অনেক আশা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষে। ভেবেছিলাম আর সবগুলো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো আমাদের শিক্ষাবর্ষ সময়মতো শেষ হবে।
তারপর থেকে ফল পাবার প্রতীক্ষা শুরু হয়। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কথা মতো আশ্বস্ত ছিলাম যে নির্ধারিত তিন মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশিত হবে। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেল্ওে তা প্রকাশের কোনো লক্ষণ নেই। ফলে কোনো চাকরির জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছি না। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। স্মরণকালের মধ্যে এতগুলো পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনো রেকর্ড নেই। অথচ, সেই চাকুরির পরীক্ষায় আবেদন করতে পারলাম না কেবল ফলাফল প্রকাশের অভাবে। একইভাবে, পূবালী ব্যাংকেও চাকুরির আবেদন করতে পারলাম না। এই জানুয়ারিতেই আরো কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হওয়ার কথা আছে। কিন্তু সেগুলোতেও আবেদন করা হয়তো হবে না। অথচ, আমাদের একই শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকুরিতে ঢুকে গেছে। আর আমরা এখনো অনার্সের ফলাফল প্রকাশের অপেক্ষায়। এদিকে সরকার সরকারি চাকুরি থেকে অবসরের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি করেছে, যার ফলে বেকারত্বের সংখ্যা এমনিতেই বেড়ে যাবে। অন্যদিকে, সেশনজটের কষাঘাতে শিক্ষাজীবন আরো ব্যাপ্তি পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, একটা অসম ব্যবধানের সৃষ্টি হচ্ছে।
যদি ৪৫ লাখ প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীর ফল দুই মাসের মধ্যে দেওয়া যায়, তবে দুই লাখ পরীক্ষার্থীদের ফল দিতে তিন মাসের বেশি সময় কেন লাগবে? এভাবে আমাদেরকে জিম্মি করে রাখার অর্থ কি? শুধু মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নয়, আমরা দেশের সকল সচেতন মানুষের কাছে প্রশ্ন রাখছি, আমাদের এই ভোগান্তির শেষ কোথায়? এই জানুয়ারিতেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে আমাদেরকে কষ্টের শেকল থেকে মুক্ত করুন। এই দাবি আজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের।
আদনান, সজল, আশফাক, রেজা, তন্ময়, শাফায়েত
২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা কলেজ।
বাংলাদেশ সময় ১৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১২