ঢাকা: টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বিরুদ্ধে গুম, খুন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, প্রাণনাশের হুমকি, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, বালু মহাল দখল, প্রধানমন্ত্রীর নামফলক ভেঙে ফেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।
অভিযোগকারী মো. আমিনুল ইসলাম টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
সোমবার (৩ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সংসদ সদস্য ছোট মনিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেন আমিনুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদানকারী আব্দুস সালাম পিন্টুর সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে, আমাকে ৪৮টি মামলা দেওয়া হয়েছে। মাসের পর মাস আমি কারাভোগ করেছি। আমার পরিবার দীর্ঘদিন অর্থ সংকট ও অনাহারে ছিল। এখনো অর্থনৈতিক দৈন্য দশার মধ্যে আছে। এত জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনের পরও আমি আওয়ামী লীগের মতাদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। অথচ গত ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় নিজ দলের সংসদ সদস্য ছোট মনির এবং তার বাহিনী দ্বারা প্রতিনিয়ত নির্যাতন, নিপীড়ন, প্রাণনাশের হুমকিতে পরিবার পরিজনসহ আতঙ্কে দিনাতিপাত করছি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘাটাইল-শালিয়াজানী-গোপালপুর-সরিষাবাড়ী জেলা মহাসড়ক উদ্বোধন করেন এবং তার নামে একটি নামফলক স্থাপন করা হয়। কিন্তু মাস অতিবাহিত হওয়ার পর ছোট মনির নামফলকটি ভেঙে নিজের নামে নতুন নামফলক স্থাপন করেন। তার এই ধৃষ্টতাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার কারণে বিভিন্ন সময় তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে হত্যা ও গুমের হুমকি দিয়েছে।
আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম অতি উৎসাহী হয়ে ছোট মনিরের নির্দেশে জনৈক উজ্জলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করেন। যে মামলায় আদালত গত ৫ মার্চ আমার জামিন মঞ্জুর করেন।
এছাড়া ছোট মনির ভূঞাপুর থানা পুলিশকে নিজের কাজে ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন আমিনুল। তিনি বলেন, ভূঞাপুর থানা পুলিশের কাছে ছোট মনিরের বিষয়ে কোনো অভিযোগ করলে পুলিশ সেটি গ্রহণ না করে উল্টো আমাকেই হয়রানি করেছে।
ছোট মনির ও তার ভাই বড় মনিরের বিরুদ্ধে হত্যা পরিকল্পনা, হত্যাচেষ্টা, হুমকি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং অপরাজনীতির অভিযোগ করে আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ছোট মনির শুধু আমাকে হয়রানি করেই ক্ষান্ত হয়নি। তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও গুলি করেছে।
তিনি বলেন, গোবিন্দাসী ঘাটে তার বৈধ বালু ঘাট, যেখানে ২০০ পরিবারের কর্মসংস্থান ছিল, সেটি ছোট মনিরের সন্ত্রাসী বাহিনী দখল করে নিয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে ছোট মনিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এছাড়া ভূঞাপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, এটা অভিযোগকারীর একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য। এর সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে এলে আমরা অবশ্যই সেটি আমলে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ