ঢাকা: তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখতেই মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হয়েছে বলে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সোমবারের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় চার্জ গঠন ও বিচার শুরু করায় আদালতের নির্দেশে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলা, প্রহসনমূলক বিচার ও ফরমায়েসি রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত করে আসছে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও মিথ্যা মামলার বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্য হচ্ছে তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানকে রাজনীতির বাইরে রাখা। প্রকৃতপক্ষে এই অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, শুধু জিয়া পরিবাররই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থনকারীর নামে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, কারাগারে নির্যাতন, হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা সারাদেশে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত জনগণ মেনে নেবে না। জনগণের ঐক্য ও দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে বাধ্য করতে হবে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে। বন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি, তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দা রহমানসহ সব নেতা-কর্মীর নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত; নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার গঠন করাই এই সময়ে জনগণের দাবি।
সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণকে এই লক্ষে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করে বিরোধী দলের প্রতি আঙুল তোলা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর কৌশল। প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডই এই অবৈধ সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঘটছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর ও সংগঠনগুলোর তদারকির অভাব, সীমাহীন উদাসীনতা ও দুর্নীতির কারণেই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। এটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল মাত্র।
অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সরকার প্রধানসহ সরকারের মন্ত্রীদের বিএনপিকে দোষারোপ করায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানও ফখরুল।
বৈঠকে আগামী ১ মে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৩
টিএ/আরএইচ