অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কমনওয়েলথ সম্মেলন কভার করতে গিয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা এক রকম এতিম অবস্থায় পড়েছেন! বাংলাদেশ হাইকমিশনের লোকজন প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গীদের নিয়ে ব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যারা গেছেন তাদের প্রটোকল সহ নানা সুযোগ সুবিধা পেতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, কমনওয়েলথ সম্মেলন কভার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে পৌঁছার আগেই বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়ার ২০ জনের মতো সাংবাদিক, ক্যামেরা ক্রু পার্থ গিয়ে পৌঁছেন। এত বিশাল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সেখানকার সব হোটেল-মোটেল আগে থেকেই বুকড হয়েছিল। ওই অবস্থায় স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগেই তাদের আবাসনের বিকল্প ব্যবস্থা করতে হয়েছে। যাতায়াত, খাবার জোগাড় নিয়ে বড় সংকট দেখা দেয়। সম্মেলন কর্তৃপক্ষ বিদেশি অ্যাক্রেডিটেশন করা সাংবাদিকদের জন্যে তাদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বাস-ট্রেনে ফ্রি চলাচলের ব্যবস্থা করলে অচেনা নতুন শহরটিতে তাদের গাইড করার কেউ ছিল না। সেজন্য দূরের আবাসন থেকে সম্মেলন ভেন্যুতে আসা-যাওয়াতে তাদের সমস্যা পোহাতে হয়। এক ঘন্টার জার্নিতে কারো কারো দু’আড়াই ঘন্টাও লাগছে।
অথচ সাংবাদিকরা পার্থ পৌঁছার পর থেকে সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের দেখভালে যার যার দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত। শুধু বাংলাদেশেরই কেউ নেই। বাংলানিউজের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর আবিদ রহমান মেলবোর্ন থেকে ২৭ অক্টোবর পার্থ পৌঁছে দেখেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সাংবাদিকের হাতে নেই।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর চ্যানেল আই’র ফারুক হোসেন তেমন একটি সূচি জোগাড় করতে পারলে অন্য সাংবাদিকরা তার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে শেয়ার করেন। দেশের সাংবাদিকদের বিপর্যস্ত অবস্থা দেখে সিডনি থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতারা অনেক রাত পর্যন্ত তাদের খাবার, আবাসে পৌঁছানোর কাজ করেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি সূত্র পার্থে তাদের লোকবলের সংকটের উল্লেখ করে বলেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া একমাত্র বিদেশি বীরপ্রতীক ওডারল্যান্ডের সমাধিতে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন কভার করতে যাবার জন্য সাংবাদিকদের জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের আশরাফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, একটিমাত্র গাড়িতে জায়গার সমস্যার কারণে তারা তাদের ক্যামেরা ক্রুদের শুধু সেখানে পাঠিয়েছেন। বৈশাখী টেলিভিশনের চিফ রিপোর্টার হাসানুজ্জামান সাকী’র জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে কাজের অভিজ্ঞতা আছে। সাকী বাংলানিউজকে বলেন, `তিনি কোথাও গিয়ে দূতাবাসের লোকজনের কোনও সহায়তা পাবার চেষ্টা করেন না। তারাই উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতেই এর ব্যতিক্রম দেখলেন। `
তবে হাসানুজ্জামান সাকী, আশরাফুল হক, ইত্তেফাকের মুহম্মদ আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের শাবান মাহমুদসহ সাংবাদিকদের অনেকে মিডিয়া সেন্টারের ব্যবস্থাপনা, ইন্টারনেট স্পিড এসবের প্রশংসা করেন।
ফজলুল বারীঃ সিডনিপ্রবাসী সাংবাদিক
বাংলাদেশ সময় ১৬৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১