ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

রবীন্দ্র-স্মৃতিধন্য আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজ

মো. সহীদুর রহমান, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৫
রবীন্দ্র-স্মৃতিধন্য আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজ

ময়মনসিংহের অন্যতম এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একমাত্র দর্শনীয় স্থান আঠারবাড়ি জমিদার বাড়ি। আর, আঠারবাড়ি জমিদার বাড়ির এই সৌন্দর্যের মনোমুগ্ধতা নতুন মাত্রা পেয়েছে এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগমনকে ঘিরে।



বাংলাদেশস্থ ভারতীয় দূতাবাসের প্রকাশনা ‘ভারত বিচিত্রা’র তথ্যসূত্রে জানা যায়, ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ৭ ফাল্গুন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশেষভাবে আমন্ত্রিত হয়ে আঠারবাড়ি জমিদার বাড়িতে আসেন। আর, বর্তমান আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজটি ১৯৬৮ সনে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত আঠারবাড়ি জমিদার বাড়িতেই প্রতিষ্ঠিত হয়।

খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ আশিষ চৌধুরীর ‘রবীন্দ্রনাথের পূর্ববঙ্গ ভ্রমণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ অনুসারে জানা যায়, ‘আঠারবাড়ির সর্বশেষ জমিদার প্রমোদ চন্দ্র রায় চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি নিকেতনের ছাত্র ছিলেন। সে সুবাদে কবির সাথে প্রমোদ চন্দ্রের একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ফলে বিশ্বকবি যখন তৎকালীন এই পূর্ববঙ্গে, বিশেষ করে ময়মনসিংহ ভ্রমণে আসেন, তখন কবিগুরু তার ছাত্রের আমন্ত্রণ রক্ষা করেছিলেন।

শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা হাওর-বাওর অঞ্চলের মোহনায় দৃষ্টিনন্দন জমিদার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত আঠারবাড়ি কলেজটি সৌন্দর্য পিপাসু যেকোন মানুষকেই হাতছানি দিয়ে ডাকে।



শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে দূরে আঠারবাড়ি কলেজের ১৫.৬৫ একরের বিশাল নৈসর্গিক ক্যাম্পাস। নয়নাভিরাম বৃক্ষরাজির জন্যে এ কলেজটি ২০০৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করে।

‘রাণী পুকুর’ নামে খ্যাত বিশাল পুকুরটি জমিদারদেরই আরেক সৃষ্টি। এটি মূল জমিদার বাড়ি সংলগ্ন প্রশস্ত প্রাচীর দ্বারা ঘেরা। কথিত আছে, রাণীমাতা নিত্যদিনের স্নান-কার্যাদির জন্যে তার আবাসস্থল থেকে সুড়ঙ্গ পথে এই পুকুরে যাতায়াত করতেন।

আঠারবাড়ি কলেজ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আরেক নাম। আঠারবাড়ি কলেজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতির অনন্য দর্পণ। যে কারণে আঠারবাড়ি কলেজের গুরুত্ব একেবারেই আলাদা। তাই এই কলেজকে ঘিরে এতদঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশাও অনেক বেশি। তারা চায় সরকারের সুদৃষ্টি।

কলেজটির সরকারিকরণ হলে কলেজের বিশাল সম্পত্তি তথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের চাহিদার ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাউশির উচ্চ ক্ষমতা-সম্পন্ন একটি প্রতিনিধি দল ২৯ জুলাই, ২০১৫ তারিখে আঠারবাড়ি কলেজ পরিদর্শন করেন। তাছাড়া কলেজ সরকারিকরণের যে নীতিমালা রয়েছে, তার সবগুলো প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কলেজটি সরকারিকরণের পথে অনেক দূর এগিয়েছে।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, আঠাবাড়ি ডিগ্রি কলেজ, ময়মনসিংহ

বাংলাদশে সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৫
টিকে/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।