ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

বর্জ্যের সংগ্রহ যেমন চাই, চাই পরিশোধনও

দোলা সাহা, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৫
বর্জ্যের সংগ্রহ যেমন চাই, চাই পরিশোধনও ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আমি, আপনি- আমরা সবাই পানি খেয়ে খালি বোতলটা রাস্তায় ফেলে আসি, কলার খোসাটা ফেলার আগে এক মিনিট চিন্তা করি না, কারণে- অকারণে কাগজের টুকরো ফেলতে দ্বিধা করি না। এই কাজগুলোর জন্য আমাদের মনে কখনও কোন অপরাধবোধ কাজ করে না।



কেন? কারণ আমরা আমাদের সমাজ, আমাদের পরিবেশ, আমাদের অর্থনীতি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন না। ময়লা অপসারণ শুধু আমাদের পরিবেশকেই রক্ষা করে না, এর পরিশোধনের এক বৃহৎ অংশ আমাদের অর্থনীতির অগ্রগতিকে আরও এগিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ২২.৪ মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এখানে প্রতি ১০০০০ টন বর্জ্য শুধু পরিশোধন করতে ৩৬ জনকে কাজ করতে হয়, অতএব ১৫ মিলিয়ন টন বর্জ্য পরিশোধনে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৪০০০। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে এ সংখ্যা নেহায়েত কম নয়, আর বর্জ্য সংগ্রহ ও এর অপসারণে আরও প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হয়।

কিন্তু আমাদের একটু সচেতনতা আর প্রশাসনের তৎপরতার অভাবে এই শিল্প মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না। নেই পৃথক কোন আইন।

ঢাকা শহরে কিছু টাকার বিনিময়ে বাসা বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করতে দেখা যায়, কিন্তু তার অপসারণ প্রক্রিয়া চোখে দেখার মত নয়। সর্বত্র ময়লার স্তূপ আর দুর্গন্ধ।

দুই সিটি কর্পোরেশনে প্রায় ৪০০(এ সংখ্যা বেশীও হতে পারে)টি ময়লা অপসারণের ট্রাক থাকলেও সেগুলোর কার্যপরিধি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতেই হয়। ঢাকার অদূরে- আমিনবাজার ও মাতুয়াইলে দুটি বড় ময়লা অপসারণের স্থান; কিন্তু সেখানে খোলা আকাশের নিচে, জলাশয়ের মাঝে কোন প্রক্রিয়া ছাড়াই ময়লা ফেলে রাখা হয়।

গ্রামের অবস্থা তো আরও ভয়াবহ। নিজ বাড়ির আঙিনায় জায়গা করতে পারলে ভালো,  নয়ত পুড়িয়ে ফেলাই একমাত্র পন্থা। এতে করে ময়লা কোন কাজে তো লাগেই না,  উপরন্তু পরিবেশের ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তবে কি আমরা শুধু একে অপরের দোষ দিয়েই কাটাবো? না, আমরা নিজ নিজ জায়গায় সচেতন আর সক্রিয় হয়ে সরকারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবো।

সমাজের স্বার্থে এন.জি.ও, দাতব্য ও তদ্রুপ সামাজিক সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সবাইকে জ্ঞাত করবো। তবে প্রশাসনের ভূমিকাই এখানে মুখ্য। এই শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার চাইলে চুক্তির মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্য নিতে পারে। সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দলগত হয়ে কাজ করতে পারে।

গবেষণার মাধ্যমে বর্জ্যবিষয়ক প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে। আর মফস্বল এলাকাগুলোর তদারকির দরকার তো আছেই। সর্বপরি আইনের মাধ্যমে সব কাজের সমন্বয়সাধন করা যেতে পারে। এবং একটুখানি মূল্যবোধ আর সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে চলতে পারলে সমাজ হবে পরিবেশবান্ধব, দেশ হবে উন্নত।

দোলা সাহা: শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৫
ওএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।