ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

লতিফকে আসতে দেওয়া মারাত্মক ভুল

জয়নাল হাজারী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪
লতিফকে আসতে দেওয়া মারাত্মক ভুল জয়নাল হাজারী

ঢাকা: হঠাৎ লতিফ সিদ্দিকী গত রোববার (২৩ নভেম্বর) দেশে ফিরেছেন। তারপর অনেক প্রশ্ন! কেন তাকে গ্রেফতার করা হল না?

কীভাবে তিনি অনেকগুলো মামলা থাকা সত্ত্বেও এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে গেলেন? স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বললেন, স্পিকারের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করা যায় না।

স্পিকার বলেন- সঠিক নয়।

পরিস্থিতি কেমন যেন উত্তেজিত হয়ে আসছিল। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লতিফকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।

তাকে আত্মসমর্পনের সুযোগ দেওয়া হয়। ইচ্ছে করলে পুলিশ নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার করতে পারতো। তবে তাকে আত্মসমর্পনের সুযোগ দেওয়া কিছুতেই ঠিক হয়নি।

আত্মসমর্পনের পর লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতে আনা হয়। সেখানে তার পক্ষে জামিনের কোনো আবেদন করা হয়নি। তিনি নিজেও কোনো কথা বলেননি।

ফলে তাকে কারাগারে নেওয়ার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়। কারাগারের দিকে যাওয়ার সময় বুকে হাত দিয়ে খুবই স্বাভাবিক ভঙ্গিতে সামনের দিকে এগিয়ে যান লতিফ।

তাকে হাতকড়াও পড়ানো হয়নি। পাশ থেকে কোনো একজন তার দিকে কিছু গালাগাল ছুড়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি পেছন ফিরে ওই ব্যক্তির দিকে তাকান।

ভাবখানা টেলিভিশনে মনে হচ্ছিল- তিনি ওই ব্যক্তির দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। হাজার হাজার মানুষ স্লোগান ও জুতা মিছিল করেছে। তার গাড়িতেও জুতা ছুড়ে মেরেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, অতি দ্রুত কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে যেভাবে আসামি নেওয়া হয় তাকে সেভাবে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

কিন্তু মনে হচ্ছিল- কোনো এক নায়ক হেঁটে যাচ্ছে। এরূপ ক্ষেত্রে জনতা তাকে আক্রমণ করারও সুযোগ নিতে পারতো।

যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও হাতকড়া পরিয়ে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল।

সেখানে লতিফকে হাতকড়া না পড়ানোতে স্বাভাবিকভাবে সারাদেশে ও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আসলে লতিফকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে কিনা?

লতিফ একেবারেই নিশ্চিন্তভাবে চলাফেরা করছিলেন। বলা হচ্ছে- লতিফ কিছুতেই দেশে ফিরতে পারে না। নিশ্চয়ই ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েই তিনি এসেছেন। আর এগুলোই তার প্রমাণ।

সবশেষে তিনি জেলগেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের সময় পকেট গেট দিয়ে ঢুকতে রাজি হননি। ১৭ মিনিট গেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।

অন্য কোনো মুসলিম দেশে হলে তাকে শিরোশ্ছেদ করা হতো! কেননা তিনি মুসলমানের সব চাইতে পবিত্র স্থানে হজ এবং নবী করিমকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।

বাংলাদেশে বলেই আজও তিনি ‘মহারাজে’র মতো আচরণ করছেন। মনে হচ্ছে- তার ক্ষেত্রে কোনো আইন বিবেচ্য বিষয় নয়।

দেশ স্বাধীনের পর অনেক রাজাকার নিহত হয়েছে- গণরোশের মুখে। তাদের বিচার হয়নি। কারণ তাদের অপরাধ মানবতাবিরোধী অপরাধ।

মোটকথা এখনও রহস্য ঘনিভূত হচ্ছে। তবে এই নাটক অবশ্যই সরকারের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।