বরিশাল: আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। একইসঙ্গে তিনি রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বর্জনের জন্য কেন্দ্রের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল বরিশাল নগরের অক্সফোর্ড মিশন রোডে নিজ বাসভবন সংলগ্ন নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ আহ্বান করেন তাপস।
নগরবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের আশা আকাঙ্ক্ষার মর্যাদা ও আপনাদের ভোটাধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি। আপনারা আমাকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন এবং দিয়েছিলেনও। কিন্তু এই আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন তাদের কথা রাখেনি। মেরুদণ্ডহীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছিলেন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনসহ সরকার ও সরকারের সকল সংস্থাগুলো আপনাদের সাথে ডিজিটাল প্রতারণা করেছে। ভোটের ফলাফল আগেই নির্ধারণ করে রেখেছিল। সরকারের সকল সংস্থাগুলো ইভিএম’র সর্বোচ্চ নগ্ন ব্যবহার করে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিয়েছে।
তাপস বলেন, আমি সব সময় তাদের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলেছি। বিধায় আমাকে ফলাফলে চতুর্থস্থানে রাখা হয়েছে। মেয়র পদে বরিশাল সিটি নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে প্রভাবিত করে ফলাফল তাদের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো জঘন্য ভোটের দৃশ্য আপনারা দেখেছেন। নগরজুড়ে বহিরাগতদের ব্যাপকভাবে দেখা গিয়েছে এ নির্বাচনে।
আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র আমাকে টার্গেট করে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে। ভোটের কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিচরণ আমরা দেখেছি। তাদের সন্ত্রাসীদের কারণে ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশসহ অন্যরা ছিল অসহায়। মোবাইলটিমসহ অন্যরা যখন কেন্দ্রে আসে তখন তারা (আওয়ামী লীগার) পালিয়ে যায়। আমার এজেন্টদের অনেক কেন্দ্রে বসতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচন আচরণবিধি সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করেছে আওয়ামী লীগ।
আমার প্রশ্ন জাতীয় পার্টির ত্রিশটি ওয়ার্ডে ত্রিশটি কমিটি ছিল। কমিটিগুলো ১৫১-২৫২ সদস্য বিশিষ্ট। এছাড়া ওয়ার্ডগুলোয় যুব সংহতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের আমাদের সদস্যরা ছিল। এ ভোটগুলো গেলো কোথায়? বরিশাল সিটি নির্বাচনের ফলাফল আমি প্রত্যাখ্যান করছি। সাথে সাথে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বর্জনের জন্য কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির কাছে আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
তাপস আরও বলেন, একটি মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের সিইসি আমাদের কথা দিয়েছিলেন, একটি সুষ্ঠু-অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবেন। আমি তার কর্মদক্ষতা আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি তার ভাষা জ্ঞানও আছে কিনা তা নিয়েও আমার সন্দেহ হয়। তা না হলে একজন প্রার্থী জঘন্য হামলার শিকার হওয়ার পরেও উনি বললেন, ‘তিনি ইন্তেকাল করেছেন কিনা?’ এভাবে দায়িত্বহীন ভাষা প্রয়োগ জনগণকে হতাশ করে। তার কথায় প্রতীয়মান হয় একজন প্রার্থী ইন্তেকাল করলে ব্যাপারটি আমলে নিতেন। নির্বাচনের দিন একজন সম্মানিত মেয়র প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করীমের ওপর নগ্ন হামলার আমি তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও প্রার্থীর ওপর যে হামলা হয়েছে তার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাপসের প্রধান এজেন্ট ও জাপা নেতা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুলসহ অনেকেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
এমএস/এমজে