ঢাকা, বুধবার, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান আ.লীগের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান আ.লীগের ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। যে কোনো ষড়নযন্ত্র প্রতিহত করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের রাস্তায় র‌্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ তারা এ আহবান জানান। ঢাকা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ র‌্যালির আয়োজন করে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলীয় সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে পর বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে এ র‌্যালি শুরু হয়। এতে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

এদিকে র‌্যালিতে অংশ নিতে দুপুর থেকেই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন থানা ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে আসতে থাকে। দুপুরের পর হাইকোর্ট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়ক জনসমুদ্রে রূপ নেয়। আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী, সমর্থকরা ব্যানার ফেসর্টুন, জাতীয় পতাকা, লাল সবুজ টিশার্ট পড়ে র‌্যালিতে অংশ নেয়। তারা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। বিজয় র‌্যালিতে দুটি হাতি নিয়ে আসা হয়। এছাড়া র‌্যালিতে ঘোড়ার গাড়িতে চড়েও নেতাকর্মীরা অংশ নেন। র‌্যালিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে শুরু করে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কলাবাগান হয়ে মিরপুর রোড ধরে ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পৌঁছে শেষ হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ৭১ এর খুনি ও ২১ আগস্টের খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের আমরা পরাজিত করব। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। খেলা হবে, খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। আওয়ামী লীগ আন্দোলনে খেলবে, নির্বাচনেও খেলবে। সেমিফাইনাল সামনে, তারপর ফাইনাল খেলা। ফাইনালে আন্দোলনেও তারা হারবে। ফাইনাল খেলা হবে নির্বাচনে, নির্বাচনেও তারা হারবে ইনশাআল্লাহ।  

বিজয় র‌্যালিতে জনসমাগমের বর্ণলা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যপক জনসমাগম। নিজে গাড়ি নিয়ে আসতে পারিনি, আমি মোটরসাইকেলে করে এসেছি। জনগণ, স্লোগান আর স্লোগান। বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষার সব ঢেউ, আজকে এই উত্তাল সমাবেশে। সবাই প্রস্তুত, খেলা হবে ভোট চুরি, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, একাত্তর ও পচাত্তরের খুনিদের বিরুদ্ধে।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ১০ তারিখে লাল কার্ড দেখায়া দিছে। কি পাইছে? পাইছে অশ্বডিম্ব। ৩০ তারিখেও ঘোড়াডিম পাড়বে। যদি তারা সফল হয় ঘোড়া সেদিন দিন পারবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনো দিকে কান দেবেন না। শান্তিপূর্ণ অবস্থান করবেন। প্রস্তুত হয়ে যান, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই, আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতাচ্যূত করা যাবে। নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট না দেয় আমরা সালাম করে চলে যাব। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে জনগণের ভোটে বিজয়ী হতে হবে। আপনারা (বিএনপি) অনেক ষড়যন্ত্র করেছেন। এবার যদি ষড়যন্ত্র করেন শিকড় উপড়ে ফেলে নির্মূল করব। এই শিখা চিরন্তণে দাঁড়িয়ে আজকে আমরা শপথ নিচ্ছি ইনশাআল্লাহ তোমাদের শেকড় আমরা উপড়ে ফেলব।

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাড. জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজকে তারা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবব্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশক পাকিস্তান বানানোর দুঃস্বপ্ন দেখছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, রাজাকার ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করব- এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌঘুরী, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সধারণ সম্পদাক এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পদাক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এসকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।