ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো দেশ বা সংস্থার হস্তক্ষেপ যুক্তিযুক্ত নয়।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে বিএনপির যতটা উদ্বেগ, তার চেয়ে তাকে নিয়ে রাজনীতির চর্চাই বেশি করেছে। যখন তার বিরুদ্ধে আদালতে বিচার চলছে, তখন অযথা অনুপস্থিত রাখার মধ্য দিয়ে তারা বিচারকাজকে বিলম্বিত করতে চায়। তারা ভেতরে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কিছু করতে পারেনি, বাইরেও বড় কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি, যা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সড়কে নিরাপত্তা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়টি আইনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি ডিল করছেন, তার ব্যাপারে অন্য কী করা প্রয়োজন, তা উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। যে পর্যায়ে তার পরিবার থেকে আবেদন দেওয়া হচ্ছে, সে পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বিষয়টি বলতে পারেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলকে চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, কোনো ইউনিয়ন চাইলে এটা হবে না। আমরা কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬ জানুয়ারি গণতন্ত্রের নামে যা করলো, আমরা তো সেটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করিনি। ৬টি প্রাণ ঝরে গেল। যিনি হেরে গিয়ে আজ পর্যন্ত সেটা মেনে নেননি। হেরে গেছেন, এটা আজ পর্যন্ত তিনি তা স্বীকার করেননি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য এবারই প্রথম নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এটা আগের চেয়ে আরও গণতান্ত্রিক করেছি। এটা তো উন্নতি হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে। কক্সবাজারের মতো জায়াগায় নিরপেক্ষ নির্বাচন হচ্ছে। অন্যান্য জায়গাতেও দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন হচ্ছে। আপনি কতটা জনপ্রিয়, তা প্রমাণ করতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। আমরা তো ২০০১ ও ২০০৬-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম দুটি বিষয় জোর দিয়ে বলেন, খালেদা জিয়াকে আমরা জোর করে জেলে রেখেছি। দ্বিতীয় হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ সরকার বাদ দিয়েছে। দুই অভিযোগই মিথ্যা। তারা তো তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে কিছু করতে পারেনি। তারা তো একটি ভালো আন্দোলন করতে পারেনি। রাজপথে এক হাজার লোকের একটি মিছিল করতে পারেনি। বিএনপি সাধারণ সম্পাদক নিজে ব্যর্থ। তিনি সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন, সবার আগে বিএনপির ওপর থেকে নিচে সবার পদত্যাগ করার উচিত। তাদের নেত্রী জেলে তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে একটি দৃশ্যমান আন্দোলন করতে পারেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিষয়টি উচ্চ আদালতে আটকে আছে; কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকার সেখানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। জামায়াত নিবন্ধিত দল না হওয়ার কারণে দল হিসেবে নির্বাচনে আসার কোনো সুযোগ নেই।
জামায়াতকে সরকার মাঠে নামিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিই জামায়াতকে নামিয়েছে। তারা নির্বাচনে যাবে না, এ অবস্থায় তো সন্ত্রাস করতে হবে। সন্ত্রাসে তাদের সহযোগী জামায়াত। সে জন্যই তারা নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতকে নামিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
জেডেএ/এমজেএফ