ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ঘাটাইলে আ.লীগের রাজনীতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৩
উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ঘাটাইলে আ.লীগের রাজনীতি

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে।

তবে ঘটনাগুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘিরে হলেও এর নেপথ্যে মূলদল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুইপক্ষ জড়িত রয়েছে বলে ঘাটাইলের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ পেয়েছে বলেও আলোচিত হচ্ছে সর্বমহলে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে রানার অনুসারী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হায়দার তালুকদার এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী মো. জুনায়েদ আহত হন। দা দিয়ে কোপানো হয় জুনায়েদকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জুনায়েদকে উদ্ধার করে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।  

এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল শহিদুল ইসলাম লেবুর অনুসারী ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন জুনায়েদের ভাই জাহিদুল ইসলাম। মামলা দায়েরের পর আবু সাঈদ এলাকা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবু সাঈদ ওরফে রুবেল। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ৪ মে এলাকায় ফেরেন তিনি। পরদিন ৫ মে সকালে তার ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত আবু সাঈদ ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি)। তিনি ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওরফে লেবুর অনুসারী। আবু সাঈদের ওপর হামলার জন্য শহিদুল ইসলাম টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ওরফে রানার অনুসারীদের দায়ী করেছেন।

আবু সাঈদের স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে ঘাটাইল জিবিজি কলেজ গেট এলাকায় যান আবু সাঈদ। সে সময় দেশীয় অস্ত্রধারী একদল যুবক তার ওপর হামলা করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সাঈদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, টাঙ্গাইলসহ সারা দেশের মানুষ জানে আমানুর রহমান খান রানা একজন সন্ত্রাসী। তারা কখনো রাজনীতি করেনি। তারা সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করেছে। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আমানুর রহমান খান রানা। তাই তাদের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ বা ভালো পরিবেশ পাওয়ার কোনো আশা ঘাটাইলবাসী করতে পারে না। রুবেলের ওপর হামলার পরিকল্পনা তার বাসাতেই হয়েছে। তার নির্দেশেই এ হামলা। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দাবি জানাই। সুযোগ পেলে আমার ওপরও বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।

এ বিষয়ে আমানুর রহমান খান রানা গ্রুপের নেতা আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান তালুকদার মো. শাহজাহান বলেন, যে কোনো ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অনুসারীদের দায়ী করা হয়। এর মধ্য দিয়ে শহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চান। সাঈদের ওপর হামলার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, আবু সাঈদ ওরফে রুবেলের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। জেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।