মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে বাসায় ফিরবার পথে হঠাৎ মনে পড়লো গিন্নি সকালে বলেছিল যে কিছু সব্জি কিনতে হবে। রিকশার দিক পরিবর্তন করিয়ে এক আধুনিক বাজারের সামনে নামলাম।
আমার মেজাজ কিন্তু খুব বিগড়ে গেল। সিদ্ধান্ত নিলাম এর প্রতিবাদ করতে হবে। ব্যবস্থাপকের ঘরের সামনে আসলাম। দরজার সামনে একজন দাঁড়িয়ে ছিল। দেখে মনে হলো একটু ওপরের পদবির কেউ হবে। কোনো ভূমিকা না করে সরাসরি বললাম। ভাই আমরা কি এখন ইন্ডিয়াতে আছি? কোন শহর এটা দিল্লি না মুম্বাই? ভ্যাবাচ্যাকা খেল লোকটা। আমি বললাম, ভাই হিন্দি গান অবশ্যই শুনবেন, কিন্তু সেটা বাসায় অথবা আপনার ব্যক্তিগত মিউজিক ডিভাইসে। এটা একটা জনতা পরিবেষ্টীত পরিবেশ, এখানে নিজের দেশের নিজের ভাষার গান বাজানোটাই আমাদের মূল্যবোধের পরিচয় দেবে। দয়া করে আমাদের নিজস্ব কিছু পরিবেশন করুন। লোকটা ভাবলেশহীন চেহারা নিয়ে বললো দুঃখিত(সরি) স্যার। আমি আমার সদাই পাতি শেষ করে দেনা চুকিয়ে দিয়ে বাজারের থলে হাতে যেইনা প্রধান দরজা পার হয়েছি অমনি বিকট আওয়াজে আবারও বেজে উঠলো গান। এবারের গান Bee Gees band এর `Staying Alive` গানটি। আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। নিজেকে অসহায় লাগলো খুব। গানটার কথার(Staying Alive) মতই মনে হলো আসলেই আমরা বেঁচে আছি, কিন্ত দেশপ্রেম, ভাষাপ্রেম, মূল্যবোধ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে। এটাকে কি বেঁচে থাকা বলে নাকি বলে টিকে থাকা।
লেখক- ইমরান আহমেদ, লালমাটিয়া, ঢাকা
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১২