যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নানা ছেলেখেলার অভিযোগ চলছে শুরু থেকে। এখন সে সবের প্রকাশ ঘটা শুরু হয়েছে।
একাত্তরে জাতির সঙ্গে মীরজাফরি করা চিহ্নিত নরঘাতকদের বাঁচাতে দেশে-বিদেশে চিহ্নিত-অচিহ্নিত নানা অপশক্তি সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সারা দেশের মানুষজন এই বিচার দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায়। আর আমাদের বিশাল প্রত্যাশার প্রসিকিউশন করছেটা কী?
একাত্তরের ঘাতককূল শিরোমণি গোলাম আযমের পর আরও বিশেষ দুই হোমরা-চোমরা কুশীলব আলী আহসান মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া অভিযোগপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল! অভিযোগ, এসব দেশ চেনা খুনিদের অভিযোগপত্র কী করে লিখতে হয় এরা তাও শেখেননি বা লিখতে পারেননি!
এমন একটি গুরুতর অভিযোগের পর এই প্রসিকিউশন টিমের পদত্যাগ বা বরখাস্তের দাবি উঠলে তা কী খুব বেশি হবে?
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ হতাশা জানিয়ে বলেছেন, প্রসিকিউশন টিমের এই ব্যর্থতা তিনি মানতে পারছেন না। আর সমন্বয়হীন সরকারের আরেক কেবিনেট সদস্যা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলে দিলেন, ‘সব ঠিক আছে, ঠিক আছে’! উকিল হিসাবে এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আইন ব্যবসা কোন স্তরের ছিল তা আদালতপাড়ার লোকজন জানেন। একবার ব্যারিস্টার রফিকুল হককে আইন শেখানোর ধৃষ্ঠ বক্তব্যের ইট ছুঁড়তে গিয়ে খেয়েছিলেন পাটকেল! ব্যারিস্টার রফিককে আইন দেখে কথা বলতে বলেছিলেন সাহারা খাতুন। বিনীত রফিকুল হক জবাবে বলেছিলেন: ``আমি এখনও আইন পড়াশুনা শেষ করতে পারিনি তো! আর উনি আইন পড়া নিয়ে এমন ব্যস্ত ছিলেন যে সে কারণে বিবাহ করারও সময় পাননি! ``
এখন ট্রাইব্যুনাল ফেরত দেবার পরও গোলাম আযমের বিরুদ্ধে লেখা অভিযোগপত্র ``ঠিক আছে ঠিক আছে`` বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সার্টিফিকেট দেওয়া নিয়ে কী কথাবার্তা হয় আল্লাহ মালুম!
ট্রাইব্যুনালের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষমতাসীন মন্ত্রীদের কথাবার্তা একটু সাবধানে বলা ভালো। অপ্রয়োজনে না বলাই ভালো । কারণ, খুনিদের উকিল-প্রটেক্টররা এসবের নানা অর্থ আবিষ্কার করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারেন। দেশের মানুষ চায় বিচার। অন্য কিছু বা কারও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পরিবেশ-পরিস্থিতি না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি নিয়ে শুরু থেকে এমন নানা ছেলেখেলা হয়ে আসছে। শুরুতে তদন্ত টিমের প্রধান হিসাবে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয় পরে জানা যায় যাদের বিচারের জন্যে যে ট্রাইব্যুনাল তিনি তাদেরই লোক। আইন প্রতিমন্ত্রী কী করে তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন আর কোনো রকম পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের সিদ্ধান্ত কী করে হয়ে গিয়েছিল সে প্রশ্নটির উত্তর আজও খোলাসা হয়নি।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক একজন মন্ত্রী সিডনি এসে তার জানা যে তথ্যটি আমাকে বলেছেন তা সত্যি হয়ে থাকলে দেশ মস্ত ঝুঁকির মধ্য দিয়ে হাঁটছে ভাবতে হবে। যে দেশে একটা অফিস সহকারীর চাকরি পেতেও পুলিশ ভেরিফিকেশনস-ক্লিয়ারেন্স লাগে সেখানে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং বিপদজ্জনক কায়দায় দিয়ে দেওয়া হয়ে গিয়েছিল! দেশের মানুষের ভাগ্য ভালো আর উদ্দেশ্য পবিত্র বলে শুরুতে তা ধরা পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিন আহমদও সাহস করে তা তাৎক্ষণিকভাবে সামনে নিয়ে আসেন। অথবা জালিয়াতি ধরতে পেরে প্রধানমন্ত্রী তাকে দিয়ে তা বলান।
সে কারণে যখন এখনকার বিশেষ লোকজন এই বিচার আর ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা নিয়ে হল্লা-ফাল্লা করেন তখন হাসিও পায়। এদের কাছে নিরপেক্ষ মানে তো একাত্তরের ইসলামী ছাত্র সংঘ, এনএসএফ অথবা নানা মিলিটারি শাসনের সঙ্গে ডিগবাজি খাওয়া লোকজন! যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের মানুষকে খুব নিরপেক্ষভাবে খুন-ধর্ষণ করেছিল! জ্ঞানপাপীর দলতো শুধু সেই কিসিমের কিছু লোকজনকেই নিরপেক্ষ ভাবতে পারে!
এখন প্রসিকিউশন টিমে যারা আছেন তাদের কেউ কেউ অবশ্যই যোগ্য। কিন্তু এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা লড়ার মতো কী যোগ্য তারা? শুরু থেকে এ প্রশ্নটি চলে আসছে। এমন কী শ্রদ্ধেয় মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীররাও শুরু থেকে প্রশ্নটি তুলে আসছেন। তাদের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনা দরকার ছিল। তা কেন হয়নি এর জবাব সরকারকে দিতে হবে। কারণ, এ বিচারের দাবি হঠাৎ করে নাজেল অথবা পয়দা হয়নি। অনেক ত্যাগী মানুষের রক্তঘাম পানি করা পরিশ্রম এর সঙ্গে জড়িত। তাদের কয়েকজনের নাম এখানে লিখছি।
তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আব্দুর রাজ্জাক সম্প্রতি মারা গেলেন। যারা বেঁচে আছেন তাদেরকে পরামর্শক হিসাবে এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। নতুবা গুরত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে চলতি ছেলেখেলা বন্ধ হবে না।
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃ্ত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি গড়ে ওঠারও অনেক আগে আশির দশক থেকে কর্নেল (অব) কাজী নুরুজ্জামান (প্রয়াত), শাহরিয়ার কবীররা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশকেন্দ্রের মাধ্যমে আন্দোলন সংগঠনের কাজটি করে আসছিলেন। চেতনাবিকাশ কেন্দ্র থেকে বেরুনো ‘একাত্তরের দালালরা কে কোথায়’ নামের সাড়া জাগানো গ্রন্থ, নয়া পদধবনি’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে বিচারের দাবিটির পক্ষে জনমত গঠনের কাজ চলছিল। মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শাহাদাত চৌধুরীর (প্রয়াত) সাপ্তাহিক বিচিত্রার ভূমিকাও অবিস্মরণীয়। ড. আহমদ শরীফ (প্রয়াত), ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুল মতিন, বিনোদ দাশগুপ্ত, সৈয়দ আবুল মকসুদসহ আরও অনেকে চেতনাবিকাশ কেন্দ্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। শাহাদাত চৌধুরী, শাহরিয়ার কবীরদের উৎসাহ-প্রেরণায় লেখা শহীদ জননীর ‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থ সৃষ্টি করে আন্দোলনের প্রেরণা। সে গ্রন্থটিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আজকের প্রেরণা-ক্ষেত্র সৃষ্টির অন্যতম সোপান।
নব্বুই দশকের শুরুতে সৃষ্টি হয় আন্দোলনের সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও জাতীয় সমন্বয় কমিটি। সদ্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নেতা আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যক্ষ আহাদ চৌধুরী প্রমুখের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন পরিষদ, বর্তমান ডেপুটি স্পিকার কর্ণেল (অব)শওকত আলীর মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্তি ঘটায়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণ-আদালতের সাফল্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া অসম্ভব ছিল। সিপিবি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদসহ বামপন্থী দলগুলো বরাবর এ বিচারের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং রাখছে। আন্দোলনের মাঠে-আদালতে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম, ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, বর্তমান আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নাসহ অনেক সিনিয়র-জুনিয়র আইনজীবীর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম কুদ্দুসদের নেতৃ্ত্বে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, স্কপ, চারুকলাসহ দেশের প্রগতিশীল ছাত্র সমাজ, মাহমুদুর রহমান মান্না, শিরিন আখতার, ফজলে হোসেন বাদশা, মুশতাক হোসেন, নাজমুল হক প্রধান, ডা. জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকু, নূর আহমদ বকুল, আখতার সোবহান মাশরুরসহ অনেক নেতা-কর্মীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আন্দোলনের নানা পর্বে (সবার নাম লেখা স্মৃতির বিশ্বাসঘাতকতায় সম্ভব হচ্ছে না বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, যার যার নামটা যোগ করে নেবেন প্লিজ)।
শহীদ জননী মারা যাবার পর শাহরিয়ার কবীরদের সঙ্গে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, কবি শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, মুনতাসীর মামুন, অভিনেতা হাসান ইমাম, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, কাজী মুকুল, ভাস্কর রাসা, সাংবাদিক আমান-উদ-দৌলা, ফজলুল হক, জুলফিকার আলী মাণিকসহ অনেকে এই আন্দোলন এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
অধুনালুপ্ত বিচিত্রার পর নানা সময়ে বিচিন্তা, খবরের কাগজ, পূর্বাভাস, প্রিয় প্রজন্ম, সংবাদ, আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ এসব কাগজ ছিল এ আন্দোলনের অঘোষিত মিডিয়া পার্টনার। গণ-আদালতে গোলাম আযমের বিচারের রায় নিয়ে টেলিগ্রাম সংখ্যা বের করেছে সাপ্তাহিক প্রিয় প্রজন্ম। এসব এখানে লেখার কারণ এ বিচারের দাবি আর আন্দোলন যে হঠাৎ নাজিল হয়নি তা বলার জন্য।
আজকে যারা খুনিদের নিরপেক্ষতা, আন্তর্জাতিক মান নিয়ে সোচ্চার তারা কিন্তু ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে ‘ঘাদানিক ছাড়া ডাকেননি বা এখনও ডাকেন না। এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে শহীদ জননী জাহানারা ইমামসহ ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়েছে বিএনপি। সাংবাদিক শাহরিয়ার কবীরকে বিচিত্রা থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাকে আর মুনতাসীর মামুনদের গ্রেফতার করে যে অকথ্য শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল, সেগুলো কী নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা হয়েছিল? হাসান ইমাম যে তখন পাঁচ বছর দেশে আসতে পারেননি, তা কি ভুলে গেছে বাংলাদেশ?
এই বিচার শুরুর আগে-পরে কী যথেষ্ট সহায়তা নেওয়া হয়েছে শাহরিয়ার কবীরদের?
একাত্তরে মিরপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়ের স্মৃতি নিয়ে সারা জীবন একা একা কাজ করা ফ্যাক্টস ফাইন্ডিংস কমিটির ডা. হাসান, মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশকেন্দ্র, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ বিভিন্ন সংগঠন যে নিজেদের কাছে থাকা তথ্য-উপাত্তের নানা কিছু উজাড় করে ট্রাইব্যুনালের হাতে তুলে দিলো, এরপর কী আর কখনো তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার চেষ্টা করেছে এই প্রসিকিউশন? বা সরকার?
বা এখন পর্যন্ত কেন ড. কামাল, ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম, ড. জহির, শাহদীন মালিক, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার তানিয়া আমিরসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আইনজীবীদের এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হলো না?
ফৌজদারি মামলায় দেশের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী আনিসুল হকসহ দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বসে যদি একাত্তরের শীর্ষ খুনিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করা হতো তাহলে কোর্টে গিয়ে এই বিব্রত অবস্থার সৃষ্টি হতো কী? অনেকে বাঁকা মন্তব্যে এই প্রসিকিউশন টিম আসলে আওয়ামী লীগের বেকার আইনজীবীদের পুনর্বাসনকেন্দ্র হয়েছে! এমন ঢালাও মন্তব্য হয়তো সর্বাংশে ঠিক না। কিন্তু প্রসিকিউশনের যে চেহারা দিনে দিনে বেরুতে শুরু করেছে, মানুষের মুখ বন্ধ করার উপায় কী?
অতএব আল্লাহ’র দোহাই লাগে এখন পর্যন্ত এ বিচার নিয়ে যা যা দুর্বলতা চিহ্নিত হয়েছে তা নিয়ে আন্দোলনের শরিক ও এক্সপার্টদের সঙ্গে বসুন। দরকার হলে প্রসিকিউশন টিমের অযোগ্যদের এখনই বাদ দিন অথবা তাদের শোধরান।
এ বিচারের পক্ষে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, প্রগতিশীল শক্তি, নতুন প্রজন্ম, দেশের সব মিডিয়া জড়িত সম্পৃক্ত বলে, প্রসিকিউশনের দুর্বলতা, ট্রাইব্যুনালের অপ্রতুল তহবিল, নানা প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা এসব নিয়ে জোর গলায় কেউ এখনও তেমন কিছু বলেননি বা বলছেন না। নতুবা কিন্তু এতক্ষণে সব ফালা ফালা করে দিত!
কিন্তু স্বাধীনতার শত্রু, খুনিদের দোসররা কিন্তু বসে নেই কেউ। তারা সব দুর্বলতা দেখছে আর কৌশল সাজাচ্ছে। পাবলিক পক্ষে না থাকায় প্রকাশ্যে লম্ফঝম্ফ করতে পারছে না। কাজেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এক দুবার শুধু গণমিছিল না, এলাকায় এলাকায় সংঘবদ্ধ সক্রিয় সামাজিক আন্দোলন সক্রিয় রাখা জরুরি।
গতবার বিএনপি ক্ষমতায় এসে শাহরিয়ার কবীরসহ কয়েকজনের ওপর আক্রোশ মিটিয়েছে। এ বিচার ঠিকমতো শেষ ও খুনিদের সাজা কার্যকর করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজনের বিরুদ্ধে গণহত্যা এমন কী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালাতে পারে তারা। এরই মাঝে ‘এ বিচার বন্ধ, স্বাধীনতার শত্রুদের রক্ষার মুক্তিযুদ্ধ’ শুরুর হুমকি দেওয়া হয়েছে। আর এতোসব কিছু দেখেশুনেও ট্রাইব্যুনাল নিয়ে চালানো হচ্ছে নানা ছেলেখেলা!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি প্রশ্ন রেখে লেখাটা শেষ করছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিয়ে যে সিরিয়াসনেস ছিল, এখন পর্যন্ত এ বিচার নিয়ে তেমন সিরিয়াসনেসের কোথাও কোনো প্রমাণ আছে কী? বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চেয়ে এ মামলা কী কম গুরুত্বপূর্ণ? প্লিজ সময় কিন্তু হাতে খুব কম।
ফজলুল বারী: সিডনিপ্রবাসী সাংবাদিক
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১১