খুলনা: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নিয়ে আম-ছালা দুটোই হারালেন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতারা। দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সব কুল হারিয়ে আজ হতাশায় ভুগছেন বিএনপির ৯ নেতাকর্মী।
এরা হলেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে তোতন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের টানা তিনবারের কাউন্সিলর আশফাকুর রহমান কাকন, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুব কায়সার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মুহা. আমান উল্লাহ, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর বিএনপির সাবেক সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, দৌলতপুর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুশফিকুস সালেহীন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কাজী ফজলুল কবির ওরফে টিটো, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন ও খুলনা মহানগর তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর।
সোমবার (১২ জুন) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন ছাড়া সবাই পরাজিত হওয়ায় অনেকেই বলছেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে আম-ছালা দুটোই হারালেন বহিষ্কৃত বিএনপির এসব নেতারা।
জানা যায়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় প্রথমে বিএনপির এসব নেতাকে শোকজ করা হয়। পরে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় দলটি।
গত ৩ জুন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়।
ওই চিঠির শেষাংশে বলা হয়- গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে আপনাদের নাম বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে।
দলের এমন কঠোরতা উপেক্ষা করেও বিএনপির এসব নেতারা আশায় ছিলেন কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। কিন্তু তাদের সে আশায় গুড়ে বালি পড়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেসিসির ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন দুই আওয়ামী লীগ নেতা। তারা হলেন- ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এস এম খুরশিদ আহম্মেদ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেড এ মাহমুদ ডন।
বাকি ২৯টির মধ্যে ২৮টিতে আওয়ামী লীগ এবং শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতের এক নেতা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
২০১৮ সালের কেসিসি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ১৩ জন, বিএনপির ৯ জন ও অন্যান্য প্রার্থী ৯ জন বিজয়ী হন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিলেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় বিএনপি থেকে। বিষয়টি তদারকিতে গোপন মনিটরিং সেলও গঠন করা হয়। এ কারণে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে খুব একটা যাননি।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ঘরানার কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনার দলীয় সিদ্ধান্ত পালনে মরিয়া ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
এমআরএম/এনএস