ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

বঙ্গমাতা স্মরণে

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২১
বঙ্গমাতা স্মরণে

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমি এ মহিয়সী নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে কার্যকর অবদান রেখেছেন।

আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অসামান্য ও অবিস্মরণীয়।

বঙ্গবন্ধু ১৪ বার কারাবরণকালীন সময়ে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তায় স্থির এবং অবিচল থেকে বিচক্ষণতার সাথে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। দেশের ঐ দুঃসময়ে বেগম মুজিব শুধু পরিবারের দেখাশোনাই করেননি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বেগবান রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। ষাট এর দশকে পাকিস্তান-বিরোধী আন্দোলনে বেগম মুজিব প্রতি মূহুর্তেই বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামের প্রতিটি স্তরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে তা বিরল ঘটনা।

বেগম মুজিব ছিলেন একজন রত্নগর্ভা নারী। তিনি তার ছেলে-মেয়েদের শিক্ষিত ও আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর দুই সুপুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল ছিলেন রণাঙ্গনের অকুতোভয় বীর যোদ্ধা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও একজন বিদূষী নারী এবং সফল রাষ্ট্রনায়ক। এসবই তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

বলা হয়ে থাকে প্রত্যেক সফল ব্যক্তির সাফল্যের মূলে একজন নারীর ভূমিকা থাকে। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতির জনক হয়ে উঠার পেছনে যে মহিয়সী নারীর ভূমিকা রয়েছে তিনি আর কেউ নন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব।

১৯৩০ সালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় পিত্রালয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন নিরহংকারী। স্বামী একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও খুবই সাদামাটা জীবন-যাপন করতেন তিনি। পার্থিব বিত্ত বৈভব ও যশ খ্যাতি তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি কখনোই।

তবুও স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্র তাঁকে বাঁচতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বামী-পুত্র, পুত্রবধুসহ নির্মমভাবে শহীদ হন। পৃথিবীর ইতিহাসে এ এক কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাঙ্গালী নারীদের জন্য যে আদর্শ রেখে গেছেন তা যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আমি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক: জাতীয় সংসদ উপনেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।