ঢাকা: ২০ রমজানের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস ও এপ্রিল মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করাসহ নূন্যতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
এ সময়, রানা প্লাজার ঘটনায় জড়িতদের জামিন না দিয়ে শাস্তির দাবিও ওঠে।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সমাবেশ ও মিছিলে এসব দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে সংগঠনের নেতারা মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত যান।
সভাপতির বক্তব্যে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, শ্রমিকদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সরকার বারবার এই কমিটি সেই কমিটি করছে। কিন্তু কোনো কমিটির কাজই হচ্ছে না।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে দাবি জানাতে চাই যে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনুক সরকার। অন্যথায় এই অভুক্ত শ্রমিকদের আন্দোলন সরকার ঠেকাতে পারবে না।
রানা প্লাজার মালিককে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে মন্টু ঘোষ বলেন, আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা রানা প্লাজার দুর্ঘটনা। কিন্তু সেই রানা প্লাজার সোহেল রানাকে গতকাল হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। আমি সরকারের আইনজীবীদের কাছে দাবি জানাতে চাই, আগামী রোববারের মধ্যে যেন এই জামিন আদেশ স্থগিতের ব্যবস্থা করা হয়।
তিনি বলেন, রানা প্লাজার এই মালিক এক হাজারেরও বেশি শ্রমিককে হত্যা করেছেন। তার জামিন হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাকে বাঁচানোর জন্য সরকার ১০ বছরেও তার মামলা শেষ করছে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাতে চাই।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান শামীম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জলি তালুকদার ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
এদিকে, একইদিন সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০ রোজার মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ সব বকেয়া পরিশোধ করাসহ ২৩ হাজার টাকা নূন্যতম মজুরি ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন।
“অত্যাবশ্যক পরিষেবা ক্ষেত্রে ‘ধর্মঘট নিষিদ্ধ করা’ শ্রমিকের অধিকার হরণের শামিল, রানাপ্লাজা হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি সোহেল রানার জামিন বাতিল ও শাস্তির দাবিতে" আয়োজিত এক মানব্বন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, ওয়ার্কার্স পার্টি মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক কমরেড কিশোর রায়, বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি তৌহিদুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান নূর নীরব, সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে উপস্থিত বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা নাসিমুল আহসান দিপু, আব্দুল্লাহ জাফর, নাজমা আক্তার শিরিন, এড. তাহির খাতুন, মনিরা সিদ্দিকা, ফুল বাবু, শামসুল হক সোহাগ, মোরশেদ আলম কাওসার, নুরুন নাহার খানম লুনা, সুমন মিয়া ও বাধন সাহা, মানিক হাওলাদার।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে তোপখানা রোড হয়ে ফেডারেশনের কার্যালয় এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২৩
ইএসএস/আরএইচ