্তানের মতো সারা বাংলাদেশে ২০ লক্ষাধিক জে.এস.সি ও জে.ডি.সি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। দফায় দফায় পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় কোমলমতি শিশু কিশোরদের পরীক্ষা প্রস্তুতিতে চরমভাবে ব্যাঘাত ঘটেছে।



শিশু কিশোরদের অভিভাবকরাও আতঙ্কিত। হরতাল নামক ভাইরাস তাদের জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্য ফেলে দিচ্ছে। এজন্য দায়ী কে?

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চলছে। ইতোপূর্বেও জামায়াত ইসলামের কোনো শীর্ষ নেতার ফাঁসির রায় প্রদান করা হলে তারা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার জানে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির আদেশ দিলেই হরতালের ঘোষণা আসবে। তাহলে ২০ লক্ষ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সময়কে সামনে রেখে কেন এই রায়? আগে পরে এই রায় ঘোষণা করা হলে কি হতো?

নাকি তাতে তাদের রায়ের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন ঘটতো! মাঝখান থেকে এই ২০ লক্ষ জীবনের অশনী সংকেত নেমে এসেছে, এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে? যারা হরতাল ডেকেছে তারা, না কি সরকার।

যারা হরতাল ডেকেছে তাদেরও অনেকের সন্তান এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। যারা সরকারে রয়েছে তাদেরও অনেক সন্তান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সেই আগামী দিনের ভবিষ্যতকে নিয়ে যারা ছেলে খেলা খেলছে তারা রাজনীতির নামে জনগণের কোন কল্যাণ বয়ে আনবে তা একজন ভুক্তভোগী অভিভাবক হিসেবে সরকার ও হরতালকারীর কাছে প্রশ্ন তুলছি?

ইতোমধ্যেই রায় ঘোষণার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন প্রত্যেকটি রায় কার্যকর হবে। আইন মন্ত্রীও একই সুরে কথা বলছেন। কিন্তু বিচারাধীন কোনো মামলার চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে সাংবিধানিকভাবে কথা বলার কারো কোনো অধিকার আছে বলে আমার জানান নেই।

যারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন তারা যখন নিজেরাই সংবিধানের বাইরে গিয়ে কথা বলছেন তখন একজন সাধারণ অভিভাবক হিসেবে আমরা কার কাছে যাব?

পরিশেষে এই কথাই বলতে চাই আমাদের ২০ লক্ষাধিক ছেলে মেয়ের পক্ষ থেকে একটাই দাবি তারা যেন তাদের পরীক্ষায় যথাসময়ে অংশ  নিতে পারে। এ বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দল সকলের সহমত আশা করছি। তা না হলে এদেশের সাধারণ মানুষ ভবিষ্যতে যারা রায় দিচ্ছে, আর যারা রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকছে কারও প্রতি আস্থা ও ভরসা রাখতে পারবে না।

তাই এখনই সময় কোমলমতি শিশুদের কথা চিন্তা করে আপনারা আপনাদের কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করুন। যাতে ভবিষ্যতে শিশুদের কোনো ক্ষতি না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪ , ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।