ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

সাউথ সাউথ সম্মাননা প্রাপ্তি ও হাসিনার নেতৃত্বের অর্জন

ফারুক নওয়াজ, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪
সাউথ সাউথ সম্মাননা প্রাপ্তি ও হাসিনার নেতৃত্বের অর্জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জাতিসংঘের সাউথ সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপোর (জিএসএসডি এক্সপো)’ সমাপনী উৎসবে তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।



গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ওই পুরস্কার গ্রহণ করেন তার ছেলে তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়। এ ধরনের একটি পুরস্কার শেখ হাসিনা তথা বাঙালির কপালে আরেকটি বিজয় তিলক পরালো।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ পুরস্কারের প্রয়োজন ও গুরুত্ব কতটুকু অর্থবহ, তা একবাক্যে সবাই স্বীকার করবেন। যে কোনো পুরস্কারই অভিনন্দন পাওয়ার দাবি রাখে। আর যেখানে বাংলাদেশের নাম জড়িয়ে আছে, সেখানে তো কথাই নেই!
 
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, শেখ হাসিনার শাসন আমলে বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা চালু, সর্বসাধারণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বিশ্বের দরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য এই ‘ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন শেখ হাসিনা। এক কথায় বলতে গেলে ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ও শিক্ষার প্রসারে ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ গৌরবজনক পুরস্কারে ভূষিত হলেন।

এর আগে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অবদান এবং দারিদ্র্য দূর করতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর সাউথ সাউথ কো-অপারেশন’ (আইওএসএসসি) পুরস্কার পান।

এ ধরনের পুরস্কার প্রাপ্তির একটাই অর্থ বহন করে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করছেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ মর্যাদার আসনে নিজের স্থান করে দিয়েছে।

কেন এ পুরস্কার পেলো বাংলাদেশ, তার বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানই এখন ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় এসেছে। এখন যে কেউ চাইলেই বিশ্বের যে কোনো সংবাদ মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছেন। মোবাইল ফোনে পরীক্ষার রেজাল্ট পাচ্ছেন, ট্রেনের টিকেট মোবাইল ফোনে কিনতে পারছেন, মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর প্রবাসের স্বজনদের সঙ্গে ভিডিওফোনে সরাসরি আলাপ করতে পারছেন। আবেগ অনুভূতি সরাসরি বিনিময় করতে পারছে।

পত্রিকান্তরে প্রকাশ, ঢাকার অধিকাংশ রিকশাওয়ালাই মোবাইল ফোনে গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠান। মোবাইল মানি ট্রান্সফারের এত দ্রুত বিকাশ, বিশ্বের কম দেশেই দেখা যায়।

আমরা জানি, ঢাকায় যারা রিকশা চালান, তারা দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসেন। তাদের উপার্জিত অর্থ এখন সহজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে পাঠাতে পারছেন। এর ফলে দ্রুত টাকা পাচ্ছেন তাদের পরিবার-পরিজন। এর সঙ্গে ছিনতাই বা অন্যান্য ঝুঁকিও কমে আসছে। এক সময় এ ধরনের সুযোগ কল্পনাই করা যেতো না।

এ বছর বাংলাদেশের সঙ্গে মানবতার কল্যাণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আরো তিন রাষ্ট্র ও একাধিক প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও কাতার এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যার সুব্যবস্থাপনা, শিক্ষার প্রসার, লিঙ্গ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, জ্বালানি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্পায়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা হয়।

এবারের সম্মেলনে ‘২০১৫ পরবর্তী বিশ্বকে কীভাবে দেখতে চাই’ সে আলোকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তারাও মতামত জানান বলে সংবাদ এসেছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও হাই-লেভেল কমিটি অন সাউথ সাউথ কো-অপারেশনের প্রেসিডেন্ট এ. কে. আবদুল মোমেন।

পদক গ্রহণ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান ও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, এ পদক প্রাপ্তি তারই স্বীকৃতি।

২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনকে সামনে রেখে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষিণের দেশগুলোর উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ২০০৮ সালে জাতিসংঘে সাউথ সাউথ কো-অপারেশন কার্যালয় স্থাপিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।