ঢাকা: বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো সুখবর নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব নেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।
রোববার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জিএম কাদের বলেন, বর্তমান সময়ে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা। প্রস্তাবিত বাজেটে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কোনো সুখবর নেই। এ প্রেক্ষিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত বলে মনে করি। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় বর্তমানে আমরা সবচেয়ে রক্ষণশীল বিনিয়োগের সময় পার করছি। অর্থমন্ত্রী তার ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ জিডিপির ২৭.৪ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলেছেন। যেখানে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে জিডিপির অনুপাতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের লক্ষমাত্রা ছিল ২১.৮ শতাংশ। যা ২০২১-২২এর লক্ষ্য মাত্রা (২৪.৫ শতাংশ) তার থেকে ২.৭ শতাংশ কম। এমন প্রেক্ষাপটে কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ার আশা করেন বিষয়টি ষ্পষ্ট নয়।
তিনি বলেন, সরকারের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের আর্থিক রূপ হলো বাজেট। এবারের বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রার তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পালনের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ডলার সংকট কাটাতে বাংলাদেশকে মোট ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ। এরই মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা ছাড় হয়েছে। ঋণের বাকি অর্থ পাওয়ার বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। এরমধ্যে রয়েছে গুণগতমান উন্নয়ন সংক্রান্ত শর্ত, অবকাঠামোগত মান উন্নয়ন এবং সাধারণ শর্ত। তিনখাতে ছোট বড় সবমিলিয়ে শর্তের সংখ্যা ৩০টি। মোটা দাগে ভর্তুকি কৃষি ও জ্বালানিসহ বিভিন্নখাতে ভর্তুকি কমাতে বলেছে। এর বেশিরভাগ সাধারণ মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী।
জিএম কাদের আরও বলেন, একটি নির্বাচনী বছরে রাজনৈতিক সরকারের বাজেটে যে ধরনের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি থাকার কথা, বাজেটে তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আইএমএফের শর্ত অনুসারে চলতি জুন মাস শেষে বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ থাকতে হবে ২৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ২৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এটি অত্যন্ত কঠিন। কারণ বর্তমানে নিট রিজার্ভ আছে ২০ বিলিয়ন ডলার। এরপর বিভিন্ন ব্যয় রয়েছে। অর্থাৎ একমাসেই আরও সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বাড়াতে হবে। আর শর্ত বাস্তবায়নে আমদানি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বাজেটের লক্ষ্যগুলো বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। সরকারের ভুল পদক্ষেপে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ক্রমান্বয়ে ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে আমরা কঠিন সময় পার করছি। এ কঠিন সময়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাজেটে সে রকম কোনো উদ্যোগ আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
এসকে/জেএইচ