ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, চাল, ডাল, আদা, রসুন, পেঁয়াজ সবকিছুর দাম বাড়িয়েছে সরকার। কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে পারে না তারা।
সোমবার (১২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশটি করা হয় রোডমার্চে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে।
মান্না বলেন, আমরা 'গণতন্ত্র মঞ্চ' গণতন্ত্রের জন্যই লড়াই করছি। সেই গণতন্ত্র গরিব মানুষের গণতন্ত্র হবে। যেই গণতন্ত্র গরিব মানুষের পেটে ভাত দেবে, তার অধিকার নিশ্চিত করবে, তার আইনি সম্মান দেবে, নাগরিক হিসেবে তার সম্মান রাখবে। এটার পক্ষেই আমরা ঢাকা থেকে দিনাজপুর রোডমার্চ করেছি। খেয়াল করে দেখেন প্রায় জায়গায় তারা বাধা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বলছি ভোট ভোটের মতো হতে হবে। এজন্য ক্ষমতায় যারা আছে তাদের ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এত যদি উন্নয়ন তাহলে নিরপেক্ষ সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সমস্যা কী? ওরা এখন সংবিধান কোনো কিছুই মানে না। হাইকোর্ট খাল, বিল, নদ-নদী পরিষ্কার করতে বলে এটা মানে না, কোর্ট জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে সেটা মানে না। কেমন তারা? বিরোধীদলকে দমন করতে, জনগণের অধিকার হরণ করতে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে যে কাজ করতে হয়, সেগুলোই তারা করছে।
মান্না বলেন, আমাদের কথা তোমাদের যেতে হবে। পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হলে পরে নির্বাচন করবে, সেই নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ শাসন করবে। এ লড়াইয়ের কথা আমরা ঘোষণা করছি। একইসঙ্গে আমরা বলছি, কেবলমাত্র এ রকম নয়, যে একটা দল বদলে আরেকটা দল ক্ষমতায় গেল। আমরা এর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভাগ্যটাও বদলাতে চাই। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বদলাতে চাই। গণতন্ত্রের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, মানুষ হিসেবে তার মূল্য প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মারধর করে, ১৪৪ ধারা জারি করে কিংবা সভার ওপরে সভা ডেকে এটা বন্ধ করতে পারবেন না।
জামায়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন নতুন খেলা বের করে কোনো লাভ নেই। হঠাৎ করে সরকারের বোধদয় হলো ওদের (জামায়াত) গণতান্ত্রিকভাবে রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত করে সভা করবার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এটা তিনদিন পর বোঝেননি, তিন মাস পর বোঝেননি, তিন বছর পর বোঝেননি। এখন ষড়যন্ত্র করতে তাদের সভা করবার অনুমতি দেয়। তাও আবার কী সরকারি দলের সভা বাতিল করে ওই জায়গায় জামায়াত ইসলামীকে সভা করবার অনুমতি দেওয়া হলো। তারপর মন্ত্রীরা বলতে শুরু করল বিএনপি উসকানি দিচ্ছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। এ ষড়যন্ত্র তারাই করছে। তারা একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে, তার দায় এদের ওপর চাপাবে, বিরোধীদলের ওপর চাপাবে। নির্বাচনটা পেছাবে অথবা গিলে খাবে। সেই ষড়যন্ত্রে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, টাঙ্গাইলে আমাদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। আর বগুড়ায় আমাদের সঙ্গে যে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে শাসকগোষ্ঠী আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই।
এ সময় পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১৯ জুন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সামনে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত তা বিস্তৃত করব। ঈদের পর আমরা আরও কঠোর আন্দোলন করব, রোডমার্চ করব। আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করব।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
ইএসএস/আরবি