ঢাকা: আওয়ামী লীগ কাকে মনোনয়ন দেবে তা বিএনপি ঠিক করে দেবে কি না- এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কাকে মনোনয়ন দেবে, সেটা কি বিএনপি ঠিক করে দেবে? তা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত। আসলে তারা (বিএনপি) রাষ্ট্র নিয়েই হতাশ। রাষ্ট্রপতি নিয়ে তাদের আশা প্রকাশ করার কোন কারণ তো আমরা দেখি না।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রণীত শ্বেতপত্র ১৯৭১- ডিএফপি মুদ্রিত কপির মোড়ক উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একজন অপরিচিত লোককে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করায় জাতি হতাশ হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চার ইতিহাসে আমি মনে করি একটি নতুন পালক যুক্ত হয়েছে। একজন রাষ্ট্রপতি পর পর দুবার দায়িত্ব পালন করে সফলভাবে সম্মানের সঙ্গে বর্ণাঢ্যভাবে বিদায় নিয়েছেন। পাশাপাশি আর একজন রাষ্ট্রপতি শপথ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, গতকালের অনুষ্ঠানটি সাদামাটা থাকলেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। জাতির ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এই ক্ষমতা হস্তান্তর বা শান্তিপূর্ণ ভাবে বর্ণাঢ্যভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর এটি গণতান্ত্রিক রীতি নীতি চর্চার ইতিহাসে এটি নতুন মাইলফলক যুক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র নিয়েই তারা হতাশ। রাষ্ট্রপতি নিয়ে তাদের আশা প্রকাশ করার কোনো কারণ তো আমরা দেখি না, যেখানে রাষ্ট্র নিয়েই তারা (বিএনপি) হতাশ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো রাষ্ট্র নিয়ে হতাশ, তা না হলে কি তিনি বলতে পারেন, পাকিস্তানই ভালো ছিল! পাকিস্তান ভালো ছিল- এ কথার মধ্যদিয়ে প্রকাশ পায়, তিনি রাষ্ট্র নিয়ে হতাশ। সুতরাং রাষ্ট্রপতি নিয়ে তার আশা প্রকাশ করার কোনো কারণ নেই। যারা রাষ্ট্র নিয়ে হতাশ তারা রাষ্ট্রপতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করবেন, এটাই স্বাভাবিক।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি একজন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান মানুষ। সংকটে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে এবং অভিভাবক হিসেবে তিনি অতীতের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে সুচতুরভাবে, সুচিন্তিতভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। আমি দৃঢ়ভাবে তা বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, ইয়াজ-উদ্দিন আবার কেউ কেউ বলেন ইয়েস উদ্দিন সাহেব, বিএনপি যখন তাকে রাষ্ট্রপতি বানায় তখন তাকে কয়জন চিনত। আব্দুর রহমান বিশ্বাস তিনি ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন, তাকে কয়জন চিনত। বরিশাল থেকে নিয়ে এসে প্রথমে স্পিকার পরে রাষ্ট্রপতি বানানো হয়েছিল। এ ছাড়া জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতা দখল করে তখন জিয়াকে কতজন চিনত। তারা রাষ্ট্র নিয়ে হতাশ তো, তাই রাষ্ট্রপতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করাটা খুব স্বাভাবিক।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেনোসাইডের সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএজিএস যে ঘোষণাটি দিয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে গণহত্যা হয়, সেটির স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে। আমাদের দেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ মানুষ শহীদ হন। রুয়ান্ডাসহ পৃথিবীর যেসব স্থানের হত্যাকাণ্ড জেনোসাইড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, সেখানে এতো মানুষের মৃত্যু হয়নি। কিন্তু সেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। আমি মনে করি, আমাদের সরকার এ নিয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে এই ঘোষণা অত্যন্ত সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ