ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে আদালতে আনা ও নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
অতিদ্রুত রিজভীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায় ইউট্যাব।
নেতারা বলেন, এমনিতেই রিজভী অসুস্থ। তার ওপর তাকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা ও নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রিজভীর স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, রিজভী একজন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি। তাকে সর্বদা লাঠির ওপর ভর দিয়ে চলতে হয়। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হলে অন্যের সাহায্য দরকার হয়। এমন একজন ব্যক্তিকে সেই কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুরান ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে এবং দুপুর পৌনে ১২টার দিকে একইভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আসলেই অমানবিক, অসাংবিধানিক, নিষ্ঠুর আচরণ ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
ইউট্যাবের নেতারা বলেন, এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি কারাগারে রিজভী পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন এবং বমি করেন। এমনিতেই তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। মহামারি করোনাকালেও তিনি কয়েকবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় চার মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে খুবই মেপে জীবন-যাপন করতে হয়। অথচ কারাগারের ভেতরে রিজভীকে অসহনীয় পরিবেশে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেওয়ার পর সপ্তাহে প্রায় তিন থেকে চারদিন আদালতে আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। একজন বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিকে এভাবে বার বার কারাগার থেকে আদালত এবং আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার কারণে রিজভী আরও বেশি অসুস্থ হয়েছেন বলেই সর্বমহলে আলোচনা।
তারা আরও বলেন, আমরা জেনেছি, রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা আইভী কারাগারে গেলে তাকে অনেক সময় স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। আদালতেও তাকে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। এ ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। একজন অসুস্থ ব্যক্তির স্ত্রীকেও দেখা করতে না দেওয়াটা চরম অমানবিক। তার ওপর তাকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে আনা-নেওয়া অসাংবিধানিক।
নেতারা বলেন, রিজভী শুধু রাজনীতিবিদন নন তিনি একজন আইনজীবীও বটে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক নির্বাচিত ভিপি। তিনি ৯০’র দশকে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে নিজের জীবনবাজি রেখে প্রাণপণ লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। রিজভীর মতো অসংখ্য ছাত্রনেতা সে সময় রাজপথে নেমে এসেছিল স্বৈরতন্ত্রের পরিবর্তে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে। রিজভী পরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা শিক্ষক সমাজ মনে করি যে, রিজভীর মতো একজন সজ্জন রাজনীতিবিদকে কারাগারে এ ধরনের অমানবিক আচরণ করা ন্যাক্কারজনক। অবিলম্বে রিজভীর নিঃশর্ত মুক্তি এবং কারাগারের বাইরে বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় রিজভীর কিছু হলে তার দায় সম্পূর্ণভাবে কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারকেই বহন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৩
এমএইচ/আরবি