এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির যে প্রক্রিয়া চালু আছে, তা বর্তমানে অনলাইনে হলেও অত্যন্ত ভোগান্তিপূর্ণ। একবার ভুল হলে দুই মাসের আগে আর আবেদন করা যায় না।
অনলাইন আবেদনে ৩৩টি বা তার চেয়ে বেশি কাগজ স্ক্যান করে আপলোড করতে হয়। থানা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, বিভাগীয় উপ-পরিচালকসহ স্তরে স্তরে আবেদনটি অনুমোদনের পর সর্বোচ্চ স্তরে অনুমোদিত হলে ইনডেক্স নম্বর পাওয়া যায়। আর এ নম্বর পাওয়া মানেই এমপিওভু হওয়া।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তরের মধ্যে কোনো একজন যদি আবেদনটি বাতিল করে দেন, তাহলে সেই মাসে আর এমপিও হয় না। আগের এমপিও আবেদনের জন্য আবার দুইমাস পরে আবেদন করতে হয় নতুন করে। ধরুন একবার বিভাগীয় পর্যায় থেকে একজনের অনলাইন এমপিও আবেদন বাতিল হলো, আবার সে দুই মাস পরে আবেদন করলো কিন্তু এবার তার আবেদন আগের পর্যায়ের নিম্নস্তর থেকেও রিজেক্ট হতে পারে। ধরুন একজনের ৩৩টা কাগজপত্রের মধ্যে ১টা কাগজে সামান্য সমস্যা বা ত্রুটি খুঁজে পেয়ে আবেদন ফাইল রিজেক্ট করা হলো, তারপর দুমাস পরে তার পুরো ৩৩টা কাগজসহ আবার উপজেলা লেভেল থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে বারবার কাগজ আপলোডের বিষয়টি ভীষণ দুঃখজনক। কারণ একটা কাগজের ত্রুটি থাকতে পারে। তা ত্রুটিমুক্ত করে রিপ্লেস করে নেওয়ার ব্যবস্থা ডিজিটাল মাধ্যমে সহজ ও স্বাভাবিক ব্যাপারই হওয়া উচিৎ।
প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ পেরোনোর পরে তৃতীয় ধাপে বাতিল হলে আবার কেন প্রথম ধাপ থেকে নতুনভাবে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে? এটা কেমন নিয়ম? ডিজিটাল মাধ্যমে বা অনলাইনে কোনো অফিসিয়াল কাজ করা হয় সুবিধার জন্য এবং দ্রুততার সঙ্গে জটিল কাজও সহজে সম্পাদনের জন্য। কিন্তু এসব কারণে অনলাইনে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ব্যাপারটি আমার কাছে অস্বাভাবিক রকমের ভোগান্তিকর ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।
আরেও দুঃখের বিষয় হলো, একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারের সুপারিশে নিয়োগ পাওয়ার পর চাকরিতে যোগ দেওয়ার প্রথম মাস থেকেই বেতন হাতে না পাওয়ার কষ্ট অনেক, যে কষ্ট আমি বর্তমানে অনুধাবন করছি। এমপিও প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটা আরেও সহজ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে আমি গত মে মাসে ‘ট্রেড ইন্সট্রাক্টর’ (কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি) পদে ভাংগা কাদিরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ এ যোগদান করি।
দুইবার আবেদন করার পরও এখন পর্যন্ত আমি এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। এমপিওভুক্ত না হওয়ার কারণে আমি কোনো বেতনও পাইনি। ফলে আমার অত্যন্ত অর্থকষ্টে দিন যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কবে এমপিওভুক্ত হতে পারব সেই দুশ্চিন্তায় প্রচণ্ড মানসিক কষ্টে দিন কাটছে।
তাই সহজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমার মতো সবার এমপিওভুক্তি যেন দ্রুত সম্পন্ন হয় সে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
মো. আসিফ উদ দৌলাহ্
ট্রেড ইন্সট্রাক্টর (কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি)
ভংগা কাদিরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
থানা: কাজিরহাট, উপজেলা: মেহেন্দিগঞ্জ
জেলা: বরিশাল