ক্ষমতা এক তাসের ঘর। কখন আসমানে কখন মাটিতে কেউ জানে না।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মওদুদ আহমদ চলে গেলেন। ১৯৭১ সালে এই মানুষটির অবদান আছে। উত্তাল মার্চে ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিদেশি সাংবাদিকদের যাঁরা ব্রিফ করতেন তিনি তাঁদের একজন। যুদ্ধ শুরুর পর চলে যান ভারত। যোগ দেন মুজিবনগর সরকারে। বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন দেশের প্রথম পোস্টমাস্টার জেনারেলের। একটি খড়ের ঘর থেকে প্রবাসী সরকারের পোস্ট অফিসের যাত্রা হয়েছিল। সে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী একজন মওদুদ আহমদ।
বাংলাদেশ আজ ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে। দেখতে দেখতে ৫০ বছর অতিক্রম হলো। সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে সুবর্ণজয়ন্তী। আর দেশটির প্রতিষ্ঠাতার বয়স এখন ১০১। তিনি আজ নেই। ইতিহাসের দুই মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের নেতৃত্ব আজ তাঁর মেয়ের হাতে। বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দক্ষতা আর ক্ষিপ্রতা নিয়ে উন্নয়নের মাইলফলক স্থাপন করছেন। দেশ-বিদেশে গড়ে তুলেছেন আত্মমর্যাদা। গড়ে উঠেছে শেখ হাসিনার আলাদা অবস্থানও। অথচ আমাদের শুরুটা ছিল অনেক কঠিন। স্বাধীনতার পর একজন মার্কিন মন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি। না, বাংলাদেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। মাত্র ৫০ বছরে এ দেশের মানুষ সবকিছু বদলে দিয়েছে। মার্কিনিরা অবাক বিস্ময় নিয়ে দেখছেন বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ উপমা। এ দেশের চোখ-ধাঁধানো অগ্রগতিতে হতবাক গোটা বিশ্ব। পাকিস্তানের বিরোধী দল ও সিভিল সোসাইটি এখন কথায় কথায় তাদের সরকারকে উন্নতি-সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশ হয়ে দেখাতে পরামর্শ দিচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে ফলো করতে বলছেন। প্রতিবেশী ভারতও অবাক হচ্ছে দ্রুতগতির উন্নতি দেখে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা এ দেশকে আরও অনেক দূর নেবেন। এ পথচলার দুর্বার গতি আর থামবে না। সবাই সবকিছু পারে না। পথ চলে সবাই আর পথ দেখায় কেউ কেউ। বাংলাদেশ এখন পথ দেখাচ্ছে।
আমেরিকার ম্যানহাটনে ক্লান্তি নিয়ে হাঁটছিলাম একবার। দুপুরে খাবার খেতে প্রবেশ করলাম এক রেস্টুরেন্টে। একজন বাঙালি এগিয়ে এলেন। বললেন, আপনাকে চিনেছি। কবে এলেন? তারপর জানালেন রেস্টুরেন্টটির মালিক একজন বাংলাদেশি। ভালো লাগে এমন দেখলে। পৃথিবীর সব দেশেই বাংলাদেশিরা আজ গৌরবময় অবস্থানে। ব্রিটেনের মেইনস্ট্রিমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের অবস্থান আমাদের গর্বিত করে। আনন্দিত করে তাদের সফলতা। সার্থকতা খুঁজে পাই আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালওবাসির। বঙ্গবন্ধু নজরুল থেকে জয় বাংলা আর রবীন্দ্রনাথ থেকে সোনার বাংলা নিয়েছেন। দুই কবিকে তিনি পছন্দ করতেন। এ কারণে নজরুলকে দেশ স্বাধীনের পর নিয়ে আসেন ঢাকায়। ঘোষণা দেন জাতীয় কবি হিসেবে। আজ রবীন্দ্র, নজরুল আর মুজিবের বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন অবস্থানে। উন্নয়ন-সমৃদ্ধি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে বিশ্বের কাছে উপমা। হবে না কেন? আমাদের জিডিপির গতি এগিয়ে চলেছে দ্রুত। হচ্ছে বেসরকারি খাতের তাক লাগানো বিকাশ। শতাধিক ব্যবসায়ী চোখের পলকে ব্যাংকিং সহায়তা ছাড়াই হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। এই ব্যবসায়ীদের কেউ ঋণখেলাপি নন। শতভাগ বিদ্যুৎ, পদ্মা সেতু, রূপপুর পরমাণু প্রকল্প, কর্ণফুলীর টানেল, ফোর লেন, উড়ালসড়ক এখন আর গল্প নয়, বাস্তব। এ বাস্তবতা দিন দিন বাড়ছে।
বাংলাদেশের এগিয়ে চলাকে ধরে রাখতে হবে। আর ধরে রাখতে থাকতে হবে প্রশ্নমুক্ত অবস্থানে। কাউকে আঙুল তুলে খারাপ কিছু দেখানোর সুযোগ রাখা যাবে না। সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতার জন্যই প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন আর ভোটাধিকার। অতি উৎসাহীদের কারণে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উন্নয়নে আমলাদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতি-অনিয়মের লাগাম টানতে হবে। ব্যাংকিং খাতকে লুটেরামুক্ত করতে হবে। সর্বস্তরে বন্ধ করতে হবে সিন্ডিকেটের কারসাজি। রাজনীতির নামে যা খুশি তা করার সুযোগ নেই। উন্নয়ন কাজের মান রক্ষা করতে হবে। দীর্ঘ সময় লাগিয়ে কাজের ব্যয় বাড়ানোর সুযোগ নেই। সর্বস্তরে জবাবদিহির বিকল্প নেই। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এ দেশটির পরতে পরতে সম্ভাবনা। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অপেক্ষায় আছে আরেক বাংলাদেশ। টেম্পা বে অথবা নেদারল্যান্ডসের মতো সেই সমুদ্রসীমা থেকে শত মাইলের বেশি জমি উদ্ধার সম্ভব। তারুণ্যের শক্তি আর কর্মসফলতা আজ সর্বস্তরে। এই দেশ থেমে থাকতে পারে না। সরকারি কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার দরকার নেই। দেশকে সামনে রেখে কাজ করলেই চলে। দেশপ্রেমে দলীয় আনুগত্য লাগে না। মুখে নয় হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুকে রাখুন। কথার ফুলঝুরিতে কাজ হয় না। কাজ দেখাতে হয় বাস্তবে। দেশের প্রতি আনুগত্য আর ব্যক্তিত্ব না থাকলে প্রতিষ্ঠান চালানো যায় না। মুক্তিযুদ্ধ অন্তরে থাকলে দেশপ্রেম তৈরি হবে এমনিতেই। এগিয়ে যেতে দরকার দেশপ্রেম, দলপ্রেম নয়। বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। অতি উৎসাহীরা সর্বনাশ করে দেয়। মানুষ শান্তি চায় স্বস্তি চায়। অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা ধরে রাখতে হবে। রাজনৈতিক দলের হানাহানি, বিরোধ, দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে নিয়ে লেখাটা শুরু করেছিলাম। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের একদিন ফোন করলেন। বললেন, একদিন আসতে চাই। চা খাব আপনার অফিসে। তারপর বললেন, আপনার জন্য আমার লেখা ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র ১৯৯১ থেকে ২০০৬’ পাঠাচ্ছি। ধন্যবাদ জানালাম বর্ষীয়ান এই নেতাকে। বললাম, কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দিন। তিনি বইটি পাঠালেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনে কিছু লেখাও লিখেছিলেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসতেন। সব সময় হাসি লেগে থাকত মুখে। শেষ জীবনে মনের ভিতরে চাপা কষ্ট ছিল। সন্তানের মৃত্যু তাঁকে তছনছ করে দিয়েছিল। গুলশানের বাড়ি উচ্ছেদের বিষয়টিও মেনে নিতে পারেননি। বাড়ি নিয়ে লেখা পাঠিয়েছিলেন। প্রকাশ করেছি। সে লেখাগুলোয় মনের যন্ত্রণা বেরিয়ে আসত। মওদুদ একসময় চাইলে অনেক কিছু করতে পারতেন। ক্ষমতার বিভিন্ন আমলে নোয়াখালী অঞ্চলের বড় ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তিনি। শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের বিকাশে উৎসাহ জোগাতেন সর্বস্তরের ব্যবসায়ীকে। শিল্পে বিনিয়োগ করতে বলতেন ব্যবসায়ীদের। মওদুদের মৃত্যুর পর একজন বড় শিল্পোদ্যোক্তা বলেছেন, শিল্প-বাণিজ্যের বিকাশে মওদুদ কাজ করেছেন। কোনো চাওয়া ছিল না। বলতেন, শিল্প হলেই কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশ এগিয়ে যাবে। আমলাতন্ত্র সব আটকে রাখতে চায়। বেসরকারি খাতকে থামিয়ে রাখতে চায়। তারা ফিরে যেতে চায় কমিউনিস্ট যুগে। শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ না হলে দেশ এগোবে না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতের বিকাশ ঘটাতে হবে। এরশাদ আমলে তিনি শিল্পের বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। এ কারণে ব্যবসায়ীরা তাঁকে মনে রেখেছেন। স্মরণ করছেন।
মওদুদ আহমদ একজন সফল আইনজীবী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। ষাটের দশকে কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। আইন পেশায় ছিলেন বলে ঐতিহাসিক মামলাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছিলেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার একজন আইনজীবী ছিলেন। ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে সামনেই ছিলেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিদেশি সাংবাদিকরা তাঁর কাছ থেকে জানতেন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী পরিকল্পনার কথা। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সরকারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিলেন। উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ছিলেন। ক্ষমতার সর্বোচ্চ দেখেছেন। আবার সবকিছু হারিয়েছেন। এমনকি দীর্ঘদিন বসবাস করা বাড়িটিও ছাড়তে হয়েছে। তার পরও মুখের হাসি যেত না। ভদ্রতাবোধটা ধরে রাখার চেষ্টা করতেন। কারও সমালোচনা করলেও শালীনতা ছিল। জীবনের সুখের প্রাপ্তি আর দুঃখকষ্ট দুটোই সামলিয়েছেন নীরবে।
মওদুদ আহমদের সঙ্গে পরিচয় হয় ১৯৯১ সালের সংসদে। সে সংসদ ছিল স্বাধীনতার পর সবচেয়ে প্রাণবন্ত। ডাকসাইটে অনেক এমপি ছিলেন। তাঁরা সংসদ জমাতেন। মওদুদ তাঁদের একজন ছিলেন। স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলীও চাইতেন সংসদে হইচই, বিতর্ক হোক। শেখ রাজ্জাক আলী বিরোধী দলকে ফ্লোর দিতেন পয়েন্ট অব অর্ডারে। বিরোধী দলে তোফায়েল আহমেদ যখন তখন ফ্লোর নিতেন। মিজানুর রহমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, কাজী জাফর আহমদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন জাতীয় পার্টিতে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সুধাংশু শেখর হালদার সংবিধান আর কাউলের ব্যাখ্যায় ঝড় বইয়ে দিতেন। রাজনৈতিক বক্তৃতায় ছিলেন আবদুস সামাদ আজাদ, মোহাম্মদ নাসিমসহ অনেকে। বিএনপিতে অনেক সিনিয়র সদস্য ছিলেন। জুনিয়র ব্যারিস্টাররাও কম যেতেন না। দুই দলেই একদল তরুণ এমপি ছিলেন উত্তাপ ছড়াতে। বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন সংসদ উপনেতা। খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন চিফ হুইপ। মওদুদ আহমদ আর তোফায়েল আহমেদ নিজেরা বিতর্কে জড়িয়েছেন বারবার। ব্যক্তিগত আক্রমণও বাদ যায়নি। আবার পরে সব ঠিক হয়ে যেত। সাংবাদিক গ্যালারিতে টানটান উত্তেজনা নিয়ে আমরা অপেক্ষায় থাকতাম। আর উপভোগ করতাম প্রাণবন্ত সব আলোচনা। গণতন্ত্রের একটা শোভা ছিল। এখন সেই গণতন্ত্র নেই, সেই সংসদও নেই। সবকিছু বদলে গেছে।
সবচেয়ে ভালো লেগেছে মওদুদের মৃত্যুর পর নোয়াখালীর রাজনীতির ইতিবাচক অবস্থান দেখে। সব দলের, মতের মানুষ একসঙ্গে জানাজায় অংশ নিয়েছেন। শোক জানিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। বসুরহাট পৌরসভা আলাদাভাবে শোক পালন করেছে। ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। জানাজায় আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল করিম চৌধুরী ও মির্জা কাদেরের বক্তব্য টিভিতে দেখেছি। তাঁরা দুজনই প্রশংসা করেছেন মওদুদের কর্মজীবনের। মৃত্যুর পর একজন মানুষের আর কিছু থাকে না। তাকে সম্মান জানিয়ে কারও ছোট হওয়ার কিছু নেই। একসময় দলমত-নির্বিশেষে রাজনীতিবিদদের নিজেদের মাঝে একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। এখন সে সংস্কৃতি নেই। রাজনীতিবিদরা সামাজিক অনুষ্ঠানে ভিন্নমতের কারও সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন না। কেউ কারও জন্মদিন, বিয়ে, সুন্নতে খতনা, জানাজা, দাফন অনুষ্ঠানে যোগ দেন না। সৌজন্য বলে কিছু নেই। পরস্পরের সম্মানবোধটুকু চলে গেছে। সামাজিকতা বলে একটা কথা আছে। রাজনীতিতে সেই কথাটুকুও নেই। ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা কারাগারে একসঙ্গে ছিলেন। একসঙ্গে খেতেন। তাস খেলতেন। সিনেমা, টিভি দেখতেন। নামাজ পড়তেন। এখন সবাই সবকিছু ভুলে গেছেন। এ কথা ঠিক, রাজনীতিতে নেতিবাচকতার শুরু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর। আর প্রতিবেশীর সঙ্গে অশুভ সম্পর্ক তৈরি করেছে চট্টগ্রামে বাবর আমলের অস্ত্র উদ্ধার। বিএনপি, জামায়াতকে এসব ঘটনার খেসারতও দিতে হয়েছে। আগামীতে আরও অনেক দিয়ে যেতে হবে পুরো রাজনীতিকে। রাজনীতির ক্ষতিটা রাজনীতিবিদরা করেন। অন্য কেউ নন।
লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
এএটি