সীমান্তে হাবিবুর রহমানের নির্যাতিত হওয়ার ভিডিওটি প্রযুক্তির বদৌলতে আমরা কম বেশি সবাই দেখেছি। আসলে কি বলবো? এক কথায় আমি বাকরুদ্ধ।
আজ আমরা যুদ্ধাপরাধের ইস্যুতে আন্দোলন করি। কেন? দেশের প্রতি ভালবাসার টানে? এই আমাদের ভালবাসা, যে ভালবাসা দিয়ে আমরা বাংলা মায়ের সম্মান বাঁচাতে পারি না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, না বলে পারি না। একাত্তরে যারা দালাল ছিল, রাজাকার ছিল, তারা ছিল পরাধীন দেশে; আজ আমরা কি পেরেছি স্বাধীন দেশে তৈরি হওয়া নব্য দালাল, রাজাকারদের ধ্বংস করতে?
জানি না কোন স্বার্থে আজ আমরা এমন ভাবে নগ্নভাবে বিক্রি।
কিউবান সাহিত্যিক নিকলাস গুইলেন (Nicolás Cristóbal Guillén Batista) এর একটি লাইন, ‘ভাই ভাইকে মারতে পারে না‘। কথায় কথায় আজ আমরা বলতে শুনি একটি কূটনৈতিক বাক্য, ‘ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ’। এই তাহলে বন্ধুত্বের নমুনা! আমরা তো এমন বন্ধু প্রত্যাশা করি না। একবার একটা লেখা পড়েছিলাম কোনো এক বিজ্ঞ জনের। লেখায় বলা হয়েছিল, বিশ্বের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো দেশ অন্য দেশের বন্ধু হতে পারে না। মুখে মুখে যে বন্ধুত্বের কথা বলা হয়, তা আসলে স্বার্থ উদ্ধারেরই ছদ্মবেশী এক ভয়ংকর রূপ। কথাটা এখন হারে হারে টের পাচ্ছি।
এমন হতে পারে হাবিবুর রহমান অপরাধী ছিলেন। খুব ভালো কথা। অপরাধীর অপরাধ কেউ সমর্থন করে না। কিন্তু তার বিচারের জন্য প্রশাসনিক আইন রয়েছে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। বিএসএফ কি পারত না ওই প্রক্রিয়ায় যেতে। কিন্তু তারা অন্যায়ভাবে আমার ভাইয়ের গায়ে হাত তুলেছে। হরণ করেছে মানবাধিকার। তাকে বিবস্ত্র করেছে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের মেরুদণ্ডহীন অসহায়ত্ব। আমাদের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি।
তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, আপনার ছেলে যদি এমন আচরণের স্বীকার হতো, আপনার প্রতিক্রিয়া কি হতো? প্রধানমন্ত্রী নয়, একজন মা হিসেবে আশা করি উত্তরটা দেবেন। জানি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এরূপ উত্তর আশা করলে পাওয়া যাবে না। তাই একজন মায়ের কাছে উত্তর প্রত্যাশা করলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১২