ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা জরুরি

প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম আরিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৫
শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা জরুরি

আগামী এক সপ্তাহের মাথায় ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। যদিও উদ্দেশ্যবিহীন টানা অবরোধ কবে শেষ হবে এ নিয়েও আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট কিছু বলছেন না, তথাপি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও থেমে থাকেতে পারে না।



এমতাবস্থায় প্রতি বছরের মতো এবারের এসএসসি পরীক্ষার সময়ও উপস্থিত। নিয়ম অনুযায়ী যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু আন্দোলনের নামে হঠাকারিতা ও হিংসাত্মক কার্যকলাপে গভীর দুশ্চিন্তায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এ অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ যথার্থই বলেছেন, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার সময় অবরোধ প্রত্যাহার না করলে তা হবে বিএনপি জোটের দ্বৈতনীতি। কারণ গত বুধবার ইংরেজি মাধ্যমের ‘ও’ লেভেলের পরীক্ষা হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়। মন্ত্রী মহোদয় আশা করেন, দেশের বৃহত্তম পরীক্ষা হরতাল-অবরোধের বাইরে রাখা হবে। সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক সমাজও সেটাই আশা করেন।

যদিও পরীক্ষার সময়ে কর্মসূচির বিষয়ে বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত স্পষ্ট কোন ঘোষণা আসেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শষ্কা, অবরোধের কারণে কোনো রূপ ক্ষতি হলে শিক্ষার্থীর জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে। ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী এবং তাদের লাখ লাখ অভিভাবক এ আশঙ্কার মধ্যেই সময় পার করছেন। এদেরকে জিম্মি করার মাধ্যমে বিপদে ফেলা বা ক্ষতিগ্রস্ত করা দেশপ্রেম ও জাতীয় স্বার্থের বিরোধী কাজ হবে।

শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সকলেই জানেন যে, এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নেয়ার একটি ট্র্যাডিশন হয়েছে। এটি পেছানোর কোন সুযোগ নেই। অতীতে হরতাল-অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে। কারণ, এই পরীক্ষার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয় সবাইকে। ফলে একটি পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলে অন্যান্য স্তরের শিক্ষাও ব্যাহত হতে বাধ্য, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাজকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

অতএব, এ ব্যাপারে বাস্তবানুগ, উদার, গণমুখী ও মানবিক অবস্থান নিতে হবে। নচেৎ জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নাগরিকগণ তথা তরুণ প্রজন্ম ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন কি, এই ক্ষতির মধ্যে আন্দোলনকারীদের সন্তান-পরিজনও বাদ যাবে না। অতএব, রাজনীতির নামে বা ক্ষমতা দখলের জন্য কোমলমতি শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে কোনোভাবেই বিপদগ্রস্ত করা যায় না।  

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ প্রত্যাশা করেন যে, রাজনীতির মাঠে যাই হোক, তা যেন শিক্ষাকে আক্রান্ত না করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি অতি জরুরি বিষয় যেন সব সময়ই হানাহানির বাইরে থাকে।

ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়ার জন্য যে প্রস্ততি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সম্পন্ন করেছেন, সেটা যেন সফল হয়। শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের প্রস্তুতি শান্তিপূর্ণভাবে প্রয়োগ করে নিজ নিজ মেধার ছাপ রাখতে পারে। তাতেই তাদের বিকাশ নিশ্চিত হবে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথ প্রশস্ত হবে। আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা হলে শুধু শিক্ষার্থীরাই ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না; দেশ ও জাতিও মেধাশূন্য হবে। এটা কোনো দেশপ্রেমিক রাজনীতির লক্ষ্য বা কাম্য বিষয় হতে পারে না।

মার্চের এসএসসি পরীক্ষার জন্য নিয়ম অনুযায়ী এরই মধ্যে বেশিরভাগ বোর্ডের প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার খাতা জেলা পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সচিবালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা জানানোর পাশাপাশি এ সময়ে সব ধরনের কর্মসূচি বন্ধ রাখার জন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তারা বলেছেন, কর্মসূচি বন্ধ করা না হলে প্রশাসন সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও পরীক্ষা বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির আহ্বায়কও জানিয়েছেন যে, সারা দেশে প্রায় ৭০-৭৫ ভাগ পরীক্ষার সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে বাকি বোর্ডগুলোর প্রশ্নপত্রও বাকি সরঞ্জামাদি পাঠিয়ে দেয়া হবে। এতে অনুধাবন করা যায় যে, পরীক্ষা কার্যক্রম মোটেই থেমে নেই। এমন কি, তথাকথিত আন্দোলনের জন্য পরীক্ষার বিষয় সামান্যতম ব্যাহতও হয় নি।

শিক্ষামন্ত্রণালয় আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার পথে নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও পরীক্ষা শেষে ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নের ব্যবস্থাও নিতে বোর্ডগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার সরঞ্জাম নির্বিগ্নে নিতে রেলপথ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে পৃথক পত্র নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এতে কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার দিনই উত্তরপত্র এবং ওএমআর ফরমসহ গোপনীয় কাগজপত্র শিক্ষা বোর্ডগুলোতে যাতে পাঠানো যায়, সে জন্য এগুলো ডাকঘরে বা রেলস্টেশনে না পৌছা পর্যন্ত অফিস খোলা রাখা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান নিজে সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) আলাদা পত্র দিয়েছেন। এতে উত্তরপত্রসহ পরীক্ষার সরঞ্জামাদির নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৮ দফা নির্দেশনা রয়েছে।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাচ্ছে যে, পরীক্ষা অনুষ্ঠানের পথে কোনো সমস্যাই নেই। তবে এটাও ঠিক যে, বিচ্ছিন্ন নাশকতাকারীরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনের শঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করছে। এতে মানুষের মধ্যে তারা ভালোবাসার বদলে নিন্দিতই হচ্ছে। অনেক অভিভাবক মিডিয়ায় বলেছেন যে, রাস্তায় যেভাবে হাতবোমা, আগুন ইত্যাদির নামে সহিংসতা হচ্ছে, তাতে কিছুটা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হগয়েছে। তারা প্রশ্ন করেছেন, কোন শিক্ষার্থীর কোন ক্ষতি হয়ে গেলে এর দায়ভার কে নেবে? এসব অনিশ্চিয়তাকে পরাজিত করেই চলছে পরীক্ষার শেষ সময়ে প্রস্তুতি। পরীক্ষা দরজায় নক করলেও আন্দোলনকারীদের বিবেকের দরজায় টোকা পড়ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। তাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে যে ভয়-ভীতি, অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে, সেটা সকলকে মিলেই দূর করতে হবে।

এছাড়া এটাও মনে রাখতে হবে যে, আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিক বা এইএইচএসসি পরীক্ষা। তারপর আসবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। অতএব সফলভাবে এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করে শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে।

মনে রাখতে হবে যে, শুধু এসএসসি নয়, তথাকথিত আন্দোলন-অবরোধের ছাপ পড়তে পারে পুরো শিক্ষাসূচিতে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে মাত্র। এখনই যদি হঠকারিতার নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত ক্লাস শুরু না-হয়, তবে এর কুপ্রভাব পপরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও পড়বে। টানা রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা কোথাও কোথাও বিঘ্নিত হচ্ছে। আর গত ৬ জানুয়ারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেবেল পরীক্ষা শুরু হলেও হরতালের কারণে গত বুধবারের ঢাকা ও খুলনা বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ভর্তি প্রক্রিয়া। এছাড়া প্রায় সারা বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন না কোন পরীক্ষা লেগেই থাকে। থাকে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসও। যদি তথাকথিত অবরোধ উপেক্ষাই সব কিছু ঠিক-ঠাকভাবে চলছে; তথাপি রাজনীতির নামে মানুষের মনের মধ্যে ভয়ের বীজ বপণ করা হচ্ছে। এতে বিশেষত শিশু-কিশোর-শিক্ষার্থীরা চরমভাবে মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এমন কি, উৎকণ্ঠায় পড়েছে ৫ কোটি শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিপদের ঝুঁকি আর উৎকণ্ঠার মধ্যে রেখে কার কি লাভ হবে? বরং জাতীয় ক্ষতিই হচ্ছে বেশি। কেননা,  অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী। দেশের কয়েকটি স্থানে ককটেল, পেট্রল বোমায় দু’জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এই দুজনের আহত হওয়ার ঘটনা যদিও বিচ্ছিন্ন, তথাপি সেটা অন্যদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। আরেকটি চাপ হলো, নতুন শিক্ষাবর্ষের ১৪ দিন কেটে গেলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে হিংসাত্মক তৎপরতার চাপও নিতে হচ্ছে। এগুলো শিশু-কিশোর-শিক্ষার্থীদের বিকাশের অন্তরায়। এমন আন্দোলন-কর্মসূচি-রাজনীতি মানুষ মেনে নেবেন না। বরং ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যানই করবে।

বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং গেল দু’বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার একটু আগে ক্লাসসহ শিক্ষাকার্যত্রুম শুরু করা হলেও ফের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ২০১৩ সালে শেষ দিক শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতা চলেছে ২০১৪ সালে পুরো বছর। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গেল বছর ছুটির দিনেও ক্লাস পরীক্ষা নিতে হয়েছে। তারপরও সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে এ বছরের শুরু থেকে ক্লাস শুরু করেও তা পারেনি।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে কঠোর অবস্থানের মধ্যে শুরু হয়ে চলছে টানা অবরোধ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক, দাখিল ও কারিগরি বিদ্যালয়ে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সঙ্গে যদি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থীর সংখ্যা যুক্ত করা হয়, তাহলে এই বিপুল মানবসম্পদ ও জনশক্তিকে আজকের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্য ফেলে দেওয়ার জন্য হিংসাত্মক আন্দোলন ও  হঠকারিতাই একমাত্র দায়ী। জাতি গঠনের মূল শক্তি লাখ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে এবং কোটি কোটি অভিভাবককে চিন্তাযুক্ত করে রক্তাক্ত ও নাশকতার পথে যে অপ-রাজনীতি চলছে, মানুষ সেটার আশু অবসান চায়।

প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম আরিফ: মুক্তিযোদ্ধা ও ভাইস চ্যান্সেলর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।