ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

পিলখানা নৃশংসতা : স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ

সাইফ বরকতুল্লাহ, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২
পিলখানা নৃশংসতা : স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ

স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ:

কী যে বিষন্ন লাগছে। সমস্ত চরাচরে যেন ঢেকে আছে বিষাদে।

কয়েকদিন থেকে আমার মনটা ভাল নেই। আমি গিয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। সেনা অফিসারদের লাশ দেখেই আর বাঁধ মানলনা কান্না। গত কয়েকদিন আগেওতো এরা প্রত্যেকে ছিলেন একেকজন ব্যক্তি। প্রত্যেকের ছিল একেকটা আকাশ। এঁদের প্রত্যেকের জন্মের পরে আজান দেওয়া হয়েছে। বাবা-মা ভাইবোন আত্মীয় পরিজন নিয়ে প্রত্যেকের আছে বেড়ে ওঠার ইতিহাস। স্কুলে গিয়ে দুষ্টুমি কিংবা অসাধারণ কোনো কৃতিত্বের গল্প। মেধাবি একেকজন মানুষ ছিলেন এঁরা। অনেকেই ক্যাডেট কলেজের চৌকস ছাত্র। বিতর্ক, লেখালেখি, সংস্কৃতি চর্চায় ছিলেন উজ্জ্বল। অথচ মাত্র ৩৩ ঘন্টার মধ্যেই হলিখেলায় স্তব্ধ বাতাস।

দুই
২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার। সকাল থেকেই দাবি আদায়ের নামে বিডিআর জওয়ানেরা সদর দফতরে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায়। তারা দরবার হলে গুলি করে পদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। অনেকের মরদেহ নর্দমায় ফেলে দেয়। এঁদের মরদেহ পরে নদীতে ভাসতে দেখা যায়। পদস্থ কর্মকর্তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভেতর জিম্মি করে নির্যাতন চালানো হয় বলে জানা যায়। দীর্ঘ সময় তাদের অভুক্ত অবস্থায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে উশৃঙ্খল জওয়ানেরা। অনেক বাড়িঘর ও যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। তাদের গুলিতে সদর দফতরের বাইরেও অনেক হতাহত হয়।

তিন
২৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। ৩৩ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার পর বিডিআর জওয়ানদের আত্মসমর্পনের মধ্যদিয়ে তাদের রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের অবসান হয়। কয়েক দফায় দীর্ঘ আলোচনার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিডিআর সদর দফতরের সব জওয়ান তাদের অস্ত্র পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর পরই পুলিশ আলো নিভিয়ে সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

চার
বাতাস ভারি হয় কান্নায়
ছবির মত মানুষ। টেলিফোন করেছিল তার প্রিয়তমা স্ত্রী সাথীকে। বলেছিল, সাথী দেখা হলেতো ভাল, না হলে ক্ষমা করে দিও। আর হুইল চেয়ার থেকে যেন তোমার হাত না সরে! আমৃত্যু এই কথাটা রাখবে তুমি সাথী! মেজর হুমায়ুন হায়দার পাবলো। তাঁর ছেলের নাম রেখেছিল ঋত্বিক। ঋত্বিক হুইল চেয়ারে দিন কাটায়। রাতে শুধু বিছানাতে ঘুমায়। আর আছে রূপন্তি। পাবলোর রাজকন্যা। ৬ মাসের মত বয়স। সাথী এখন কী করবে? ফরেন মিশনসহ সব ধরনের ইনকাম জড়ো করে পাবলো ঋত্বিকের পেছনেই খরচ করত। দারুনভাবে অসুস্থ ছেলেটা যদি একটু ভাল থাকে। আজ পাবলো নেই। ছোট্ট রূপন্তিকে নিয়ে দুর্গম সংসার যাত্রায় হুইল চেয়ারের পেছনে কীভাবে থাকবে এখন সাথীর শক্ত হাত ?

পাঁচ
“ওরা আমাদের ডিজি স্যার শাকিল আহমেদকে হত্যা করেছে। আমি দরবার হলে ভয়ানক বিপদে আছি। তোমরা ভাল থেক। ” এই ছিল বিডিআর সদর দফতর পিলখানায় নিহত মেজর আহমেদ আজিজুল হাকিম পলাশের জীবনের শেষ কথা। স্ত্রী আকলিমা খাতুন রেবার সঙ্গে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে বিডিআরদের হাতে জিম্মি অবস্থায় ফোন করে কথা বলেন মেজর পলাশ। কিন্তু ফোনের কথা শেষ না হতেই স্তব্ধ হয়ে যায় তার কথা। শতবার চেষ্টা করেও পলাশের কথা আর শোনা যায়নি। হয়ত সে সময়েই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনটি চালু থাকায় রেবা শুনেছেন সেখানকার অন্যদের আর্তনাদ আর প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ। প্রায় ৫ মিনিট পর মেজর পলাশের মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরের দরবার হলের ভেতরে কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নারকীয় শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয় সদা হাস্যোজ্জল মেজর পলাশকে।

ছয়
২৫ ফেব্রুয়ারি অফিসে যাবার কিছুক্ষণ পরেই স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দেন মেজর মোশাররফ। স্ত্রী লিপি রিসিভ করতেই শুনতে পান গুলির শব্দ। মোশাররফ লিপিকে জানান, দরবার হলে জওয়ানরা এ্যাটাক করেছে। তুমি একটু সাবধানে থেক। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রেখ। এই বলে ফোনটি রেখে দেন মোশাররফ। এরপর মোশাররফ ফোন করেন ছোট ভাই মোবারক হোসেনকে। মোবারক বলেছেন, পিলখানায় যুদ্ধাবস্থা, তুই তোর ভাবি আর আকিবকে বাঁচা। এরপর আর শত চেষ্টা করেও মোবারক ও লিপি মোশাররফের ফোনে সংযোগ পাননি। সন্তান সম্ভবা লিপি নিজের অসুস্থতার কথা বলে কোনো মতে রেহাই পান সেদিন। পরেরদিন পিলখানা থেকে বেরিয়ে এলেও স্বামীর আর কোনো খোঁজ পাননি। ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে দশটার দিকে পিলখানার ১৩ ব্যাটালিয়নের কাছ থেকে যে ১০টি লাশ পাওয়া যায় সেখান থেকে শনাক্ত করা হয় মেজর মোশাররফের মৃতদেহ। পরেরদিন গ্রামের বাড়িতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।

সাত
২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ছেলে লে. কর্নেল রবি রহমানের ফোন পেয়েছিল বাবা ফয়জুর রহমান। ফোনে সন্তানের ভয়ার্ত কণ্ঠ বিচলিত করে তোলে তাকে। বাবাকে রবি বলেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ করেছে। সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করা হয়েছে। সন্তানের এ খবরে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। ৫  মিনিট পর আবারও ফোন আসে। লে. কর্নেল রবি বাবাকে বললেন, বাবা আর মনে হয় তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে না। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। যদি বেঁচে না থাকি তাহলে মায়ের পাশে আমাকে কবর দিও। তারপর রবির সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি বাবার। বারবার চেষ্টা করেও তার পরিবারের সদস্যরা কর্নেল রবি রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেনাবাহিনী পিলখানায় ঢুকে যে গণকবর আবিষ্কার করে তার মধ্যে পাওয়া যায় লে. কর্নেল রবির মৃতদেহ।

আট
নীড়ে আর ফেরা হল না
নীড়-বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের টিকরপাড়ার কাউদিয়া গ্রামের একটি বাড়ির নাম। এলাকার লোকজন বলত সুখের নীড়। এই পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। অথচ এই সুখের নীড় থেকেই এখন ভেসে আসছে শুধুই কান্নার শব্দ। প্রায় ২ বছর আগে ৩৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিও হিসেবে এনায়েত বিডিআরে যোগদান করেন। বাবা মরহুম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী ঢাকায় ব্যবসা করার সুবাদে এনায়েতরা সব ভাই-ই উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ঢাকার বাসিন্দা হয়ে যান। তবু ছুটি পেলেই বিয়ানী বাজারের আপন নীড়ে মায়ের কোলে ছুটে আসতেন এনায়েত। মায়ের প্রতি এত যার টান তার মুখটা শেষবারের মত দেখা হল না মায়ের। এনায়েতের মরদেহটাও আনা গেল না নীড়ে। গত ১ মার্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নয়

আমরা মারত্মক বিপদে আছি
২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিডিআর সদর দফতরের দরবার হলে গুলিবর্ষণ শুরু হওয়ার পর শেষবারের মত লে. কর্ণেল এলাহী মঞ্জুরের সঙ্গে কথা হয় তার স্ত্রী তান্নি মঞ্জুর চৌধুরীর। এ সময় মঞ্জুর ফোন করে স্ত্রীকে জানান, আমরা মারাত্মক বিপদে আছি। আমরা ৫ জন অফিসার একটি বাথরুমে লুকিয়ে আছি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে তুমি সাবধানে ও নিরাপদে থেক। এই ছিল একান্ত স্বজনদের সঙ্গে শেষ কথা। এরপর এলাহী মঞ্জুরের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি স্বজনেরা। গত ৪ মার্চ ক্ষতবিক্ষত দেহের আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে যে মৃতদেহগুলো পড়ে আছে সেগুলোর একটি মঞ্জুরের।

দশ
কোথাও গেলে তো আব্বু আবার ফিরে আসে,
মারা গেলে কেন ফিরে আসবেন না ?
আমি ভাল আছি, চিন্তা করনা। ২৫ ফেব্রুয়ারি ১১টা ৪৫ মিনিটে পিলখানায় আটকা অবস্থা থেকে স্ত্রী উর্মিকে মোবাইল ফোনে এই কথাটা বলেছিলেন লে. কর্নেল সাজ্জাদুর রহমান। কিন্তু উর্মির চিন্তা তো আর এসব নিষেধাজ্ঞা মানতে চায়না। তার দুশ্চিন্তাগুলো সেদিনের বিডিআর জওয়ানদের মতোই উশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত শারমিন নিশাত উর্মির দুশ্চিন্তাই সত্যি হল। লে. কর্নেল সাজ্জাদ স্ত্রীকে দেয়া শেষ কথাটা আর রাখতে পারলেন না। ভাল আর থাকা হল না সাজ্জাদের। বিভ্রান্ত জওয়ানদের বীভৎসতায় পিলখানার গণকবরের ঘটনার প্রায় ৫৮ ঘন্টা পর খোঁজ মেলে সাজ্জাদুর রহমান দোলনের মরদেহের। দোলন আর উর্মি দম্পতির দুই ছেলে ইত্তেশাদ (১১) ও ইশাদ (৭) এর দিন কাটছে বাবার পথ চেয়ে। ইত্তেশাদ রাইফেল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ইশাদকে তার মা বলেছেন বাবা মারা গেছেন। ইশাদ জিজ্ঞেস করেছে-মারা যাওয়া থেকে কখন আসবেন ? আব্বু তো প্রায়ই অনেক জায়গায় যান। শান্তি মিশনে, যুদ্ধে, বাজারে-সব জায়গা থেকেই তো ফিরে আসেন। মারা যাওয়া থেকে আসবেন না কেন ? সরল শিশুটির জিজ্ঞাসা।

এগার
বইমেলায় যাওয়া হল না সাইতী ও সুহার
“দেখ, তোমাদের সময় দিতে পারি। চাকরিজীবনে কাটিয়েছি বিদেশে। আর এখন চলছে বিডিআর সপ্তাহ। সেজন্য এই কয়টা দিন ব্যস্ত থাকব। তারপরও কথা দিচ্ছি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সময় দেব। সুহা এবং তোমাকে নিয়ে যাব বই মেলায়। ” কথাগুলো বলেছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর আসাদুজ্জামান তার স্ত্রী সাইয়ারা সুলতানা সাইতীকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু মেলায় আর যাওয়া হয়নি। ঘাতক বিডিআর জওয়ানদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন মেজর আসাদ। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ছিল তার ৬ষ্ঠ বিবাহ বার্ষিকী। তার আগেই তিনি প্রাণ হারান। রেখে যান স্ত্রী এবং কন্যাকে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পিলখানায় গণকবর থেকে মেজর আসাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বার
দেখার কেউ নেই
“বাবা বলেছিলেন এখন লেখাপড়া কর, দরবার থেকে ফিরে খেলা দেখাতে নিয়ে যাব, বাসায় অনেক আঙ্কেল এসেছিলেন কিন্তু বাবা আর আসেননি। “ এভাব কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিল ঢাকার পিলখানার ঘটনায় নিহত দরবার হলের ক্লার্ক নায়েক বসির উদ্দিন বিশ্বাসের ৪ বছর বয়সী শিশুপুত্র অপু। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বসিরের (ব্যাচ নং-৬০৮৩৫) লাশ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মতনেজা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখন তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে দেখার কেউ নেই।

তের
বিপ্লবের মোড়কে
মানবতার অপমান
সিডরের মত হঠাৎ আসা এ ঝড় সামাল দেওয়ার মত সাহস ও শক্তি হারিয়ে গেছে এ পরিবারগুলোর। আমরা স্তব্ধ, শোকাহত, হতবাক। কোনো সামরিক যুদ্ধ নয়, কোনো সেনা অভ্যুত্থান নয়, তথাকথিত বিপ্লবের রঙচঙে মোড়কে স্রেফ খুন করা হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা আর তাদের পরিবার পরিজনকে। সাধারণ ক্ষোভকে পুঁজি করে কূটকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে ডিজি শাকিল আহমেদসহ বিডিআরে কর্মরত সেনা অফিসারদের। ক্ষোভের কারণ থাকতে পারে, অসন্তোষ থাকতে পারে, কিন্তু তা ইন্ধন জোগাবে একটি গণহত্যার- এটি মেনে নেওয়া যায়না।

শেষ কথা
অশ্রু মুছে তাকাতে হবে সামনে ...

এত এত সফল উজ্জ্বল মেধাবী চৌকস মানুষ হারিয়ে সত্যি সত্যি কাঁদছি। আজকের আকাশটা যেন ভারি হয়ে আছে, প্রকৃতিও যেন কাঁদছে। কিন্তু বুঝি, শুধু কাঁদার সময় এটা নয়, কান্না মুছে জাতিকে আবার সামনের দিকে তাকাতে হবে। সরকারের সামনে, নেতাদের সামনে, সেনাবাহিনীর সামনে, বিডিআরের সামনে কত যে করণীয়। গণতন্ত্র নস্যাৎ, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘ্ন করা আরও কত যে গভীর সুদূর প্রসারী অসদুদ্দেশ্য থেকে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে ! তদন্তের মাধ্যমেই সেটা উদ্ঘাটন করা সম্ভব। আর গণতন্ত্রকে রক্ষা করে যেতে হবে চোখের মণির মত। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ও সামরিক বাহিনীর ভূমিকা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের মানুষের একটা বৈশিষ্ট্য হল আমরা অপরাজেয়। দুর্যোগে দুর্বিপাকের আঘাতে খানিকক্ষণের জন্য হয়ত হেলে পড়ি, কিন্তু আবার উঠে দাঁড়াই আমরা। পরাজয় মেনে নিই না। আমাদের জাতীয় জীবনের একটা বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি বটে কিন্তু এবারও বাংলাদেশের মানুষ হেরে যাবে না। আমরা আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। শুধু পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের আর ফিরে পাবে না, এই কথা ভাবলেই আবার আমার চোখটা জলে ভেসে যায়।

২৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে আমরা অশ্রুসিক্ত নয়ন ও কৃতজ্ঞচিত্তে নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

সাইফ বরকতুল্লাহ : সাংবাদিক ও গবেষক

বাংলাদেশ সময় ১১০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।