ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার জনগণের জীবন নিয়ে তামাশা করছে: জোনায়েদ সাকি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
সরকার জনগণের জীবন নিয়ে তামাশা করছে: জোনায়েদ সাকি

ঢাকা: বর্তমান জনসম্মতিহীন কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের জীবন নিয়ে তামাশা করছে এমন অভিযােগ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে আগুন জ্বলছে। শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত মানুষ হাস-ফাঁস করছে।

মানুষের হাতে টাকা নেই কিন্তু বাজারদর বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বাজার নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। সরকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে না সিন্ডিকেটই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

শুক্রবার (১০ মার্চ) সকাল ১১টার সময় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন, ঢাকা জেলার ১ম সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি।  

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, অন্যদিকে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আদানি গ্রুপের সঙ্গে অবৈধ বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করছে। যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর ভারতের সমর্থন পাবার জন্যই করা হয়েছে বলে জনগণ মনে করে। এ ধরণের কর্তৃত্ববাদী সরকার সামনের নির্বাচনেও জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় কিন্তু সে সুযোগ তাদের আর জনগণ দেবে না। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এ লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করবো আমরা। সবাইকে সেই লড়াইয়ে আরও ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এবং ঢাকা জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বাচ্চু ভূইয়া যথাক্রমে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন। এরপরপরই সংগঠনের সাম্প্রতিক সময়ে প্রয়াতদের জন্য শোকপ্রস্তাব এবং ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।  

সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি।  

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, ঢাকা উত্তর গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, ঢাকা দক্ষিণ গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ানসহ বিভিন্ন থানার নেতারা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে আবুল হাসান রুবেল বলেন, ঢাকা শহর এখন বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩ জন মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ কিন্তু সরকার এক্ষেত্রে নির্বিকার। বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা চরম আকারে ধরা পড়েছে। সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক বিস্ফোরণের দায় বিরোধী দলের উপর চাপানোর চেষ্টা করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। সরকার উন্নয়নের বাহাদুরী দীর্ঘদিন ধরেই করছেন কিন্তু বাস্তবতা হলো উদ্ধারকাজ চালানোর মতো প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি-লুটপাট ও অর্থপাচারের কারণে দেশ চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। ভাই-ব্রাদারদের লুটপাটের স্বার্থে দেশের বিদ্যুৎখাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কিন্তু সরকার সমস্ত দায় চাপাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উপরে কিন্তু দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার তাদের লুটপাটের কারণেই দেশ আজ ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন। সংকট থেকে মোকাবিলায় এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো ছাড়া মানুষের আর অন্য কোনো পথ নেই। আমরা মানুষকে সেই লক্ষ্য নিয়ে সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, দেশের শ্রমজীবী মানুষকে কেবল জমায়েত হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো দেখে। এটার পরিবর্তণ হতে হবে। এ শ্রমজীবী মানুষরাই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। অবিলম্বে সকল সেক্টরে জাতীয় মজুরির হার নির্ধারণ করে গার্মেন্টসে ২৫০০০ টাকা মজুরি ঘোষণা করুন।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপক রায়, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অঞ্জন রায়, গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় পরিষদ সদস্য আরিফুল ইসলাম, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ বিভিন্ন নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।