একটা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। কিন্তু হতাশাজনকভাবে খবরটি বেশীরভাগ পত্রিকাতেই তেমন গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়নি।
বাংলাদেশ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে প্রথমদিককার স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। উপরের ঘটনার মাধ্যমে সাংসদ এবং তার আজ্ঞাবহ শিক্ষকেরা দুটো শিশু অধিকার লংঘন করেছেন। প্রথমতঃ এরা শিশুদের এবং তাদের অভিভাবকদের কোন মতামত নেয়নি। দ্বিতীয়তঃ শিশু সুরক্ষা অধিকার লঙ্ঘন। দ্বিতীয়টা খুবই ভয়ংকর হতে পারতো। বাঙলাদেশের রাজনীতির যে সংস্কৃতি তাতে যে কোন সময় এ ধরনের বিতর্কিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করানোটা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের দেশে রাজনীতি মানেই হানাহানি, মারামারি, বোমাবাজি। প্রতিপক্ষ যদি সেই সুযোগটা নিত কিংবা সাংসদের দলের কেউ যদি শিশুদের ক্ষতি সাধন করে বিপক্ষবাদীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করতো তবে সেই দায় দায়িত্ব কে নিত?
সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর মানে কিন্তু শিক্ষক তাদের দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করাতে পারেন না। এ জন্য অভিভাবকদের পূর্বানুমতি নেওয়া প্রয়োজন। যে সকল শিক্ষক মানব বন্ধনের নামে একজন ‘সন্ত্রাসী’র অপকর্মকে ঢাকার চেষ্টা করেছেন, সহযোগী হিসেবে তাদেরও বিচার হওয়া উচিত নয় কি? সংগে সংগে শিশু অধিকার হরণের জন্যও তাদেরকে আইনের মুখোমুখী দাড় করানো জরুরি।
বাঙলাদেশে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সংখ্যা কম করে হলেও শতের কম হবে না। বিষয়টি কি তাদের নজরে আসেনি? নাকি এটা তাদের দায়িত্বের বাইরে পড়ে গিয়েছে? আমাদের দেশে তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন অধিকারভিত্তিক সংস্থাগুলো এ রকমই। বাহবা প্রাপ্তির গ্যারান্টি না থাকলে সে বিষয়ে হাত দেয় না। মানবাধিকার সংস্থাগুলো যেমন কাদের লিমনদের মতো ভয়াবহ ঘটনার খোঁজে থাকে নিজেদের ভয়াবহ আকারের মানবাধিকার কর্মী হিসেবে প্রমাণ করার জন্য। ঠিক তেমনি এই ধরনের অধিকারভিত্তিক সংস্থাগুলো ধান্দায় থাকে হৈ হৈ রৈ রৈ পড়ে যাওয়া ঘটনার সন্ধানে। এই ফাকে শিশু অধিকার লংঘনকারীরা থেকে যাবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
বাংলাদেশ সময় ১৩১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১১