ঢাকা, বুধবার, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে আ.লীগ বার বার হত্যা করেছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
‘ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে আ.লীগ বার বার হত্যা করেছে’

ঢাকা: ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে আওয়ামী লীগ সরকার বার বার হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।



তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, বাংলা ভাষা অর্জন করেছি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি কিসের জন্য বা কি তার চেতনা ছিল? গণতন্ত্র। আজকে যখন ৫১ বছর পরে আলোচনা করতে দাঁড়াই তখন সবাই বলি দেশে আজ গণতন্ত্র নাই, কেউ বলবে না গণতন্ত্র আছে। শুধু আমরা নই, আজকে আন্তর্জাতিক বিশ্বও বলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই।

দুঃখজনক হলেও সত্যিই যে, ভাষা আন্দোলনের চেতনা বলেন আর সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলেন গণতন্ত্র এদেশে বার বার হত্যা হয়েছে। প্রথম হত্যা হয়েছে আজকে যারা ক্ষমতায় আছে এই আওয়ামী লীগ, যখন স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় ছিল তখন তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে একদলীয় বাকশাল করে। আজকে আবার এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, ১৪ বছর গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। শুধু সংসদ নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও জনগণ ভোট দিতে পারে না। ভোট আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়। গণতন্ত্র আজকে এভাবে হত্যা হয়েছে আওয়ামী লীগের সময়ে। ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল, ভাষা কিসের জন্য? একজনের স্বপ্ন, একজনের যে চিন্তাধারা সেটাকে মুক্ত স্বাধীনভাবে যদি আমি প্রকাশ করতে চাই সেটাই হবে আমার ভাষার ব্যবহার। আমি যা চিন্তা করি সেটা স্বাধীনভাবে বলতে না পারি তাহলে এই ভাষার কি তাৎপর্য আছে? ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সেটাও ছিল যে, আমি আমার মাতৃভাষায় যেভাবে চিন্তা করব, যেভাবে আমি স্বাধীনভাবে মুক্ত মনে চিন্তা করব সেই স্বাধীন কথাটি বলার অধিকার আমার থাকবে। আজকে সেই কথা বলার অধিকারও নাই।

আওয়ামী লীগ মুক্ত চিন্তা রুখতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বারংবার হস্তক্ষেপ করেছে বলেও অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।

তিনি বলেন, প্রথম ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন নিউজ পেপারস সংশোধনী অ্যাক্ট করে সারাদেশে সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে চারটি সংবাদপত্র রেখেছিল। হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়েছিল। দ্বিতীয়বার যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ১৯৯৯ সালে টাইমস-দৈনিক বাংলা ট্রাস্ট্রের চারটি পত্রিকা বন্ধ করে দিল। তারপরে দেখলাম, ২০১০ সালে ২৭ এপ্রিল চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দিল।

২০১৩ সালে দৈনিক আমার দেশ বন্ধ, ২০১৩ সালে দিগন্ত টেলিভিশন ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে পত্রিকা দৈনিক দিনকালের প্রকাশক, গতকাল তারা (সরকার) এই পত্রিকাটি বন্ধ করে দিয়েছে। অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তার মাধ্যমকে এই সরকার যখনই সুযোগ পেয়েছে তখনই বন্ধ করে দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার হটানোর ১০ দফা দাবির চলমান আন্দোলন সফল করতে জনগণকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান মোশাররফ।

সভায় সভাপতিত্ব করার কথা ছিল দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। কিন্তু তিনি হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দলের প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল হাই, কবি মাহবুব হাসান ও আনম ফজলুল হক সৈকত বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।